২৫-২৬ সালের বাজেট অধিবেশনের আগে সংসদের উভয় সভায় ভাষণে মাননীয়া রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু বর্তমান সরকারের প্রশংসা করে বলেন---এই সরকার ভারতকে তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে, বিকশিত ভারত ঘটনই আমাদের লক্ষ্য৷ ২৫কোটি মানুষের দরিদ্র দূরীকরণ হয়েছে ইত্যাদি৷
কিন্তু বাস্তবে আমরা দেখছিটা কি? লাগামছাড়া দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, চরম বেকার সমস্যায় দেশের ৭০শতাংশ মানুষ কাতর৷ দেশে এখন ধনিক শ্রেণী ও উচ্চমধ্যবিত্তরাই সুখে আছে৷ তাই বাজেট অধিবেশনের পর সমাজের এই শ্রেণীর মানুষরাই বাজারে খুশীর হাওয়া ছড়িয়ে দেয়৷ এতে সাধারণের উচ্ছ্বসিত হওয়ার কিছু নেই৷ বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিন মাননীয়া অর্থমন্ত্রী৷ ২০২৫-২৬ সালে যে বাজেট পেশ করে তখন বিভিন্ন সমীক্ষায় ধরা দিচ্ছে, ২০২৫-২৬ সালে জিডিপির হার নিম্নমুখী৷ শুধু তাই নয়, বিভিন্ন সমীক্ষার সতর্ক বার্র্ত আগামী বছরও জিডিপির হার কমতে পারে৷ অর্থমন্ত্রী এরজন্য দায়ী করেন চিনের সরবরাহ ব্যবস্থার ওপর৷ তিনি বলেন এটা যদি চলতে থাকে ভবিষ্যতে দেশকে ভুগতে হবে৷ বাজেট পেশের আগে সরকারের জিডিপি বৃদ্ধির লক্ষ্য মাত্রা ৬.৩ থেকে ৬.১ শতাংশ৷
প্রধানমন্ত্রী মোদিজী বলেন বাজেট স্বপ্ণপূরণের আশ্বাস৷ প্রধানমন্ত্রী আর্থিক ব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়ে গরীব মধ্যবিত্তের স্বাচ্ছন্দ্যের কথা চিন্তা না করে সংসদ চত্ত্বরে দাঁড়িয়ে, মহালক্ষ্মীর কাছে প্রার্থনা করেন---মা লক্ষ্মী যেন গরীব মধ্যবিত্তের প্রতি সদয় হন, সবার কল্যাণ করুন৷ তিনি আরও বলেন দেশের মানুষ তৃতীয় বারের জন্যে তাঁকে দায়িত্ব দিয়েছে৷ তিনি বিশ্বাস করেন স্বাধীনতার শত বর্ষে ২০৪৭ সালে বিকশিত ভারতের সংকল্প পূরণ হবে৷
১লা জানুয়ারীর বাজেট আলোচনার সারমর্ম ---
দেশের আর্থিক বিশেষজ্ঞদের বাজেট বিশ্লেষণে একটা কথাই জানা যাচ্ছে, এই বাজেট কোন সংস্কার মুখী নয়, ভোটমুখী বাজেট দলতান্ত্রিক সরকারের এটাই চরিত্র৷ এরা জনগণের জন্য নয় এরা গদীর স্বার্থেই শাসনে আসে৷ জনগণের কল্যাণের জন্য নয়৷ হিন্দুত্ববাদী বিজেপি মিলিজুলি সরকার বাজেট নিয়ে দলীয় প্রচারে ক্যান্সার সহ ৬টি মারণ রোগের ঔষধের দাম ১০০ শতাংশ ছাড় ও আরও কিছু জীবনদায়ী ঔষুধের ৫ শতাংশ ছাড় দেওয়ার কথা বলে যাচ্ছেন৷ এছাড়া মেডিকেল কলেজগুলিতে ১লক্ষের অধিক আসন বৃদ্ধি করেছে ও আরও ১০ হাজার বৃদ্ধির কথা আছে৷ প্রায় এককোটি চুক্তিভিত্তিক কর্মী উপকৃত হবে৷ এই বাজেটে কৃষি মহিলা যুবসমাজকে বার্তি কিছুটা সুবিধা দিলেও কর্ষকদের দাবী নিয়ে কোন উচ্চ বাচ্চ করেনি৷ স্বনির্ভর হওয়ার জন্য মহিলাদের উৎসাহ দিতে ২কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হবে৷ তবে সেটা তপশিলি ও উপজাতিদের জন্য৷ পর্যটন কেন্দ্রগুলির উন্নতির জন্য সাহায্য করার কথা বাজেটে আছে৷ এরকম অনেক আশ্বাস থাকলেও ভাঁড়ে মা ভবানী৷ তাই এই বাজেট ঘাটতি বাজেট৷ তবে এই বাজেটকে বিরোধীরা বিহার বাজেট বলে উল্লেখ করছেন৷ ঘন ঘন দলবদলু নীতিশ কুমার এন.ডি.এ জোটের অন্যতম শরিক৷ কিন্তু তাঁর দল বদলু চরিত্রের জন্য তাঁর প্রতি বিশ্বাস কম৷ তাছাড়া সামনে বিহার ভোট তাই নীতিশ কুমারকে সন্তুষ্ট করতে বাজেটকে বিহার মুখী করে তুলেছে সীতারমন৷
বর্তমানে মধ্যবিত্তকে খুশী করতে ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় কোন কর দিতে হবে না৷ প্রবীনদের ১লক্ষ টাকা এস.ডি. বর্তমান আইনে বাদ যাবে৷ ৪ থেকে ৮ লক্ষ টাকা আয় পর্যন্ত ৫ শতাংশ, ৮ থেকে ১২ লক্ষ টাকা ১০ শতাংশ, ১২থেকে ১৬ লক্ষ টাকা আয় ১৫ শতাংশ, ১৬ থেকে ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ২০ শতাংশ ও ২০ থেকে ২৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় ২৫ শতাংশ আয়কর দিতে হবে৷
কর্মহীন দেশে কোন কোন ক্ষেত্রে অনুদান ছাঁটাই করা হয়েছে৷ রেগা হলো গ্রামের জীবন তাঁকে মোদী অন্তিম দশায় টেনে এনেছে৷ তিনি বলেছেন রেগা হলো ঘরবাতি প্রকল্প, এতে অনেকের নাম বাদ গেছে,তাদের কোন কিছু না জানিয়ে বাদ দেওয়া হয়েছে৷ ২০১৯-২০ থেকে ২০২৩-২৪ পর্যন্ত ৪কোটি জব কার্ডের নাম বাদ গেছে৷ পক্ষান্তরে নোতুন জব কার্ড হয়েছে, এক থেকে ২কোটি৷ এর কারণ জানতে চাইলে কেন্দ্র রাজ্যের ঘাড়ে দোষ চাপায়৷ ডি.এম.কে ও তৃণমূল নেতা দয়ানিধি মারান ও অভিষেক বন্দোপ্যাধ্যায় বলেন--- এই বাজেটে মধ্যবিত্তের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে৷
প্রাউটের মতে বাজেট আয় ব্যয়ের মাত্রিকা বর্তমান বাজেটে সরকারের আয় মাত্রা কত টাকা কিছুই জানানো হয়নি৷ তাই এই বাজেট হলো ভাঁড়ে মা ভবানীর বাজেট৷
- Log in to post comments