স্বাস্থ্য বিজ্ঞান

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে খাদ্যের আঁশ

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ

বর্তমানে সারা বিশ্বে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ড্ডন্ন্দ্বব্ধ্ত্রব্জম্ভ ন্দ্রন্ত্ব্ব্জন্দ্ব বা খাদ্যের আঁশের ওপর বেশ জোর দেওয়া হচ্ছে৷ কারণ বহু সমীৰার পর দেখা গেছে, খাদ্যের আঁশ দেহে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়িয়ে দেয়, পাকস্থলীতে বেশীক্ষণ থাকে, কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লাইসেরাইডের মাত্রা কমায়, ওজন ও রক্তচাপের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখে৷ এই কারণে প্রাচীন সমাজে ডায়াবেটিস রোগীদের অধিক পরিমাণে আঁশ ও স্বল্প পরিমাণে সহজ শর্করা দিয়ে চিকিৎসা করা হতো৷

বহুমূত্র (ডায়াবেটিস) রোগের নিরাময়

লক্ষণ ও কারণ ঃ প্রাচীনকা ডায়াক্ষেটিস বা মধুমেহ রোগটিকে সংসৃক্তে মধুমেহ বলা হত৷ বহুমূত্র–ও বলা হত৷ তবে দু’টো এক নয়৷ বহুমূত্র মানে যে রোগে বারবার মূত্রত্যাগ করা হয়৷ মধুমেহ মানে মূত্রে শর্করার ভাগ বেড়ে যাওয়া৷ আসলে শর্করাযুক্ত বহুমূত্র রোগকে মধুমেহ বলা হয়৷ প্রাচীন বৈদ্যকশাস্ত্রে কোন পাত্রে মূত্র রেখে ওপরের অংশকে পৃথক করে, পৃথক ভাবে ওপরের অংশ ও নীচের অংশকে পরীৰা করা হত৷ তবেই সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যেত রোগীর মধুমেহ বা ডায়াবেটিস আছে কিনা৷ তারপর নিশ্চিত ভাবে রোগ ধরা পড়ত যখন কোন প্রকাশ্য স্থানে মূত্র (গুহ্যনিষ্যন্দ) ঢেলে দেওয়া হত৷ যদি দেখা যেত যে কিছু সময়ের মধ্যে তাতে পিঁপড়ে এসে বসেছে,

আদা

পরিচয় ও প্রজাতি ঃ সংস্কৃত ‘আর্দ্রক’ থেকে ৰাংলা ‘আদা’ শব্দটি এসেছে৷ আদা শরীরকে ভিজিয়ে দেয়, স্নিগ্ধ রাখে, নিজেও ভিজে ভিজে–স্যাঁৎসেতে৷ তাই সংস্কৃতে নাম আর্দ্রক৷ (আর্দ্রক>আদ্দঅ>আদ্দা>আদা)৷ বিহারে ও উত্তরপ্রদেশের পূর্বাংশে বলা হয় ‘আদী’৷ আদাকে উর্দূ–হিন্দী–হিন্দোস্তান্ ‘আদরক’ বলা হয় যা সংস্কৃত আর্দ্রক শব্দ থেকে এসেছে৷

বাসক ও রাম বাসক

বাসক ও রাম বাসক গাছ পূর্ব ভারতে ভালই জন্মায়৷ রাম বাসক উচ্চতায় তেমন ক্ষড় হয় না৷ অনেক সময় গাছ একটু ক্ষড় হলে শুয়ে পড়ে৷ রাম বাসকের সঙ্গে শেয়ালের ন্যাজের কেমন যেন একটা সুদূর সম্পর্ক রয়ে গেছে৷ তাই রাম বাসককে ক্ষলা হয় ক্রোষ্টুপুচ্ছী, ক্রোষ্টুপুচ্ছিকা, ক্রোষ্টুকপুচ্ছী, ক্রোষ্টুকপুচ্ছিকা৷

