পজেটিভ মাইক্রোবাইটামের ক্রিয়াগত অভিব্যক্তি

লেখক
সমরেন্দ্রনাথ  ভৌমিক

অতীতে পজেটিভ মাইক্রোবাইটামের ব্যাপক প্রয়োগ হয়নি৷ পৃথিবীতে এই প্রথম মানুষের জন্যে ব্যবহারিক জগতে বিভিন্ন কাজে ও আধ্যাত্মিক প্রগতির জন্যে পজেটিভ মাইক্রোবাইটা  (মাইক্রোবাইটাম একটি ল্যাটিন শব্দ, এর বহুবচনে হবে মাইক্রোবাইটা) প্রয়োগ করা হচ্ছে৷ বলা বাহুল্য এই পজেটিভ মাইক্রোবাইটার ব্যাপক প্রয়োগ ও ব্যবহার সম্পর্কে পৃথিবীর বুকে বিস্তারিতভাবে বলেছেন--- মাইক্রোবাইটাম আবিষ্কারক শ্রী প্রভাত রঞ্জন সরকার৷ শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকার বলেছেন--- মাইক্রোবাইটাম হ’ল সুস্থ সমাজ গড়ার চাবিকাঠি মাইক্রোবাইটামেই নিহিত রয়েছে৷

মাইক্রোবাইটাম তিন প্রকারের হয়৷ এরা হ’ল পজেটিভ, নেগেটিভ ও নিউট্রাল মাইক্রোবাইটাম৷  পজেটিভ মাইক্রোবাইটাম প্রকৃতির দ্বারা সৃষ্ট হয় না৷ পজেটিভ মাইক্রো বাইটামের উৎস হ’ল পরমপুরুষ (সদ্‌গুরু)৷ প্রতিসঞ্চর ধারায় সদ্‌গুরু নিজে অজস্র পজেটিভ মাইক্রোবাইটাম সৃষ্টি করে চলেছেন৷ মাইক্রোবাইটাম একটি অতি সূক্ষ্ম জীব৷ এদের মধ্যে যারা স্থূলতম তাদের দ্বারাই মহাকাশ cosmic space) থেকে জীব প্রাণ উৎসারিত হ’য়ে এসেছে ও এসেছে প্রাণের স্পন্দন৷ তারপর নানান ঘাত-প্রতিঘাতের clash and cohesion) ভিতর দিয়ে এসেছে বিভিন্ন পরিবর্তন, এসেছে ডাইনোসর, এসেছে ঐরাবৎ....এসেছে বুদ্ধিদীপ্ত মানুষ৷  তাহ’লে দেখা যাচ্ছে ---প্রাণীনতার আদিবিন্দু বা প্রাণের উৎস হ’ল এই পজেটিভ মাইক্রোবাইটা৷ এরা গ্রহে, উপগ্রহে, নক্ষত্রে প্রাণীনতার আদিবাহক৷ এই মাইক্রোবাইটামের গতিবিধি রহস্যময়৷ এদের এই  রহস্যময় গতিবিধির সাহায্য বিভিন্ন জ্যোতিষ্কে অজস্র দেহ-সংরচনা ও  মানস-সংরচনা হয়ে চলেছে৷

এখন, এই যে পজেটিভ মাইক্রোবাইসের এর মূল উৎস কোন মানুষ হ’তে পারে না৷ আর একে মহাকাশ  হ’তে  উৎসারিত  করা কোন মানুষের কর্ম  নয়৷ মানুষতো দূরের কথা সাধক তথা কোন অতিমানবের  পক্ষেও  এই পজেটিভ মাইক্রোবাইটাম  উৎসারিত করা সম্ভব নয় ৷ একমাত্র পরমপুরুষই (সদ্‌গুরুই) এই পজেটিভ মাইক্রোবাইটামদের মহাকাশ হ’তে উৎসারিত করতে পারেন৷

এই পজেটিভ মাইক্রোবাইটামরা শুধুমাত্র যে প্রাণশক্তির উৎস তা নয়৷ এদের ক্রিয়াগত অভিব্যক্তি অজস্র৷ পজেটিভ মাইক্রোবাইটামের বিশেষ বিশেষ কার্য্য হ’ল---

