সীমান্তে শান্তি রক্ষায় খুবই সংযত হয়ে চলতে হবে

লেখক
প্রবীর সরকার

বর্তমানে বিরাট ভারতযুক্ত রাষ্ট্রের উত্তর পূর্বাঞ্চলের নিরাপত্তা সম্বন্ধে ভারতের নাগরিকদের দায়িত্ব বেশকিছু বেড়েছে, কারণ প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশে সেখ হাসিনার বিদায়ের পর যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে তাতে সাম্প্রদায়িক মৌলবাদিরা আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে৷ সাম্প্রদায়িক হিংসার আশ্রয় নিয়ে অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা চলছে৷ বলা বাহুল্য এক শ্রেণীর প্রচার মাধ্যম সাম্প্রদায়িকতার আগুনে ঘি ঢালছে৷ এই উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় অভিশাপ সাম্প্রদায়িকতা৷ ৭৭ বছর ধরে যার ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছে তিন দেশের নাগরিকরা৷

বাংলাদেশের হাসিনা পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সে দেশের নোবেল জয়ী মহম্মদ ইউনুসকে বিদেশ থেকে এনে তাঁর নেতৃত্বে উপদেষ্টা সরকার গঠিত হয়েছে৷ কিন্তু তিনি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ৷ তাই কোন নির্বাচিত সরকার গড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনবে সে পরিবেশও নেই৷ এই পরিস্থিতিতে ওদেশের সংখ্যা লঘুদের এক শ্রেণী সীমান্ত পেরিয়ে চলে আসতে চাইছে৷ এই দলে ভীড়ে নাশকতা সৃষ্টিকারী জঙ্গীরাও সুযোগ নেবে৷ পুলিশ বাহিনী খুব সচেতন৷ তারা সব সময় সজাগ দৃষ্টি রেখেছে৷ তাই নাগরিকগণ-এর পবিত্র দায়িত্ব সেইগুলি যাতে নজরে রাখে না৷ জঙ্গীরা প্রবেশ করে এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে৷ কারণ আমরা ভারতীয়গণ হিন্দু ও মুসলমান সেটাই যাতে সাম্প্রদায়িক সম্পৃতী বজায় রেখে সবাই মিলে মিশে চলতে পারে ও আমাদের বাহিনী ও সেই ব্যাপারে সচেতন৷ এই ব্যাপারে দেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দলেরও সচেষ্ট থাকা উচিত৷ প্রতিবেশী রাষ্ট্রে যে ধবংসাত্মক কাণ্ড এক নাগাড়ে চলছে সেটা যেন এদেশে ছড়িয়ে না পড়ে৷ মানবতাবাদী সভ্য মানুষ হিসাবে আমাদেরও আচরণের মাধ্যমে সেটা তুলে ধরা৷ চিরকালই মহান ভারতবর্ষ সেই আদর্শের পথে চলেছে৷ তাই এটি ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র৷ বাস্তবে নানা ধর্মমতে বিভক্ত মানুষ তারা ধর্মমতকে মেনে চলবে কিন্তু মূলতঃ সকল ধর্মমতেরই উৎস হলো সেই মহান একেশ্বরবাদ কারণ সেই স্রষ্টা হলেন এক ও অদ্বিতীয়৷ নানা ভাষায় তাঁকেই ডাকা হয়৷ সেই ঈশ্বর,গড,আল্লাহ-ই হলেন সেই এক অদ্বিতীয় সত্তা ছাড়া কিছুই নয়৷

তাই এদেশের এক মহান কবি বলে গেছেন---

‘জগৎ জুড়িয়া একজাতি শুধু যে জাতির

নাম মানুষ জাতি, একই পৃথিবীর স্তন্যে লালিত

একই রবি শশী মোদের সাথী৷

পরিশেষে বলি তবু দুঃখ হয় স্বার্থান্বেষী মানুষ হিংসায় মত্ত হয়ে সাম্প্রদায়িকতায় কাটাকাটি মারামারি করেই মরে৷ এতে সেই মহান শ্রষ্টা ক্রধবই হন!

টুকরো টুকরো করে মিথ্যা স্বাধীনতা দিয়ে গেল আর যারা সেটাকে সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে ভাগ করে ক্ষমতার লালসায় মেতে উঠলো তার পরিণতি---আজ যারা বেচে আছেন তারা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন! জননী জন্মভূমিকে সেদিন ভাগ করে রক্তাক্ত না করতেই মহান নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু সেদিনের কংগ্রেস নেতাদের বার বার অনুরোধকে করেন৷ কিন্তু তাঁরা তার অনুরোধকে অমান্য করেন! এটাই ছিল এক রাজনৈতিক অদূরদর্শিতা!

পরিশেষে সেই নোবেলজয়ী শান্তি পুরস্কারে সম্মানীত শিক্ষিত ব্যষ্টি ইয়ূনুসকে অনুরোধ করি তিনি যেন বিবেকের দ্বারা চালিত হয়ে আবার সাম্প্রদায়িক রক্তক্ষরণ থেকে রক্ষা করেন৷ মানবতাবাদী কবি নজরুল ইসলাম বলেছেন---‘‘হিন্দু না ওরা মুসলীম ওই জিজ্ঞাসে কোনজন, কাণ্ডারী বলো ডুবিছে৷’’