আজকের চরম দুর্দ্দিনে দেশের সৎনীতিবাদী মানুষকে এগিয়ে আসতেই হবে

লেখক
প্রভাত খাঁ

সারা ভারত যুক্তরাষ্ট্রের মোট জন সংখ্যার প্রায় ৬৫ শতাংশ মানুষ যাঁরা নিম্নমধ্যবিত্ত ও গরিব হতদরিদ্র তাঁদের বেঁচে থাকার সব অধিকার হরণ করে বর্তমান কেন্দ্র সরকার এমন একপেশে পুঁজিপতি তোষনের জঘন্য শাসন চালিয়ে যাচ্ছে যেটাকে মোটেই জনগণের সরকার বলা চলে না! কেন্দ্রে ও বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে চলছে এক ধরণের বুলডোজার সরকার৷ তারই জন্য মহামান্য আদালত সুপ্রিমকোর্ট এন.ডি.এর শাসিত সর্ববৃহৎ রাজ্য উত্তর প্রদেশের সেই গোঁড়া যোগী সরকার এর বুলডোজার নীতিকে ঘোষণা করেছেন ‘অসংবিধানিক ও অমাননিক৷’ যোগী সরকার যেসব বাড়ি রাজ্য সরকারের এক ধরণের স্বেচ্ছাচারিতার আচরণে ‘বুলডোজার’ দিয়ে ভেঙ্গে ধবংস করেছে সেই সব সম্পত্তির মালিকদের আবেদন অস্বীকার করে, তাঁদের প্রত্যেককে ১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিয়েছেন৷ তাছাড়া এই সরকারকে তার নির্মমতার জন্য তীব্রভাবে ভর্ৎসনা করেছেন৷

এটা যেমন একটা জঘন্য আচরণের দিক ঠিক তেমনই বর্তমানে দেখা গেল প্রশাসনের ব্যর্থতার কারণে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর গুজরাটে নিষিদ্ধবাজির গুদামে হঠাৎ আগুন লাগার দরুন ১৮জন শিশু নারী অগ্ণিদগ্দ হয়ে অকালে প্রাণ হারালেন৷ এবাজি নাকি জমিয়ে রাখা হয় অদূর ভবিষ্যতে মূলতঃ ধর্মীয় উৎসবে আনন্দ করার কারণে৷ বাজি তৈরী করাটাই নিষিদ্ধ কিন্তু বাজি তৈরী করতে যে জিনিসগুলির দরকার সেটা তো মূলতঃ কেন্দ্র সরকারের নিয়ন্ত্রণের বস্তু! সেগুলিই বা কি করে বাজির কারখানার মালিকগন পায়? এখানেও সেই প্রশাসনিক ব্যর্থতা কি নয়?

ঠিক তেমনই একটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটে গেছে পশ্চিম বাংলার পাথর প্রতিমায় তাতে অকালে শিশু, নরনারীসহ ৮ জন মারা যান! সেখানেও কি সরকার এর প্রশাসন কিছুই জানতেন না? তাই অতি দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় একটা দুর্ভাগ্যজনক কথা সেটা হলো এদেশের দলতান্ত্রিক সরকারগুলি কি শুধু দলীয় স্বার্থেই শাসন পরিচালনা করে চলেছেন স্বরাষ্ট্র দফতর ও পুলিশ বিভাগ কি এই সবের দিকে তাকাবার সময় পান না? তাহলে কিসের শাসন আর কিসের নাগরিকদের নিরাপত্তা! যে সব স্থানে এই নিষিদ্ধ বাজির কারখানাগুলি সমাজের মধ্যেই চলে সেখানে সে শাসকদলের স্থানীয় পঞ্চায়েত ব্লক স্তরের নেতাও নির্বাচিত প্রতিনিধিরা থাকেন, সেখানে নিরাপত্তার কারণে সে ব্যাপারে সচেতন থাকাটা কি তাদের কর্ত্তব্য নয়? সরকার কি শুধু হাত জোড় করে দুঃখ প্রকাশ করবেন! আর কিছু মৃতের পরিবার এর হাতে টাকা দিয়ে দায়িত্ব এড়িয়ে যাবেন! তাই দীর্ঘ ৭৮ বছর ধরে এই দেশে যেভাবে দলতন্ত্রীরা শাসন চালাচ্ছেন সেটার কি কোন পরিবর্তন দরকার নেই? পরিবর্তন অবশ্যই দরকার৷ কিন্তুতার জন্যে প্রয়োজন কিছু সৎনীতিবাদী মানুষ, কিন্তু ভারতের রাজনীতি এতটাই দস্যু কবলিত যে সৎনীতিবাদীরা রাজনীতিতে আসতেই চায় না৷

মনে পড়ে সেই দীর্ঘ ৩ বছর ধরে ভারত যুক্তরাষ্ট্রের যে গণ পরিষদ কঠোর পরিশ্রম করে পৃথিবীর বুকে এক বিরাট ভারতযুক্ত রাষ্ট্র পরিচালনা করার সংবিধান রচনা করেন তাঁকে দীর্ঘ ৭৮ বছর ধরে সেটিকে কয়েকটি জাতীয় নামধারী দলতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল নিছক দলীয় স্বার্থে অদ্যাবধি প্রায় ১০০-এর অধিকবার সংস্কার করে বারোটা বাজিয়ে দেশটাকে লুটে পুটে খেতেই মত্ত! আর নাগরিক আইন সংশোধন করে সেই অতীতের ২১ বছর বয়সের নাগরিকত্ব লাভ, পরে সেটাকে ১৮ বছর করা হয় তাকে বর্তমানের কেন্দ্র সরকার ১৬-১৭ বছর করে নাগরিকদের সংখ্যা বহুগুন বাড়িয়ে মহান নাগরিকদের সংখ্যা বৃদ্ধি করে তুলেছেন৷ তাতে তো একটা সামান্য পিঁপড়ে কি করছে সেটা ধরা যায়৷ তা হলে সেই অতন্ত্র প্রহরীর মতো নাগরিকগণের চোখে কি কিছুই ধরা পড়ে না দেশটাকে কতোটা নরকের দিকে ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে স্বার্থাদ্বেষী দলতন্ত্রী সরকারগুলো! এর একটাই কারণ চিন্তাশীল বয়স্ক নাগরিকগণ বোট কম দিচ্ছেন আর উঠতি বয়সের বোটার অন্ধ আবেগে ছুটে না জেনে সরকারের চাতুর্যের মোহে পড়ে বোট দিচ্ছে৷ এভাবে অচেতন নাগরিকদের বোটে রাজনৈতিক দলগুলো শাসনে এসেছে?

তাই আর দেরী নয় দেশ ও দশের সার্বিক কল্যাণে যাঁরা সংসার চালাতে জ্বলে পুড়ে মরছেন তাঁরা সচেতন হয়ে শাসক দলের খোল নলচে পালটাতে ঐক্যবদ্ধ হোন৷ ‘অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে৷ তব ঘৃণা তাঁরে যেন তৃণসম দহে! কবির কথা স্মরণ করে সেই কিছু সৎনীতিবাদী দেশ সেবকদের নির্বাচনে বোট নিয়ে শাসনে আনার ব্যবস্থা করুন নাগরিকগণ! আজ একটারই বড়ো অভাব তাহলো এই বিরাট দেশে কোন নেতাজী নেই তাই এতো দুর্দশা আর দুর্নীতি সারা দেশকে ধবংস করে চলেছে!