এই কুৎসিত কদর্য রাজনীতি এবার বন্ধ হোক

লেখক
মন্ত্র আনন্দ

নির্বাচনী প্রচার এবার এত কুৎসিত কদর্য রূপ নিয়েছে, মিথ্যাচার, রকবাজী ভাষা, ব্যষ্টি কুৎসায় এত নীচ-হীন মানসিকতার পর্যায়ে পৌঁছেছে ...... এক শ্রেণীর সংবাদ মাধ্যম ও তথাকথিত সোস্যাল মিডিয়ার মানসিক বিকারগ্রস্ত দ্বিপদ জীবের সৌজন্যে৷ ভারতে ব্যষ্টি আক্রমণে এই কুংসিত মিথ্যাচারের আমদানী করে মূলত উত্তর ও পশ্চিম ভারতের নেতারা স্বাধীনতার আগেই সুভাষ চন্দ্রের বিরুদ্ধে৷

গত পাঁচ বছরে এই কদর্যতাকে উচ্চ শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছে কেন্দ্রীয় শাসন দলের পশ্চিমী নেতারা৷ আমার এক পরিচিত কাছের মানুষ ব্যবসায়িক স্বার্থে কেন্দ্রীয় শাসক দলের ধামাধরা৷ আমাকে একদিন বলল, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিন্দুদের নাগরিকত্ব দিতে চান না৷ আরও একটি মজার মেসেজ আমাকে পাঠিয়েছে আর একজন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বন্দেমাতরম্ বলতে বারণ করেছে৷ মূলত পশ্চিমবাঙলার বাইরে এইপ্রচারটা চলছে৷

আরও একটি নিম্নমানের প্রচার চলছে ভারতের রাজনীতির সবথেকে বিতর্কিত পরিবারটিকে নিয়ে৷ আমি নিজেও ওই পরিবারটিকে পছন্দ করি না৷ কিন্তু তাই বলে কুৎসিত প্রচারে নামতে হবে ওই পরিবারের বিরুদ্ধে৷ প্রচারটা এই রকম....ওই পরিবারের পুর্বপুরুষ মুসলমান৷ এমনভাবে বলা হচ্ছে যেন মুসলমান হওয়ার জন্যে ওই পরিবারটি দুর্নীতিগ্রস্ত৷ আমার কথা, দুর্নীতির সঙ্গে মুসলমানের কী সম্পর্ক? নীরব, ললিত, বিজয়, মেহুল এরা কি সব মুসলমান? এইভাবে পূর্বপুরুষের পরিচয় খুঁজে যদি মানুষের চরিত্র বিচার করতে হয়, তবে ওই সব পলিটিসিয়ান ও মিডিয়ার নিজেদের পুর্বপুরুষের পরিচয় খুঁজে বার করুক.....দেখবেন একটা বানর, শিম্পাঞ্জি বা ওরাং-ওটাং পেয়ে যাবেন! তাহলে! বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সভ্যতার এই বিকৃত রূপ কি খুব গর্বের? সমালোচনা চলুক, দুর্নীতির কথা উঠুক৷ কিন্তু জাতের নামে বজ্জাতি বন্ধ হোক, খিস্তির তরজা বন্ধ হোক৷ মনে রাখা দরকার সব মুসলিম খারাপ নয়, আবার সব হিন্দুও ভাল নয়৷ মন্দ ভালো নিয়েই জগৎ৷ বিশ্বকবির কথায়---

‘‘জন্মিয়াছি এমন বিশ্বে নির্দোষ সে নয়,

মন্দ ও ভালর দ্বন্দ্ব কে না জানে

 চিরকাল আছে সৃষ্টির বক্ষমাঝে৷’’

দ্বন্দ্ব চলুক৷ কিন্তু সভ্যতার মান যেন নিম্নমুখী না হয়৷