(১) যে সমস্ত মানুষ সৎসঙ্গের  সঙ্গে থাকেন অর্র্থৎ সৎ জীবন যাপন  করেন, মনের পবিত্রতা রাখেন,  যম-নিয়ম নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেন বা পালন  করার প্রয়াস  করেন, তাঁদের দেহ পজেটিভ মাইক্রোবাইটাম ধারণের  উপযোগী৷ দেহের মধ্যে  পজেটিভ মাইক্রোবাইটাম প্রবেশ করলে  অশুভ বৃত্তির প্রভাব কমিয়ে দেয়, অপর পক্ষে শুভ বৃত্তির প্রভাব বাড়িয়ে দেয়৷

(২) সদ্‌গুরুকে  সন্তুষ্ট করলে সদ্‌গুরু কৃপাপরবশ হ’য়ে পজেটিভ মাইক্রোবাইটার সাহায্যে সাধকের দেহস্থিত চক্রগুলিকে উজ্জীবিত করেন ও চক্রগুলির সহিত সংশ্লিষ্ট গ্রন্থিগুলি সক্রিয় হ’য়ে যথাযথ হরমোন নিঃসরণ ঘটিয়ে শুভবুদ্ধি ও শুভ চেতনাা জাগায়৷

(৩) পজেটিভ মাইক্রোবাইটাম অনাহত চক্রকে প্রভাবিত করার ফলে শুভাত্মক  মানস-ভৌতিক আকর্ষণ সৃষ্টি করে৷

(৪) অনাহত চক্রের উপর পজেটিভ মাইক্রোবাইটার  একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব হ’ল ‘‘চেষ্টাবৃত্তি’’, পজেটিভ মাইক্রোবাইটামের প্রভাবে অনাহত চক্রের চেষ্টাবৃত্তি বিশেষভাবে ক্রিয়াশীল হয় ও এর ফলে বাস্তবে কোন ভাল কাজ করার মানসিকতা জেগে ওঠে৷

(৫) অনাহতচক্রে পজেটিভ মাইক্রোবাইটা-এর প্রভাবে ‘‘অনুতাপ’’-এর মানসিকতা তৈরী হয়৷

(৬) নেগেটিভ মাইক্রোবাইটাম অনাহতচক্রে কর্মহীনতার  মানসিকতা তৈরী করলে পজেটিভ মাইক্রোবাইটাম এই কর্মহীনতাকে ধবংস ক’রে দিতে পারে৷ অবশ্য উপযুক্ত পরিমান পজেটিভ মাইক্রোবাইটাম সাত্ত্বিক বৃত্তি তৈরী করে অপর  পক্ষে নেগেটিভ মাইক্রোবাইটাম তামসিক বৃত্তির জাগরণ  ঘটায়৷

(৭) ‘‘ৰাৰা নাম কেবলম্‌ ’’ সংকীর্ত্তনের  ধবনিতে  পজেটিভ মাইক্রোবাইটামের উপস্থিতি  ঘটে৷ তাই ব্যাষ্টিগত  বা সমষ্টিগত ভাবে কীর্ত্তন  ক’রে পজেটিভ  মাইক্রোবাইটাম-এর উপস্থিতিকে বরন ক’রে নেওয়া একান্ত  প্রয়োজন৷

(৮) দৈহিকভাবে শুধু পবিত্র হ’লে হবে না, মানসিকভাবেও পবিত্র থাকতে হবে, কেন না হীন বা নিম্মচিন্তায় রত থাকলে  নেগেটিভ মাইক্রোবাইটাম দ্বারা অতি সহজে আক্রান্ত হ’য়ে পড়তে হবে৷ এইজন্যেই সৎসঙ্গ সৎগ্রন্থ পাঠ, ভাল  সঙ্গীত ও কীর্ত্তনের মাধ্যমে মনকে  উন্নত ও পবিত্র রাখা উচিত, যাতে করে পজেটিভ মাইক্রোবাইটাম মনে জমতে পারে৷

