বিজেপির নেতা বিজয়বর্গীয় মহাশয় গতকাল বারাসাতে বলেছেন আগামী পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে আমরা সরকার গড়লেই সকল মতুয়াসহ অন্যান্যদের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেবেন৷ আশ্চর্যের বিষয় যাদের ভোটের বিনিময়ে বঙ্গের মসনদে আসীন হবেন তাদেরকে কিভাবে নাগরিকত্ব দেবেন৷ ভোটের আগে নাগরিক আর ভোটের পর তাঁরা বিদেশী! এটা কেমনতর কথা? তবুও মনে করলাম খুব ভালো কথা৷ গতবার অসমের বিধানসভার নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীসহ সকল নেতারা বলেছিলো অসমে আমরা সরকারে এলে সকল বাঙালীকেই নাগরিকত্ব দেওয়া হবে৷ ডিটেনশন ক্যাম্পগুলিও ভেঙে দেওয়া হবে৷ সরকার গড়ার বিনিময়ে অসমে কয়েক লাখ বাঙালীর নাগরিকত্ব হরণ করা হয়েছে৷ ডিটেনশন ক্যাম্পে এখনো বাঙালী ভাই বোনেরা নরক যন্ত্রণা ভোগসহ মৃত্যুবরণ করতে হচ্ছে৷ বিজেপির কেন্দ্রীয় সরকার তাদের খতিয়ানে বলেছে সারা ভারতে নাগরিক আইনের আওতায় ভারতে কয়েক কোটি বাঙালী বিদেশী আছে৷ তাদেরকে চুনচুন করে খুজে বের করবে ও ভারতের ভূমি থেকে তাদেরকে বিতাড়িত করবে৷ যে বাঙালীর রক্তের বিনিময়ে আমরা আজ স্বাধীন ভারতীয় বলছি অথচ দেখুন ভারতের স্বাধীনতায় যাদের (গুজরাট) কোন রক্তের অবদান নেই তারাই বলছে বাঙালী বিদেশী বহিরাগত ঘুচপটিয়া ইত্যাদি ইত্যাদি৷ সাবধান৷ বাঙালী সাবধান৷ আজ যে সকল বাঙালীরা দেশভাগের বলি হয়ে জাতীয় নেতাদের প্রতিশ্রুতিতে ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল সেই বাঙালীদের নাগরিকত্বের ব্যাপারে কোন স্পষ্ট বক্তব্য নেই বিজেপি সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের কাছে৷ তারা সকলেই নির্বাচনী ইসু বানিয়ে ঘোলা জলে মাছ ধরতে ব্যস্ত৷ হিন্দি সাম্রাজ্যবাদের দালাল কিছু বাঙালী মীরজাফররা বাঙলার জাতিসত্তাকে বিক্রি করতে সেই বেইমানদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে ও বাঙালী বিদ্বেষী বিজেপি নেতাদের পাপচক্রের হাত শক্ত করছে৷ তাদের থেকে বার বার সাবধান থাকুন৷ নচেৎ অসম, মেঘালয় সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের বাঙালীদের মত আপনাদেরকেও ডিটেনশন ক্যাম্পে নরকের যন্ত্রণা ভোগ ও মৃত্যুবরণ করার সময় এসেছে৷ আবার বলছি সাবধান৷ বাঙালী সাবধান৷ এখন প্রয়োজন দল মত নির্বিশেষে বাঙালী জাতির ভারত ভূমিতে চরম অবহেলা ও অপমানের চরম জবাব দেওয়ার৷ জাতিসত্তাকে বাঁচাতে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসুন৷ বাঙালীর সময় এসেছে৷ আবার বলছি সাবধান৷ এখন প্রয়োজন দলমত নির্বিশেষে বাঙালী জাতির ভারত ভূমিতে চরম অবহেলা ও অপমানের চরম জবাব দেওয়ার৷ জাতিসত্তাকে বাঁচাতে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসুন৷ বাঙালীর জাতীয়তাবোধের সংগ্রামের চিরসাথী একমাত্র ‘আমরা বাঙালী’দলের হাত শক্ত করুন৷ ভারতে প্রায় ৫০-এর বেশি উর্দ্ধে লোকসভা ও রাজ্যসভায় জন্মসূত্রে বাঙালী নামধারী প্রতিনিধি থাকার পরেও বাঙালী নির্যাতনের কোনো আওয়াজ আমরা আইনসভাতে শুনতেই পাই না৷ না পাওয়া কারণ তাঁরা হিন্দি সাম্রাজ্যবাদের প্রতিনিধি৷ আগামীতে বিধানসভায় ও লোকসভায় বাঙালী দরদী প্রতিনিধি পাঠান যারা বাঙালীর নিজেদের জাতিসত্তাকে রক্ষা করতে আওয়াজ তুলবে ও বাঙালীকে রক্ষা করবে৷ আসুন তাদের জন্য সংগ্রামী শপথ নেই৷ একসঙ্গে বলুন ‘লড়ে নেবো বাঙলা মায়ের মান৷’ ফিরিয়ে দেবো বাঙলা মায়ের সম্মান৷ আমরাই গড়বো শোষণমুক্ত বাঙালীস্তান৷
লেখক--- ‘আমরা বাঙালী’ অসম রাজ্য সচিব৷
- Log in to post comments