‘চাবি’ শব্দটি আমরা পর্তুগীজদের কাছ থেকে পেয়েছি৷ এদের ভাষায়cha -এর উচ্চারণ কতটা ‘শ’ এর মত৷ তাই ‘চাবি’-কে আমি স্পেন ও পতুর্গাল দুই-দেশেতেই ‘শাবি’ উচ্চারণ করতে শুণেছি৷ আজ এই ‘চাবি’ শব্দটি বাঙলা তথা সমগ্র উত্তর ভারতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত৷ অথচ আজ থেকে ৪৫০ বছর আগেও শব্দটির সঙ্গে এদেশের কারও পরিচয় ছিল না৷ উত্তর ভারতে ‘চাবি’কে বলা হ’ত ‘কুঞ্জী’ আর বাঙলায় বলা হত ‘কাঠি’৷ তালাচাবি রাঢ়ে এখনও কেউ কেউ ‘কুলুপ কাঠি’ বলে থাকেন৷ এমনকি যারা চাবি বলেন তারাও কেউ কেউ চাবিকাঠি বলে থাকেন৷ বলেন---‘‘সিন্দুকটি তোমার চাবি-কাঠিটি আমার’’৷ ‘কুঞ্জী’ শব্দটি এককালে উর্দু ভাষায় ব্যাপকভাবে চলত৷ আজ তার প্রভাব কমে গেছে৷ সেই যে উর্দুতে একটা গল্প আছে না---
এক পরীক্ষার্থী পড়াশুনা মোটেই করেনি, কিন্তু সে ছিল বেশ সুরসিক৷ উত্তর পত্রের প্রতিটি পাতাতেই ও প্রতিটি প্রশ্ণের উত্তরেই সে কেবল লিখে গেছে---
‘‘হজুারোঁ কী কিসমৎ তেরে হাথোঁ মে হৈ৷
অগর পাস কর্ দেঁ তো ক্যা বাত হৈ৷’’
(হাজার হাজার লোকের ভাগ্য তোমার হাতে রয়েছে ৷ যদি পাস করিয়েই দিলে, তাতে ক্ষতিটা কী? পরীক্ষক মশায় ছিলেন আরও বেশী রসিক৷ পরীক্ষার্থী যেখানে যেখানে ওই পঙতি ক’টি লিখেছিল তিনি ঠিক তার নীচের প্রতিটি পাতায় লিখে দিলেন---
‘‘কিতাবোঁ কী কুঞ্জী তেরে হাথোঁ মে হৈ
অগর ইয়াদ কর লেঁ তো ক্যা বাত হৈ৷’’
বইয়ের চাবি তোমার হাতেই রয়েছে৷ যদি মুখস্থই করে নিলে তাতে ক্ষতি টা কী?