(৯) পজেটিভ মাইক্রোবাইটাম বিশেষভাবে সৃষ্ট তরঙ্গের মাধ্যমে কাজ করে৷ আর নেগেটিভ মাইক্রোবাইটাম  প্রকৃতির মাধ্যমে নিজে নিজে কাজ করে৷ কিন্তু পজেটিভ মাইক্রোবাইটাম প্রকৃতির দ্বারা বাহিত হয় না৷

(১০) পজেটিভ মাইক্রোবাইটাম শরীরে থাকলে মানুষ রোগ মুক্ত হয়৷ অর্র্থৎ এই পজেটিভ মাইক্রোবাইটামরা  ক্ষতিকারক নেগেটিভ মাইক্রোবাইটামদের গ্রাস করে নেয়৷ ফলে নেগেটিভ মাইক্রোবাইটাম ধবংস হ’তে থাকে৷ অবশেষে রোগী রোগ মুক্ত হয়৷

(১১) পজেটিভ মাইক্রোবাইটামের কাছ থেকে প্রেরণা পেয়ে মানুষ হ’য়ে ওঠে উদার ও বিশ্বৈকতাবাদী৷

(১২) প্রাউট প্রতিষ্ঠার জন্যে পজেটিভ মাইক্রোবাইটার  ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷

(১৩) পজেটিভ মাইক্রোবাইটা মানুষের শরীরে  সাত্বিক মনোবৃত্তি তৈরী করে৷

(১৪) পজেটিভ মাইক্রোবাইটা মানুষের শরীরে প্রবেশ করে ও আধ্যাত্মিক প্রগতিতে সাহায্য করে৷ শুধু মনুষ্যদেহই  যে পবিত্র হয় তা নয়, যে কোন জীবকে ও পবিত্র করে৷

(১৫) নব্যমানবতাবাদী মানুষ তৈরী ক’রতে পজেটিভ মাইক্রোবাইটাম অপরিহার্য্য৷

(১৬) সর্র্বোপরি পজেটিভ মাইক্রোবাইটা মানস-আধ্যাত্মিকস্তরে আধ্যাত্মিক বিকাশে অগ্রগতি আনে৷

(১৭) পজেটিভ মাইক্রোবাইটাম মানুষের দেহে বহুসংখ্যক  অর্র্থৎ অত্যধিক  প্রয়োগের  ফলে মৃত্যুও হতে পারে৷ (১৮) পজেটিভ বা নেগেটিভ মাইক্রোবাইটাম ১৬ বৎসরের ঊধর্ব না হলে অর্র্থৎ শরীর যথোপযুক্তভাবে বিকশিত না হ’লে  প্রয়োগ চলে না৷ ১৬ বৎসরের কম  বয়স হ’লে মাইক্রোবাইটাম ধারণের ক্ষমতা থাকে না৷ এক্ষেত্রে তার মৃত্যুও হতে পারে৷ (১৯) মানুষের  শরীরে পজেটিভ মাইক্রোবাইটাম প্রয়োগের জন্য এক অপরিহার্য শর্ত হ’ল ওই মানুষটিকে  নিরামিশী হ’তেই হবে৷ এ ব্যাপারে আমিষ আহার একেবারেই বর্জনীয়৷ কারণ আমিষ ভোজীর দেহ পজেটিভ মাইক্রোবাইটাম ধারণের পক্ষে সম্পূর্ণ অনুপযুক্ত৷  (২০) পজেটিভ মাইক্রোবাইটাম প্রত্যক্ষভাবে দেহের গ্রন্থি উপগ্রন্থিগুলোকে প্রভাবিত করে৷ এর ফলে মানুষের স্মৃতিশক্তি, শারীরিক শক্তির বৃদ্ধি ঘটে৷  এইভাবে পজেটিভ মাইক্রোবাইটা সর্বদাই মানব সমাজে মিত্র সুলভ আচরন করে৷ তাই এদের বলা হয় ফ্রেন্ডস্‌ মাইক্রোবাইটা৷