সম্পাদকীয়

মানব ধর্মের সাধনায় রত হওয়ার দিন---শ্রাবণী পূর্ণিমা

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

১৯৩৯ সালের শ্রাবণী পূর্ণিমাতে মহান দার্শনিক ঋষি শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার (পরবর্তীকালে যিনি শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তি নামে পরিচিত হয়েছেন) কলিকাতায় গঙ্গার তীরে কাশি মিত্র ঘাটে কুখ্যাত ডাকাত কালীচরণ কে মানব ধর্মের সাধনায় দীক্ষিত করে সৎ পথে ফিরিয়ে এনেছিলেন৷ তরুণ প্রভাত রঞ্জন সরকার তখন বিদ্যাসাগর কলেজের ছাত্র ছিলেন৷ কালীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় তখন কলিকাতার কাশীমিত্র ঘাট এলাকার ত্রাস৷ ডাকাত কালীচরণ বা কালী ডাকাত নামেই এলাকার সবাই জানত৷ তরুণ প্রভাতরঞ্জন সরকার প্রত্যহ অপরাহ্ণে কাশীমিত্র ঘাটে সান্ধ্য ভ্রমণে আসতেন৷ সেদিনও এসেছিলেন---দিনটি ছিল ২৯শে আগষ্ট মঙ্গলবার,শ্রাবণী পূর্ণিমা৷ গঙ্গার তীরে একটি বটগাছের নীচে ব

শ্রাবণী পূর্ণিমার কথা

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

তারকব্রহ্ম শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী আবির্ভূত হলেন এমন এক যুগসন্ধিক্ষণে যখন প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়েছে, দ্বিতীয় আর এক বিশ্বযুদ্ধের প্রস্তুতি চলছে৷ পৃথিবীতে সর্বপ্রকারের মূল্যবোধ হয়েছে ধ্বংসপ্রাপ্ত৷ সত্য, শিব, সুন্দর হয়েছে অস্বীকৃত৷ নানা ধর্মমত ও রাজনৈতিক মতবাদ–প্রচারিত ভাব–জড়তা (ডগ্মা) মানব–সমাজকে করেছে খণ্ডবিখণ্ড, রক্তাক্ত, কলুষিত, কলহপ্রবণ ও পরমত–সহিষ্ণু৷ শিক্ষা হারিয়ে বসেছে তার মূল উদ্দেশ্য৷ আর যার জন্যে এত সব সমারোহ, এত সব আয়োজন, এত সব ঢ়ক্কানিনাদ–সমাজের সেই কেন্দ্রবিন্দু, সেই মধ্যমণি মানুষ হয়েছে চরমভাবে উপেক্ষিত ও পরিত্যক্ত৷ মানব ধর্মের সাধনা ছেড়ে মানুষ ছুটে চলেছে সহজ ধর্মের পথে, ভোগের পথ

স্বাধীনতার প্রাপ্তি

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

আর একটা ১৫ই আগষ্ট এসে গেল৷ স্বাধীনতার পর ৭৭ বছর অতিক্রান্ত৷ ৭৭ বছরে দেশবাসী কি পেল৷ বিভিন্ন আর্থিক সংস্থার প্রতিবেদন বলছে দেশের সিংহভাগ সম্পদের মালিক মুষ্টিমেয় কয়েকজন ধনকুবের৷ শুধু সম্পদের মালিক নয়, সমস্ত আর্থিক ব্যবস্থাটাই কয়েকজন পুঁজিপতির নিয়ন্ত্রণে৷ শাসকের প্রাপ্তি কিছুটা রাজনৈতিক ক্ষমতা৷ তা নিয়েই এক একজন হোমড়া-চোমড়া তালেবর! জনগণের বরাতে শুধু ভুয়ো প্রতিশ্রুতি আর অর্থনীতির তত্ত্ব কথার কচকচানি৷ দেশ এগিয়ে চলেছে. এক নম্বর নয়, দু’নম্বর নয় একেবারে তিন নম্বরে আর্থিক বিকাশের দেশ হিসেবে৷

বিভাজন নয়--- সংযোজন চাই

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

২০০ পার, ৪০০ পারের উচ্চাশা হতাশায় পরিণত হওয়ার পর রাজ্য বিজেপির নেতাদের মস্তিষ্ক বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েছে, পরাজয়ের জ্বালায় কল বিগড়াইয়া গেছে৷ অহরহ প্রলাপ বকে চলেছে৷ কেউ উত্তরবঙ্গ, কেউ জঙ্গল মহল পৃথক করিতে চাহে তো কেউ মালদা মুর্শিদাবাদ নিয়ে, কেউ দার্জিলিং নিয়ে কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল---বুদ্ধিভ্রষ্ট নেতারা যে যার নিজের মত করে দাদাগিরি দেখানোর সীমানা নির্দ্ধারণ করতে চাইছে৷ বাঙলা ভাগের মহড়া চলছে রাজ্য বিজেপির অন্দরে৷ কে জানে বিভাজনের এই লেখা রাজ্য বিজেপির বিকারগ্রস্ত নেতারা কতদূর নিয়ে যেতে চাইছেন! বাংলায় একটা প্রবাদ আছে ‘‘সারমেয় শের স্ব-সীমানায়!