বাসক গাছও উচ্চতায় তেমন ক্ষড় হয় না, কিন্তু ডালপালা শক্ত থাকে৷ এর পাতা ঘন সবুজ ও লম্বা৷ এর সবচেয়ে বেশী গুণ পাতায়৷

বাসক পাতার বা বাসক রসের গুণ কফ মুক্তিতে ও জ্বর প্রতিরোধে৷ সর্দির ৰাড়াৰাড়িতে ও পালাজ্বরের আক্রমণে বাসকের জুড়ি মেলা ভার৷

            ‘‘বাসি মুখে বাসকের রস খেও মধু সাথে

অশ্বগন্ধা

অশ্বগন্ধা একটি ঔষধীয় গাছ৷

অন্যান্য ভেষজ গাছের সঙ্গে মিলিয়ে এর থেকে যক্ষ্মা রোগের উত্তম ভেষজ ঔষধ তৈরী হয়৷

ব্যবহার বিধি ঃ ৰেড়েলা, গাম্ভোরী, শতমূলী, অশ্বগন্ধা ও পুনর্নবা সমপরিমাণ একত্রে (শেকড়) শুষ্ক্ ও চূর্ণ করে দু’বেলা মধুসহ সেব্য৷ সেবনান্তে কিছুটা পরে এক ক্ষলকের মত ছাগদুগ্ধ পান করলে এই রোগে দ্রুত ফল পাওয়া যায়৷

অর্জুন ছালের সঙ্গে অশ্বগন্ধার শেকড় মিলিয়ে আয়ুর্বেদে হূদ্রোগের ঔষধ প্রস্তুত হয়৷ খোসাসহ মুগ ডাল আগের দিন রাতে জলে ভিজিয়ে রেখে, পরের দিন সকালে শিলে ৰেটে, দই–এর সরের সঙ্গে শরৰেৎ বানিয়ে খালি পেটে খেলে যক্ষ্মা রোগে অতি উত্তম ফল পাওয়া যায়৷

মউমাছি ও মধু

ভারতে সাধারণতঃ তিন ধরনের মউমাছি দেখা যায়– রক্–ৰী, ৰুশ–ৰী ও এপিস ইণ্ডিকা৷ রক–ৰী ৰড় জাতের মউমাছি, মধু প্রস্তুত করে প্রচুর পরিমাণে৷ চাক ৰড় ৰড়, সাধারণতঃ বটগাছে বা ৰড় ৰড় গাছের ডালে চাক ৰাধে৷ অনেক সময় চাক এত ৰড় হয় যে চাক ফেটে টস্ টস্ করে মধু মাটির ওপরে পড়তে থাকে৷ রক–ৰীর দ্বারা তৈরী মধু একটু ঝাঁঝাল হয়৷ এই মধু উগ্রবীর্য নামে খ্যাত৷ মানুষের প্রাণশক্তি যেখানে কমে এসেছে –মৃত্যুর হিমশীতলতা যেখানে তার অবসন্ন দেহে নেবে এসেছে, অনেক সময় সেই অবস্থায় এই উগ্রবীর্য মধু নোতুন করে প্রাণসঞ্চার করে দেয়৷ প্রাণশক্তি কমে যাওয়া মানুষের শরীরের অভ্যন্তরে যদি কোন রক্তক্ষয়ী রোগ না থাকে, তবে তিনটে কৃষ্ণতুলসীর পাতার সঙ্গে দ

হৃদরোগ (Heart disease))

লক্ষণ ঃ বুকের মধ্যে জোর শব্দ হওয়া, বুকে ব্যথা, নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট বোধ হওয়া, হাত পা থর থর করে কাঁপা প্রভৃতি৷

