২৩শে জানুয়ারীর  আশা

লেখক
আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

রাস্তাটা দিয়ে প্রায়ই যাই, কখনো  চোখে  পড়েনি, আজ পড়ল৷ মূর্তিট ার চারপাশে  বাঁশের  ভারা বাঁধা৷ হঠাৎ কেন? ভালোই তো ছিল---কাক শালিখের আশ্রয়স্থল!

সামনে ২৩শে জানুয়ারি৷ নেতাজি, তোমায় স্মরণ  করতে হবে না! সারা বছর তো কাক শালিখের....ভরা থাকে৷  এই একটা দিনের জন্যে একটু ঘসে মেজে ঝক ঝকে করে নিতে হবে৷ তারপর সারা বছর কে আর তোমায় মনে রাখে! কতোই তো খোঁজা  হলো, কোথায় গেলে! আজকাল  আবার সোসাল মিডিয়া---না কী বলে?...ফেক নামে ভেক নামে কতোই না লেখালেখি! তবু তুমি কোথায়--- কেউ জানে না৷

নেতাজী, যারা তোমায়  দেশ ছাড়া করেছে, যারা চক্রান্ত করে’ শুধু তোমার সঙ্গে নয়, সমগ্র দেশবাসীর সঙ্গে প্রতারণা করেছে, তারা বেশ বহাল তবিয়তেই আছে৷ বড় বড়  সুউচ্চ মূর্তিও বসছে৷

শুধু তুমি! কতো দাবী উঠবে নেতাজী তোমায় নিয়ে৷ তারপর তেইশের  রাত ফুরোলেই  তুমিও ফুরিয়ে  যাবে, না ভুল বললাম, ভারতে রাজনীতির  ব্যবসায় তুমি এখনও সেরা মূলধন৷ তাই তুমি থাকবে কপট নেতাদের কন্ঠ-ওষ্ঠ ভরে, তুমি থাকবে কতো রঙ্গ নাটকে, তোমার সুমহান  আদর্শ, তোমার দেশপ্রেম, দেশের জন্যে আত্মত্যাগ... দূর ও সব  বোকাদের জন্যে! তাইতো  তোমায়  দেশ থেকে সরিয়ে  দিয়ে তোমার শিরে প্রথম প্রধানমন্ত্রীর টুপি....

মাঝে মাঝে মনে হয় এই লোক ঠকানোর  রাজনীতি  কতোদিন, আর কতো দিন৷ পাঁকেই  তো পদ্ম ফোটে৷ এই পঙ্কময় স্বার্থ-লোভ আর হিংস্র রাজনীতির  বিষাক্ত বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসবে  না সেই সব দামাল ছেলে, জীবন-মৃত্যু যাদের কাছে পায়ের ভৃত্য৷ নেতাজির  স্বপ্ণের  ভারত সার্থকরূপ পাবে তাঁদের  ত্যাগ তিতিক্ষায়, আসছে,সেই দিন আসছেই৷ নেতাজি, বৃথাই  তোমায় খোঁজা সাংহাই, তাইহোকু, মস্কোয়, শাহ নওয়াজ, খোসলা  আর মুখার্জি কমিশনের পাতায় পাতায়৷ নেতাজী তুমি আছো তোমার স্বপ্ণে, তোমার ত্যাগে৷ তোমার আদর্শে উদ্বুদ্ধ বাঙলার দামাল ছেলেরা আবার জাগবে সাধনায়---সেবায়, ত্যাগে গড়ে উঠবে নোতুন পৃথিবী, নোতুন সমাজ৷ সুভাষচন্দ্র, তোমার অফুরন্ত উদ্দীপনা, দৃঢ় সংকল্প, আত্মবিশ্বাসের অনির্বাণ শিখা জাগ্রত হোক বাঙলার প্রতিটি ছাত্র-যুবকের অন্তরে ---এই আশায়....