দুর্নীতি-অপরাধ ও জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার আগে সেদিনের বিরোধী নেত্রী স্লোগান দিয়েছিলেন ‘‘বদলা নয় বদল চাই’’৷ পশ্চিমবঙ্গবাসী সেই বদলের আশাতেই ৩৪ বছরের হার্র্মদ রাজের অবসান ঘটিয়ে বিরোধী নেত্রীর হাতে রাজ্যের শাসনভার তুলে দেয়৷ গত ১২ বছরে বদল যে হয়নি তাতো নয়! যার সুফল গরীব মধ্যবিত্তের ঘরে ঘরে পৌঁছেও যাচ্ছে৷ তবু বহু আশার দুর্নীতির রাহুমুক্ত পশ্চিমবঙ্গ হতে পারলো কই!

বিলম্বিত বোধোহয়

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

৭৭ বছর হয়ে গেল দেশ স্বাধীন হয়েছে৷ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় আস্থা রেখে স্বাধীন দেশের জনগণের সরকার দেশের শাসন ভার হাতে নিয়েছে৷ এই ৭৭ বছরে আমরা কি পেলাম, কি হারালাম দেশের কি কল্যাণ হয়েছে তার হিসাব নিতে গেলে অনেকেই বলবেন কি দরকার অতীতের জাবর কেটে! বর্তমানের দুঃখ দুর্দ্দশা কিভাবে দূর হবে সেই পথ দেখান৷ লাভ বিশেষ না হলেও অতীতের জাবর কাটা একেবারে যে অমূলক তাও বলা যাবে না৷ সব আলোচনা সকল দেশবাসীর কাছে সন্তোষজনক নাও হতে পারে, তবে শুভ পরিণাম যদি কিছু থাকে তার ফল সকল দেশবাসীর জন্যে৷ মূল প্রশ্ণ ৭৭ বছরে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কতটা সার্থকরূপ পেয়েছে৷

মুখ্যমন্ত্রীর আশংকা অমূলক নয়

১৮৭২ সালে এদেশের ব্রিটিশ সরকার পূর্ণ বাংলার যে মানচিত্র প্রকাশ করেছিল তাতে বাংলার আয়তন ছিল ২ লক্ষ ৪৮ হাজার ২৩১ বর্গমাইল (৫ লক্ষ ৩৫ হাজার ৪৭১ কি.মি.৷ বাংলা, বিহার, ওড়িষ্যা, ছোটনাগপুর ও অসম নিয়ে ছিল ‘বঙ্গপ্রদেশ’৷ মুঘল আমলে এর নাম ছিল সুবা বাংলা–যা পশ্চিমে বারাণসী পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল৷ তার পশ্চিমে ছিল ‘হিন্দোস্তান’ সুবা৷ আর তারপর ছিল পঞ্জাব সুবা৷ ব্রিটিশরা ১৮৭৪ সালে তাদের শাসনকার্যের সুবিধার অজুহাতে অসমকে (৪৩,৪৭৩ বর্গমাইল) বাংলা থেকে বিচ্ছিন্ন করে৷ ১৯০৫ সালে লর্ড কার্জন বাংলাকে মধুমতী–পদ্মা সীমানা বরাবর দু’ভাগ করতে চায়৷ পূর্বাংশ নিয়ে পূর্ববঙ্গ–সম প

রাজনীতি ও দুর্নীতির মূলে

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

রাজনীতি বলতে সাধারণত বোঝান হয় রাজার নীতি বা রাজ্য শাসন বিষয়ে নীতি শাস্ত্র৷ রাজার নীতি--- রাজনীতি---ষষ্ঠী তৎপুরুষ৷ প্রকৃত অর্থে রাজনীতি--- নীতির রাজা বা শ্রেষ্ঠ নীতি৷ তা রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে, সমাজের ক্ষেত্রে, অর্থনীতির ক্ষেত্রে, শিল্প সাহিত্য-সংস্কৃতির ক্ষেত্রে,  ধর্মের ক্ষেত্রে যে নীতি জড় জীব সর্ব অস্তিত্বের সার্বিক কল্যাণের পথ নির্দেশনা দেয় তাই রাজনীতি বা নীতির রাজা৷

আর্থিক মুক্তির পথ অর্থনৈতিক গণতন্ত্র

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

লাগাম ছাড়া মূল্যবৃদ্ধি, বিশেষ করে খাদ্যপণ্য ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের ৷ মধ্যবিত্ত নিম্ন-মধ্যবিত্তের অবস্থা শোচনীয়৷ এদিকে জিডিপি জিডিপি (গ্রস ডোমেস্টিক প্রডাক্ট) করে উন্নয়নের ঢাক পেটাচ্ছেন নেতামন্ত্রীরা৷ কিন্তু জিডিপির সঙ্গে আমজনতার সম্পর্ক কতটুকু৷ জিডিপি কমা, বাড়ার সঙ্গে দেশের সার্বিক বিকাশ নির্ভর করে কি? পুঁজিবাদী দুনিয়ায় যেখানে সম্পদের সিংহভাগ দখল করে বসে থাকে মুষ্টিমেয় কয়েকজন সেখানে জিডিপি দেখিয়ে উন্নয়নের দাবী চরম মিথ্যাচারিতা৷

পরিবেশ দিবসের লক্ষ্য

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

তাপপ্রবাহে জ্বলছে দক্ষিণবঙ্গ মানুষ অতীষ্ঠ৷ সবার মুখে একই কথা---আর কতদিন এই গরম চলবে আর যে পারছি না এই গরম সইতে!