করোনা রাষ্ট্রগুলিকে  নব্যমানবতায় উদ্বুদ্ধ  হতে  পরোক্ষভাবে শিক্ষা দিচ্ছে!

লেখক
প্রভাত খাঁ

কেন্দ্র ও রাজ্যের হাতে যুক্তভাবে যে শাসনক্ষমতার তালিকা সংবিধানে নির্দ্দেশিত আছে সেগুলি কী কেন্দ্র সরকার যথাযথভাবে পালন করছেন বর্তমানে চরম সামাজিক,আর্থিক, আর করোনা আক্রমণে নিপীড়িত সারা রাষ্ট্রের জনগণ জানতে আগ্রহী অত্যন্ত দুঃখের  ও লজ্জার কথা এদেশের রাজনৈতিক দলগুলির সে যে দলই হোক, শাসন ক্ষমতা হাতে পেলেই স্বৈরাচারী একবগ্গা মানসিকতার পরিচয় দিয়ে থাকে---ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে তাঁরা পদে পদে সংবিধানের উল্লেখ করেন কিন্তু  অদ্যাবধি যে যখন শাসনে এসেছেন তাঁরাই ছলবল ও কৌশলে সেই পবিত্র সংবিধান সংশোধন করে বসেন তবু তাঁরা গদী শেষ পর্যন্ত্য কায়েম করে রাখতে পারেন  কি কেন্দ্র সরকারে (পড়ুন মোদি সরকারের) গত কয়েক বছরের শাসনে আর্থিক অবস্থা তলানিতে  এসে দাঁড়িয়েছে এখন সাধারণের আর্থিক অবস্থা শোচনীয় বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম এতোটা বেড়েছে যে আর্থিক অভাবে কিনতেই পারছেন না ফলে তাঁদের দৈনন্দিন সাংসারিক জীবন যাত্রাটাই দুর্বিসহ হয়ে দাঁড়িয়েছে গত কয়েকমাস করোনার আক্রমণে কেন্দ্রীয় সরকার যে দিনের পর দিন লক্ ডাউন ঘোষণা করেছেন তাতে ঘর-বন্দী সাধারণ মানুষের একদিকে  যে চরম দুর্দশা ও ব্যাপক করোনায় আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন তাই লক্ডাউন জনগণকে তিলমাত্র আশার আলো দেখাতে সক্ষম হয়নি! লকডাউনেই রোগের আক্রমণ বাড়ছে এদিকে বাজারহাট, যাতায়াত সবকিছু বন্ধ থাকায় দৈনিক দিন আনা দিন খাওয়াদের জীবন হয়ে দাঁড়িয়েছে অভিশপ্ত কয়েক কোটি মানুষ কাজ হারিয়েছেন জিনিসপত্রের আমদানি তো প্রায় বন্ধ, তাই বাজারে  ও দোকানে  নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের আকাল এটা কেমন ধরনের জনসেবা রেল যোগাযোগ, বাস যোগাযোগ একেবারে বন্ধ হওয়াতে মনে হয় দীর্ঘ সাত মাসে আমরা  যেন কয়েক দশক পিছনে পড়ে আছি! করোনায় কোন ওষুধপত্র নেই! শুধু বত্তৃণতা, আর উপদেশ ঘরে ঘরে থাকুন শান্তিতে থাকুন  এটা কেমন ধরনের কথা মানুষের কাজ নেই, পেটে ভাত নেই, ডাক্তারখানায় ডাক্তার বসে না, ওষুধপত্রের দামও  আকাশছোঁয়া, সাধারণের হাতে পয়সা নেই! ব্যাঙ্কের অবস্থা শোচনীয়! এ এক অন্ধকারাচ্ছন্ন যুগ বলেই মনে হয়! একদিকে হতভাগ্য মানুষের বাঁচার লড়াই, অন্যদিকে শাসকদেরও এক অসহায় অবস্থা! তবে  আশার কথা সাধারণ মানুষকে বাঁচাতে কিছু সহৃদয় মানুষ ও সংঘটন প্রাণের ঝঁুকি নিয়ে সেবা করছেন ছোট বড় কারবারীরা কিন্তু যেন নির্মমভাবে সাধারণকে শোষণ করে যাচ্ছে মাসে মাসে লাফিয়ে লাফিয়ে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের বাড়িয়ে চলেছেন! কারবারীদের নিয়মনীতি মানার কোন বালাই নেই, সততার আশা না করাই ভাল কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো শাসনক্ষমতা ক্ষমতা কায়েম করতে বোটের লড়াইয়ে এইচরম  দুর্দিনে মরিয়া তাঁরা নাকি দেশ সেবক! এই প্রতিবেদনটি লেখার সময় পর্যন্ত সারা ভারতে করোনায় আক্রান্ত ৫০,১৮,০৩৪ জন, মৃত ৮০,৭৭৬ জন আর পশ্চিমবঙ্গে ২,০৯,১৪৬ জন আক্রান্ত, মৃত ৪০৬২ জন মোট করোনা সক্রিয় ২৩,৯৪২ জন 

