বাবরি মসজিদ ধবংস যখন হয়েছিল তখনের পরিস্থিতি আর আজকের অবস্থা অন্যরকম৷ বর্তমান বিজেপি দল কেন্দ্রে সরকার ক্ষমতা দখল করার পর থেকে বিচার ব্যবস্থা, একশ্রেণীর মিডিয়া, আমলা সরকারের ইচ্ছেধীন, হাতের পুতুল৷ যাদের বিরুদ্ধে মামলা চলছে, তারা অনেক সংগ্রাম করে অসময়ে বিজেপি দলটিকে বাঁচিয়ে রেখেছিল৷ তাঁরা আজ বিজেপিতে অপাংতেয়৷
সেই দিন দলটির মধ্যে কিছুটা হলেও মানবিক মূল্যবোধ ছিলো৷ আজকের সংঘটনটা শুধুমাত্র টাকায় চলে৷ বর্তমান পশ্চিম বাঙলার এক নেতার কী অবস্থা দেখুন৷ বহিরাগত অন্যপার্টি থেকে নেতারা এসে মূল পোস্ট পাচ্ছে আর তিনি যে ঝোলা নিয়ে এতদিন সংগ্রাম চালাতেন, আবার সেই ঝোলাতেই ফিরে গেলেন৷ ত্রিপুরায় এক বহিরাগত নেতাকে সাংঘটনিকভাবে বিজেপি ব্যবহার করে গদিতে পৌঁছাতেই কলার খোসার মতো তাকে ছঁুড়ে ফেলে দেয়৷ এটাই বিজেপির সংসৃকতি৷ এখনো সময় আছে যারা নিজেদের উজাড় করে পার্টিকে বাঁচাতে চাইছেন, আপনাদের ভবিষ্যৎ কী এরকমের হবে না তো? বিজেপির একটাই মূলমন্ত্র--- টাকাই সর্বস্ব, নেতা বা কর্মী ছাঁটাই করা বা রাখার জন্য কোন মানবিক মূল্যবোধের প্রয়োজন নেই৷
ভারতের বাঙালী বিদ্বেষী মানসিকতা কংগ্রেস সিপিএম তৃণমূল বিজেপি সকলের মধ্যেই উগ্রভাবে আমরা দেখতে পাই৷ বিজেপি সরকারে আসার পর এক চরিত্রহীন বিচারকের (পরবর্তীতে কোর্ট থেকে তাকে চরিত্রবান বলে প্রশংসা পত্র দেয়) বাঙালী বিদ্বেষী আইনে অসমসহ সারা ভারতের বাঙালী জাতিসত্তা চরমভাবে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে৷ যে আইনের বলে বাবরি মসজিদ ধবংস কারীরা মুক্তি পেল, কশ্মীরের এক আইন তৈরী হলো, তিনতালাক বিল পাস হলো৷ তবে কেন বেআইনি অসম চুক্তি, ত্রিপুরা চুক্তি, গোর্খাল্যাণ্ড চুক্তিকে আইনসিদ্ধ করে সারা ভারতের বাঙালী জাতিসত্তাকে ভারত থেকে বহিষ্কার করা চক্রান্ত চলছে? কোন রাজনৈতিক নেতাদের বলতে বা সংসদে আলোচনা করতে দেখা গেল না৷ এখনো সময় আছে নিজের পরিবার বা ব্যষ্টিগত চাওয়া পাওয়ার উধের্ব উঠে বাঙালী জাতিসত্তার কথা একবার ভাবুন৷ আগামী প্রজন্মের কথা ভেবে দল মতের উধের্ব উঠে, বাঙালীকে দাসত্ব ও বিদেশী হওয়া থেকে মুক্ত করতে আমরা বাঙালী দলের পাশে দাঁড়ান৷ বর্তমানে বাঙালী জাতিসত্তাকে বাঁচাতে একমাত্র ‘‘আমরা বাঙালী’’ দল আন্দোলন করে আসছে, তাদের হাত শক্ত করুন৷ আগামীতে নিজের অর্থাৎ বাঙালীর অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে নিজেদের প্রতিনিধি রাজ্যের বিধানসভা ও কেন্দ্রের লোকসভাতে পাঠালেই বাঙালীর হয়ে কথা বলবে৷ যেমন ত্রিপুরায় আমরা বাঙালীর নির্বাচিত প্রতিনিধি মাননীয়া রত্নপ্রভা দাসের বক্তব্যে ও ভোট না দেওয়াতে জমি হস্তান্তর আইন কিছুটা রদ করা গিয়েছিলো৷ তৎকালীন আমলে সিপিএম, কংগ্রেসের রাজনৈতিক নেতারা একটার পর একটা বাঙালী বিদ্বেষী আইন তৈরী করে বাঙালীকে চরমভাবে বিপজ্জনক অবস্থার মধ্যে ফেলেছে৷ বর্তমান বিজেপি সরকার শুধুমাত্র রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে বিদেশী মিজোদের ত্রিপুরায় পুনর্বাসনের জন্য কয়েক হাজারো কোটি টাকা খরচ করে শুধু বাঙালী নয়, জনজাতিদের জীবনও অতিষ্ঠ করতে চলেছে৷ আপনাদের উচিৎ বাঙালী জনজাতি বিভেদ নয়, ত্রিপুরাকে সার্বিকভাবে উন্নত করতে মহান দার্শনিক শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকারের প্রগতিশীল সমাজতান্ত্রিক পরিকাঠামোতে ‘‘প্রাউট’’ (প্রগতিশীল উপযোগ তত্ত্ব)- এর আলোকে স্বয়ং সম্পূর্ণ ত্রিপুরা তথা বাঙালীস্তান ঘটনে এগিয়ে আসুন৷ তবেই বাঙালী জনজাতির মহামিলনের স্বর্গ ভূমি ত্রিপুরায় শান্তি, সমৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধারণ মানুষের মধ্যে একটি সুন্দর মানবিক মূল্যবোধের স্বর্গ রচনা হবে৷
- Log in to post comments