পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ইণ্টার সার্ভিস ইণ্টেলিজেণ্স-এর (আই এস আই) কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার আসফাকের সাঙ্গপাঙ্গরা পাকিস্তানের (টেররিস্থান)-এর মাটিতে আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি (আরশা) গঠন করেন৷ এদের উদ্দেশ্য হ’ল বর্তমান বাঙলাদেশের মাটিতে রোহিঙ্গাদের তাড়িয়ে এনে বাঙলাদেশের মধ্যে অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করে তোলা৷ তাছাড়া এই রোহিঙ্গাদের মধ্যে দিয়ে উগ্রপন্থী, জঙ্গী রোহিঙ্গারা ঢুকে পড়বে বাঙলাদেশ ও প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতে৷ এরা অস্থিরতা সৃষ্টি করবে এই সমস্ত দেশে পাকিস্তানী জঙ্গী যারা আছে তাদের মদতে৷
আরশার সামরিক প্রধান হাফিজ তোহার সঙ্গে যে সব কথোপকথন হয় তার ভয়েস রেকর্ড সংগ্রহ করে বাঙলাদেশের গোয়েন্দা বিভাগ৷ সেই সংবাদ ভারতীয় গোয়েন্দাদের জানিয়ে সজাগ করে বাঙলাদেশের গোয়েন্দা বিভাগ৷
আরশাকে নির্দেশ দেওয়া হয় মায়ানমার পুলিশ ও সেনা ক্যাম্পে হামলা করে তাদের উসকে দিতে৷ তখন তারা রোহিঙ্গাদের ওপর হামলা করে তাদের তাড়িয়ে দেশছাড়া করবে৷ তারা উদ্বাস্তু হয়ে এসে বাঙলাদেশ, প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতে আই এস আই-এর নির্দেশমত অস্থিরতা সৃষ্টি করে পাকিস্তানের উদ্দেশ্য সিদ্ধ করবে---যাতে পাকিস্তানী প্রভাব প্রতিবেশী রাষ্ট্রে পড়ে ও পাকিস্তানীরা সেই দেশ কব্জা করতে পারে৷
মায়ানমারে সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর যে পাশবিক অত্যাচার চালায় তার সংবাদ দেশ বিদেশে ছড়িয়ে পড়ে৷ ইউ এন ও এই রোহিঙ্গাদের ওপর অত্যাচারের তীব্র প্রতিবাদ করেন৷ কোফি আন্নান-এর রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পরই রাখাইন প্রদেশে আরশা হামলা করে মায়ানমার সেনাবাহিনী ওপর৷ তারই প্রতিক্রিয়া পড়ে মায়ানমারের সেনাবাহিনীর রোহিঙ্গাদের ওপর অত্যাচার ও নির্যাতনের৷ আই এস আই ও আরশার তিনটি দীর্ঘক্ষণ রেকর্ড কল ধরা পড়ে বাঙলাদেশের গোয়েন্দাদের হাতে৷ এই কল হয় আসফাক ও তোহার মধ্যে৷ গত ২৩শে ও ২৪শে আগষ্ট এই কল হয়৷ তাদের কথোপথন হয় দীর্ঘ ৩৪ মিনিট ধরে৷ এই সব সংবাদ বাঙলাদেশ ভারতকে সরবরাহ করে৷ সেই কারণে ভারত সচেতন হয় রোহিঙ্গাদের ও উদ্বাস্তুদের ব্যাপারে৷ আরশার সদস্যগণ অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছে উদ্বাস্তুদের মাধ্যমে বাঙলাদেশ ও ভারতে৷
আরশার হাফিজ তোহা প্রশিক্ষণ নেয় লস্কর-ই-তৈবা ও হিজবুল মুজাহিদিনের কাছে৷ জানা যায়, আরশার শীর্ষ নেতা আতাউল্লাহর নেতৃত্বে মায়ানমারে হামলা চলে৷ এই উল্লাহর বেড়ে ওঠা পাকিস্তানের করাচিতে৷ এই ব্যষ্টি মসজিদে কোরাণ পড়াতেন৷ করাচিতে একটি মাদ্রাসায় পড়াশুনো করতেন৷ তিনি সপরিবারে সৌদী আরবের রিয়াধে যান৷ সেখান থেকে কয়েক কোটি টাকা নিয়ে পাকিস্তানে ফিরে আসেন৷ তারপর আতাউল্লাহকে আই এস আই পাঠায় মায়ানমারে৷ রোহিঙ্গাদের ঠেলে দিয়ে বাঙলাদেশকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র বানাবার ছক কষে৷ আরশা সংঘটনের কথা জেনে শেখ হাসিনা ঘোষণা করেন যে, কোনো সন্ত্রাসী সংস্থাকে বাঙলাদেশী ভূখণ্ড ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না৷ ষড়যন্ত্রকারী আই এস আইয়ের দুরভিসন্ধি থেকে জানা যায় যে ১৯৭১ সালে বাঙলাদেশ স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বাঙলাদেশ ও ভারত যৌথ কমাণ্ডের কাছে পাকিস্তানী বাহিনীর আত্মসমর্পণের জন্যে মায়ানমারকে ব্যবহার করা হয়৷