কারণ ঃ হূদরোগের পেছনে অজস্র কারণ থাকতে পারে৷

১) পাকস্থলীকে যাঁরা সব সময় খুব বেশী ভারাক্রান্ত করে রাখেন, তাঁদের পাকস্থলীতে অধিক পরিমাণে রক্ত সঞ্চালনের আবশ্যকতা দেখা দেয় ও ওই রক্ত যুগিয়ে চলবার জন্যে হূদ্যন্ত্রকে অত্যধিক পরিশ্রম করতে হয়, যার ফলে তা’ দুর্বল হয়ে’ পড়ে৷

পাতিনেৰু  ও তার উপকারিতা

 আমরা যাকে ‘পাতিনেৰু’ [Citrus medica]  বলি সেটি ক্ষাংলার সাবেকী নেক্ষু৷ কিন্তু ‘পাতিনেৰু’ শব্দটি পাতে খাবার নেক্ষু এই অর্থে আসেনি৷ ‘পাতি’ মানে দেশী অর্থাৎ যা বিদেশ থেকে আসেনি৷ পাতিনেৰু, পাতিহাঁস সাবেকী ৰাংলার জিনিস৷ পাতিনেৰু গোল আকারের নেৰু..... রসে টইটম্বুর, গুণে জগৎজোড়া নাম, হজমে সহায়ক৷ আর পাতিহাঁস রাঢ়–ৰাংলায় তো বটেই, গোটা ৰাংলাতেই একটি সুপরিচিত পাখী৷ রাঢ়ের প্রতিটি গৃহস্থ বাড়ীতেই একটি করে ছোট রকমের হাঁসের ঘর থাকে৷ পাতিহাঁস একেবারেই পাতি অর্থাৎ দেশী৷

অম্ল রোগ ও তার নিরাময়

চিকিৎসা ঃ (আসন ও মুদ্রা)

প্রাতে ঃ উৎক্ষেপ মুদ্রা, ময়ূরাসন, পদহস্তাসন, উড্ডয়ন, অগ্ণিসার, আগ্ণেয়ী মুদ্রা বা আগ্ণেয়ী প্রাণায়াম৷

সন্ধ্যায় ঃ অগ্ণিসার, পশ্চিমোত্তানাসন, সর্বাঙ্গাসন, আগ্ণেয়ী মুদ্রা বা আগ্ণেয়ী প্রাণায়াম৷

পথ্য ঃ অম্লরোগে পুরাতন চালের ভাত, শাক–সব্জীর ঝোল (ভাজা, পোড়া বা অধিক পরিমাণ শাক–সব্জী নয়), রসাল টক বা মিষ্টি ফল বা ঘোল বিশেষ উপকারী৷ অম্লরোগীর পক্ষে দধি বিশেষ হিতকারী নয়৷

স্নায়ুরোগ–মস্তিষ্ক্ বিকৃতি–স্মরণ

ব্রাহ্মী– Bacopa monierri; Centella asiatica ঃ

ব্রাহ্মী ও তারই প্রজাতিবিশেষ থানকুনি ও থুন্কুড়ি (ভোজপুরীতে পাতাল নিম) প্রভৃতি শাকেরা স্নায়ুরোগের পুষ্টি বিধায়ক, স্মরণশক্তি ক্ষর্দ্ধক ও শুক্ররোগের ঔষধ৷ ব্রাহ্মী ও থানকুনি উভয়েরই পাতা ঔষধ হিসেবে ব্যবহূত হয়৷ স্নায়ুদৌর্বল্য রোগেও এটা উত্তম ঔষধ৷ সকল প্রকারের স্নায়বিক রোগ ও মানসিক ভারসাম্যহীনতা রোগে এর ব্যবহার আছে৷ ব্রাহ্মীঘৃত (অথবা ব্রাহ্মী সিরাপ) পরীক্ষার্থীদের বিশেষ সহায়ক৷ ব্রাহ্মী ও থানকুনি উভয়েই লতানে উদ্ভিদ৷

পেটের অসুখে থানকুনি ঃ থানকুনি পাতার রস চীনী সহ খেলে পেটের অসুখে ভাল ফল দেয়৷