সম্পাদকীয়

২১শে ফেব্রুয়ারী সমাজ আন্দোলনের প্রেরণা

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

২১শে ফেব্রুয়ারী বাঙলা ও বাঙালীর গৌরব৷ ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী ওপার বাঙলার বিশেষ করে ছাত্র, যুবসমাজ সমস্ত প্রকারের সংকীর্ণতার ঊধের্ব উঠে মাতৃভাষা বাংলার প্রতি ভালবাসার টানে যেভাবে ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ সমুদ্রের মত উত্তাল হয়ে উঠেছিল ও সমস্ত গোঁড়া ধর্মমত ও সাম্প্রদায়িকতার সমস্ত প্রাচীরকে ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল, ইতিহাসে তার তুলনা নেই৷ যুবজাগরণ সম্পর্কে কাজী নজরুল বলেছিলেন---

‘এই যৌবন জলতরঙ্গ রুধিবে কি দিয়া বালির বাঁধ

কে রোধিবে এই জোয়ারের জল গগনে যখন উঠেছে চাঁদ৷’

নীলকন্ঠ দিবসের নির্ঘোষ আনন্দমার্গ অপ্রতিরোধ্য

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

১২ই ফেব্রুয়ারী ‘নীলকণ্ঠ’ দিবস৷ আনন্দমার্গের ইতিহাসে এক স্মরণীয় দিন৷ আজ থেকে ৫১ বছর আগে ১৯৭৩ সালের ঘটনা৷ পটনার বাঁকিপুর সেন্ড্রাল জেলে মিথ্যা অভিযোগে বন্দী মার্গগুরু শ্রীশ্রীআনন্দমূত্তিজীক্ হত্যার উদ্দেশ্যে ওষুধের নামে প্রাণঘাতী মারাত্মক বিষ প্রয়োগ করা হয়৷ কিন্তু মার্গগুরুদেব সেই বিষকে আত্মস্থ করে তাঁর প্রতিক্রিয়া নষ্ট করে দেন৷

মার্গগুরুদেব এই বিষ প্রয়োগের বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবী করেন৷ সরকার তাঁর দাবীতে কর্ণপাত করেনি৷ এরপর ১লা এপ্রিল (১৯৭৩) তিনি এই দাবীতে অমরণ অনশন শুরু করেন৷ এই ঐতিহাসিক অনশন চলেছিল পাঁচ বছর চার মাস দুই দিন৷

আধ্যাত্মিক চেতনার জাগরণ চাই

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

আজকের সমাজের  বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে যাঁরা  নিজেদের প্রগতিশীল  বলে জাহির করেন, তাঁরা আদর্শ সমাজ সংরচনায় আধ্যাত্মিকতার যে একটা অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে, তা সাধারণতঃ স্বীকার করতে চান না৷ তাঁরা আধ্যাত্মিকতাকে মনে করেন একটা অন্ধবিশ্বাস  বা কুসংস্কার৷ আসলে ‘আধ্যাত্মিকতা’  সম্পর্কে তাঁদের ধারণাটাই পুরোপুরি ত্রুটিপূর্ণ৷

নব্যমানবতাবাদই শেষ আশ্রয়

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

ধর্মচেতনা অর্থাৎ ঈশ্বরের প্রতি ভক্তি ব্যষ্টি মানুষের জীবনকে শুভপথে পরিচালিত করে৷ মানুষের মধ্যে সততা আনে৷ নৈতিকতার ভিত শক্ত করে, বিবেককে সদা জাগ্রত রাখে৷ তখনই সমাজের যথার্থ কল্যাণ ও শান্তি আসে৷

আর্থিক মুক্তির পথ প্রাউট

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

কয়েক দিন পরেই আগামী ২৬ শে জানুয়ারী ঘটা করে কেন্দ্রীয় সরকার  ভারতের প্রজাতন্ত্র  দিবস পালন করবেন৷  ১৯৪৭ সালের ১৫ই আগষ্ট ব্রিটিশরা  স্বাধীন ভারতবর্ষের প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা  হস্তান্তরের পর আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৫০ সালের ২৬শে জানুয়ারী ভারতের নিজস্ব সংবিধান কার্যকর করা হয় ও ভারতকে  গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র হিসেবে ঘোষণা করা  হয়৷ এই সংবিধানে প্রতিটি  মানুষের জীবনধারণের অধিকার, সমানাধিকার, স্বাধীনতার অধিকার প্রভৃতি মৌলিক অধিকার  স্বীকৃত  হয়৷

শাসকের নয়, মানুষের পরিবর্তন চাই

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

গণতন্ত্র সম্পর্কে বলা হয় জনগণের দ্বারা, জনগণের জন্য, জনগণের সরকার৷ কিন্তু স্বাধীনতার ৭৭ বছর পরও দেশে সত্যিকারের জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি৷ কারণ রাজনৈতিক দলগুলি তোয়াজ করে, লোভ দেখিয়ে অথবা ভয় দেখিয়ে ভোট আদায় করে৷ রাষ্ট্রের পরিচালক নির্বাচন করতে যে সামাজিক অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক চেতনার দরকার তা ভারতে নগণ্য সংখ্যক ভোটারদের থাকে৷