এই জঘন্য আই এস আইয়ের কাজ দীর্ঘ ৭০ বছর ধরে চলে আসছে বিশেষ করে ভারতের ওপর পাকিস্তানী হামলা হিসেবে৷ মনে পড়ে, ইয়ূরোপীয় কায়দায় মানুষ জিন্নাহ ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা ভারতবর্ষকে সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারায় ইংরেজের কুটচালে পড়ে ভাগ করেন৷ জিন্নাহর ইচ্ছা ছিল ভারতবর্ষকে সরাসরি দু’ভাগে ভাগ করা ৷ দিল্লীর পশ্চিমে ভারতবর্ষের সবটাই পাকিস্তান করার তার ইচ্ছা ছিল৷ কিন্তু সেটা হয়নি৷ অখণ্ড বাঙলার সম্পদকে উপনিবেশ হিসেবে ভোগ করা ও ভারতবর্ষের ওপর চিরকাল দাদাগিরি করার মানসিকতাটা ছিল সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ইংরেজের৷ তাই এইভাবে তিন খণ্ড করে ভাগ করা হয় ভারতবর্ষকে৷ ভারত রইল মাঝে ডানা কাটা পাখীর মত আর পূর্বে পূর্ব-পাকিস্তান ও পশ্চিমে পশ্চিম-পাকিস্তান৷ শেষে পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালী মুসলমানরা বুঝলেন যে তারা সংখ্যায় বেশী হলেও ঢাকাকে পাকিস্তানের রাজধানী করা হয়নি৷ রাজধানী হল পশ্চিম পাকিস্তানে আর ঊর্দ্দু ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করা হ’ল৷ বাংলা ভাষাকে স্বীকার করা হ’ল না৷ তখন সেটা বুঝে পূর্ব বাঙলা আন্দোলন করেই নোতুন রাষ্ট্র বাঙলাদেশ গড়ে তুলল৷ পাকিস্তানের খাদ্য ও অর্থ সবই যোগান দিত বাঙলার বৃহত্তর অংশ পূর্ব পাকিস্তান৷ তাছাড়া দাদাগিরিটাও করত পশ্চিমী সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রদ্বয় ইংল্যাণ্ড ও আমেরিকা৷ এরাই যে সর্বনাশের মূল সেটা ঐতিহাসিকরা জানেন৷
এমন ভাগ হ’ল যার ক্ষত দেশ ভাগের পর সারা ভারতবর্ষের জনগণ আজও হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন৷ আর পশ্চিম পাকিস্তান রাষ্ট্রটি একটি মারাত্মক দুষ্ট গ্রহ বিশেষ ও সেই রাষ্ট্র আজ সন্ত্রাসবাদীদের আঁতুরঘর৷ এই পাকিস্তান সারা পৃথিবীর ঐক্য সংহতি ধবংস করছে ৷ বিশেষ করে ভারতের চরম ক্ষতি করেই চলেছে পাকিস্তান৷ আজ যারা দেশ ভাগ করে শাসন ক্ষমতায় এসেছিলেন তারা নেই৷ বর্তমান জটিল পরিস্থিতিতে কেন্দ্রে শাসনে এসেছে বিজেপি৷ তাই কেন্দ্রকে অবশ্যই ভাবতে হবে ভারতের নিরাপত্তা ও পাকিস্তানী হামলা থেকে দেশকে রক্ষার দায়-দায়িত্বের কথা৷ সত্যই যারা নিরপরাধ তাদের রক্ষা করা ও তাদের দেশে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করাটা হ’ল মানবিকতার কাজ৷ ভারত ও বাঙলাদেশ যে কাজ করবে এটি সকলে আশা করে পূর্ব পাকিস্তান ও বাঙলাদেশ থেকে আসা উদ্বাস্তুরা ভারতবর্ষ ভাগের ফলে ছিন্নমূল হয়ে যেভাবে বাস করছে ভারতে, তাদের আজও কোনও সুরাহা হয়নি৷ পূর্ব পাকিস্তান যেটি আজ বাংলাদেশ, সে দেশ থেকে আসা হিন্দু ও অমুসলমানগণ ছন্নছাড়া জীবন যাপন ও ইহুদীদের মত দিনযাপনের গ্লানি বহন করে চলেছে৷
- Log in to post comments