অনেকদিন আগেই চীনা কমিউনিস্ট পার্টি শ্রমিকদের পিছনে ছুরি মারা শুরু করেছে৷ কিন্তু প্রকাশ্যে তারা নিজেদের শ্রমিকশ্রেণীর প্রতিনিধি হিসাবেই জাহির করে এসেছে৷ সেই চীনেই এবছরের প্রথম দশ সপ্তাহের মধ্যে সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী শ্রমিকদের আন্দোলন ও হরতালের সংখ্যা ৪০০ ছাড়িয়েছে৷ প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায় যে, চীনা সরকার কড়া হাতে সেই শ্রমিক আন্দোলন দমন করেছে ও সেই আন্দোলনের সকল শ্রমিক নেতাদেরই গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷
২০১১ সালে যেখানে শ্রমিক আন্দোলনের সংখ্যা ছিল ২০০টি৷ সেখানে ২০১৭ সালে শ্রমিক আন্দোলনের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১২৫৬টি৷ চীনা সরকারের হিসাব অনুযায়ী শ্রমিক আন্দোলন ৩৮ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে৷ চীনের মধ্যস্থল বিশেষ করে হেনান, জিয়াংসু ও আনহুই প্রদেশে শ্রমিক আন্দোলন তীব্র গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে৷ জানুযায়ী মাসে হাজার হাজার চীনা শিক্ষক বেজিং-এ জড়ো হয়ে তাদের বাকি থাকা পেনশন ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধার জন্য প্রতিবাদ জানান৷ শ্রমিকদের বিনা পয়সায় ওভার টাইমের মধ্য দিয়ে খাটিয়ে নেওয়া বহুজাতিক কোম্পানীগুলোর পছন্দের একটি বিষয়৷ কিন্তু চীনদেশের শ্রমিকরা প্রতিবাদ আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে এই বিষয়ে একটা জয় হাসিল করেছেন৷
সেখানে শ্রমিকদের অসন্তোষ ও দাবী দাওয়ার আন্দোলনের বিষয়টিকে আইন-শৃঙ্খলার সমস্যা হিসাবে বিচার করছে ও শ্রমিকদের গ্রেপ্তার করেই সমস্যার সমাধানে পৌঁছাতে চাইছে৷
অর্থনীতির মন্দার কারণে চীনে, উৎপাদন ও পরিষেবা ক্ষেত্রকে সংকুচিত করে দিয়েছে৷ ফলে সেখানকার সরকার শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে৷ অবশ্য চীনা শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য পাওনার দাবী নিয়েই আন্দোলন করছেন৷ চীনা বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন আগামী বছরই ৫০-৬০ লক্ষ শ্রমিক সেদেশে কাজ হারাবেন৷ এই ঘটনা ঘটার ফলে সে দেশে শ্রমিক বিক্ষোভ আরো বাড়বে বলেই মনে করছেন তারা৷
পার্টি ও দেশের প্রধান কর্র্ত জিনপিং ‘শ্রমিকশ্রেণীর’ প্রতিনিধি হিসাবে শ্রমিকদের রক্ষার পথে না হেঁটে আগামী দিনের শ্রমিক আন্দোলনকে আরো কড়া হাতে মোকাবিলা করার পথ খুঁজতে শুরু করেছে৷ শ্রমিকরাও ক্রমশ আরো বেশী বেশী জঙ্গী আন্দোলনের পথে পা বাড়াতে শুরু করেছেন৷
সূত্রঃ- নিউইয়র্ক টাইমস্ ০২.০৪.২০১৮
- Log in to post comments