গণতন্ত্র মানে তো জনগণ, কারও চাপে নয়, স্বাধীন ভাবে বিচার–বিবেচনা করে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করবে৷ আর সেই জনপ্রতিনিধিরা দেশ পরিচালনা করবে৷ তবে তাকে বলা হবে জনগণের দ্বারা নির্বাচিত জনগণের জন্যে–জনগণের সরকার৷ একেই বলে গণতন্ত্র৷

আন্তর্জাতিক শুভ নববর্ষ ২০২৪

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

কালের নিয়মে বয়স বেড়ে গেল একটা বছর৷ বিপরীতে আয়ুক্ষয় হল একটা বছর৷ বিগত বছরে কি পেলাম কি হারালাম, সে হিসাব করলে হিসাবের ঝুলিতে শূন্যই থাকবে৷ মূল্যবান একটা বছরের অনেকটাই বাজে কাজে, বাজে কথায় কেটে গেছে৷ সে হিসাব থাক!

অর্থনৈতিক গণতন্ত্র সার্বিক উন্নয়নের একমাত্র পথ

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডারের (আই.এম.এফ.) সতর্ক বার্র্ত জিডিপির ঘাড়ে চেপে বসবে কেন্দ্রীয় সরকারের ঋণের বোঝা৷ এদিকে করোনা আবার দরজায় কড়া নাড়ছে৷ দেশের আর্থিক পরিস্থিতির বাস্তব চিত্রের সঙ্গে সরকারের দেওয়া তথ্য ও বিভিন্ন আর্থিক সংস্থার প্রতিবেদনে বিস্তর ফারাক৷ সরকার যদিও ঐসব প্রতিবেদন স্বীকার করে না৷ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী মাস দুয়েক আগে আশ্বাস দিয়েছিলেন--- সরকার ঋণের বোঝা কমানোর চেষ্টা করছে৷ তার মধ্যে আই.এম.এফের সতর্কবার্র্ত কেন্দ্রীয় সরকারের বক্তব্য --- আভ্যন্তরীণ দেশীয় মুদ্রায় দেওয়া নেওয়া হয়৷ তাই বিদেশী মুদ্রার বিনিময় মূল্যের সঙ্গে এর কোন সম্পর্ক নেই৷ তবে পাঁচলক্ষ কোটির অর্থনীতির রেকর্ড ছোঁয়ার আগেই

ধর্মের প্রকৃত স্বরূপ

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

বর্তমানে ধর্মকে বিকৃতরূপ দিয়ে রাজনীতির অঙ্গনে ব্যবহার করা হচ্ছে৷ রাজনৈতিক নেতাদের অবশ্যই ধর্মের পথে চলতে হবে৷ কিন্তু নেতারা ধর্ম ও ধর্মমতের পার্থক্য বোঝেন না৷ হয়তো বুঝতে চাননা৷ ব্যষ্টি স্বার্থ ও দলীয় স্বার্থ চরিতার্থ করতে ধর্মমতকেই হাতিয়ার করে৷ যার পরিণতিতে সমাজে বিদ্বেষ বৈষম্য বাড়ছে৷ তাই ধর্মের প্রকৃত স্বরূপ জানা প্রয়োজন৷ প্রকৃত ধর্মের অনুসারী কখনই মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করবে না৷

শিক্ষা ব্যবস্থার ত্রুটি দূর করতে হবে

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

শিক্ষাই মানব সমাজের মেরুদণ্ড৷ পশু জন্ম থেকেই পশু কিন্তু একটা মানুষ জন্ম থেকে মানুষের গুণাবলী অর্জন করে না, মনুষত্বের বিকাশের জন্যে, সমাজ-চেতনার বিকাশের জন্যে তাকে শিক্ষার ওপর নির্ভর করতে হয়৷ তাই প্রকৃত শিক্ষার ব্যবস্থা যদি না থাকে, শিক্ষা-ব্যবস্থা যদি ত্রুটিপূর্ণ হয়, তাহলে যথার্থ মানুষ তৈরী হবে না, সমাজ অমানুষে ভরে যাবে, ও সমাজ-ব্যবস্থায় বিশৃঙ্খলা, ব্যাভিচার প্রভৃতি প্রবল রূপ নেবে৷ বর্তমানে সমাজে যে ব্যাপক উচ্ছৃঙ্খলতা, সমাজ-চেতনাহীনতা, ব্যাভিচারিতা তার মূল কারণ এটাই৷ তাই বিশেষ করে শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর গুরুত্ব দেওয়া দেশনেতাদের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব ও কর্তব্য৷ আর শিক্ষার জন্যে একটা শান্ত পরিব