বোট কেন্দ্রীক একপেশে অন্তবর্তী বাজেট গণতন্ত্রকেই লজ্জা দেয়

লেখক
প্রভাত খাঁ

কেন্দ্র সরকার মাত্র তিন মাসের মাসের জন্য যে অন্তর্বর্তী বাজেট (ব্যয়মাত্রিকা) পেশ করেছে সেটাকে বলা যায় এক ধরণের আগামী লোকসভার বোট যেটা ২০২৪-এ অনুষ্ঠিত হবে সেটার দিকে লক্ষ্য রেখেই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী মাননীয়া নির্মলা দেবীর শেষ বাজেট পেশ৷ এই বাজেটটাও সেই অতীতের বাজেটে যে কল্পিত ঘোষনা বছরে ২কোটি বেকারের চাকরী তারই বোটমুখী৷ কারণ এই টুকরো বাজেটে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর তিনকোটি মহিলাকে লাখপতি দিদি হওয়ার সুযোগ দেওয়ার ঘোষনা! মনে রাখা দরকার এটা একটি বৃহত্তর দলতান্ত্রিক সরকার যেটি কেন্দ্রীয় সরকার তার পক্ষে কি লজ্জাজনক নয়? যে দেশে শোষিত ও বঞ্চিত মহিলাদের সংখ্যা কোটি কোটি! যাদের মুখে দু’বেলা দু’মুঠো অন্ন জোটে না!

বাৎসরিক আয়কর ছাড় মাত্র ৭ লক্ষ পর্যন্ত৷ যদি এই হতভাগ্য দেশে কতজনই আয় করেন বছরে ৭ লক্ষ তবে অনেক বৃদ্ধ চাকুরে আছেন যাঁদের চাকুরীর মেয়াদ মাত্র এক বছর কি কয়েক মাস তাঁর বাড়িতে খেতে হয়তো ৬/৭ জন৷ আর যে সব বেকার ছেলে ও মেয়ে বসে আছেন চাকরীর জন্যে তাঁদের অবস্থাটা কি হবে? এদিকে সরকার এর তো নজরই নেই৷ গত ১০ বছর শাসনে তাঁরা দেশটার আর্থিক হাল কি করেছেন! সারা দেশে তো কোটি কোটি কর্মক্ষম শিক্ষিত ও অর্দ্ধশিক্ষিত ও কায়িক পরিশ্রমে সক্ষম বেকার যুবক যুবতী অনিশ্চিতের পথে পড়ে আছেন৷ তাঁদের কথা কি একবার ও ভেবেছেন না ভাবার সময় পেয়েছেন৷ এদিকে কয়লা পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে৷ তাই প্রতি ইয়ূনিটের দাম অত্যধিক৷ তাতে অতি সাধারণ গৃহস্থ পরিবারের আয় যৎ সামান্য এমন কি কারোর চাকুরীই নেই তাতে দরিদ্র পরিবারগুলির দশাটা কতখানি সংকটে৷ তাদের কথা না ভেবে, বিদ্যুতের ইয়ূনিটের দাম না কমিয়ে আগামী বোটের স্বার্থে প্রকাশ করা হচ্ছে যে মহান(!) সরকার বিনামূল্যে এক কোটি পরিবারকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করবেন! এটা কি বোটের স্বার্থে করা হচ্ছে না? সরকারের উচিত ছিল বিদ্যুতের দাম কিছুটা ইয়ূনিট প্রতি কমানো তাতে সাধারণ মানুষের বিশেষ করে মধ্যবিত্তদের সুবিধা হতো৷ ঐ এক কোটি মানুষ এতে সরকারকে বোট দেবেন৷ সেটা কি আইন সম্মত কাজ হলো? গণতন্ত্রটা হলো সব মানুষের তাই গণতান্ত্রিক সরকারও সকলের কথা ভাববেন৷

আবার পি.এম আবাস যোজনায় আরো দু’কোটি বাড়ি! এটাও কি সেই আগামী নির্বাচনে কেন্দ্রের চমক! দেখে মনে হচ্ছে এদেশে গণতন্ত্রের নামে শাসন চলছে স্বৈরাচারী এক দলীয় সরকার! কি কারণে পশ্চিম বাঙলার আবাস যোজনার টাকা কেন্দ্র সরকার বছরের পর বছর আটকে রেখে সেই হতদরিদ্র নাগরিকদের বঞ্চিত করেছেন? তদন্তের নামে সময় হরণ করে চলেছে কেন্দ্র সরকার! সকলেই দোষী নন৷ সৎ নিরীহ গরীব মানুষদের উপর নির্যাতন করার অধিকার কি গণতন্ত্র দিয়েছে? তাই দয়া করে তাদের আটকে রাখা টাকা ছাড়ুন৷ অতীব দুঃখের এ কেমন কেন্দ্রীয় সরকার৷ বিরোধী সরকারও গণতন্ত্রে সরকার৷ আর শাসক মাত্রেই সে সরকার!

যে দলেরই হোক, না কেন শাসনে এসে তাঁকে গণতান্ত্রিক আইন মেনেই চলতে হয়৷ সরকার সকলেরই এটাই হলো রাজধর্ম পালন৷ অতীব লজ্জার কথা গত ১০ বছরে সরকার সঠিক রাজধর্ম পালন করে চলেননি যেটি অতীতে বিজেপির প্রধানমন্ত্রী চির স্মরণীয় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মাননীয় অটল বিহারী বাজপেয়ী গেছেন৷ আর সকলেরই স্মরণীয় হয়ে আছেন! তাই জনগণ অনুরোধ করেছেন বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার রাজ ধর্মপালন করে চলুন৷