লক্ষ্য করলে দেখা যায় লক্ডাউনে আক্রান্তদের সংখ্যা প্রায় বেশী হয়

কারণ একটা ঘরে বন্দী যাঁরা থাকেন তাঁদের সংখ্যার অনুপাতে ঘর থাকার তেমন কিছুই নেই, তবু আবদ্ধ থাকতে হয় বাঁচার আয়োজনটাও  নগন্য তবু আটকে থাকতে বাধ্য হতে হয় প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী শ্রী চিদম্বরম বলেছেন লকডাউন স্ট্রাটেজি থেকে ভারত লাভবান হয়নি

আজ পৃথিবী করোনায় আক্রান্ত কিন্তু প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তান ও চীন  করোনায় আক্রান্ত  হয়েও ভারতের উপর সীমান্তে হামলা চালাচ্ছে এটা যে কতো বড়ো নৃশংসতার পরিমাপ করা যায় না

করোনাকে রুখতে বর্তমানে সীমান্তে শান্তি রক্ষাটা জরুরী চীন-এর ফাইভ্ ফিংগার পলিসি অর্থাৎ ভারতের পাঁচটি ক্ষুদ্র অঞ্চল নেফা (অরুণাচল) সিকিম, ভুটান, লাদাখ ও নেপাল এর উপর চীনের লোলুপ দৃষ্টি সেই মাও সে তুং-এর সময় থেকেই কারণ এইগুলি কায়েম করে চীন ভারতের উপর ঝাঁপিয়ে পড়বে মুখে এক কথা আর কাজে অন্য ব্যবহার সংবাদে প্রকাশ অরুণাচলে চীনা সেনা পাঁচ ভারতীয়কে অপহরণ করেছে এই সংবাদ অরুণাচলের রাজনৈতিক দলের, তাঁদের নামও প্রকাশ করা হয়েছে এদিকে ভারতীয় সেনাগণ তিন চীনা পর্যটককে ১৫,৭০০ফুট উচ্চতায় হিমবাহে আটকে পড়া অবস্থায় উদ্ধার করে, তাঁদের পোষাক, খাদ্য  ও চিকিৎসা করিয়ে তাঁদের গন্তব্যস্থানে পৌঁছে দেবার ব্যবস্থা করে মানবিকতার  পরিচয় দিয়েছেন

তাই সমবেতভাবে পৃথিবীর সকল দেশকে করোনা মুক্ত করতে যেমন এক হয়ে কাজ করা প্রয়োজন ঠিক তেমনই বাঁচ আর বাঁচতে দাও এই নীতিও সবার গ্রহণ করা আশু প্রয়োজন বর্তমান বিশ্ব চরম আর্থিক সংকটে পড়েছে তাই রাষ্ট্রগুলিকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে আর সরকারকে হতে হবে মানবিক মূল্যবোধের ধারক ও বাহক

বর্তমান আধুনিক যুগে যেখানে পৃথিবীতে ইউএনও বিদ্যমান, সেখানে কোন রাষ্ট্রেরই, পর রাষ্ট্র গ্রাস করার কুৎসিত মানসিকতা থাকাটা অপরাধ প্রত্যেক রাষ্ট্র নিজ নিজ রাষ্ট্রের সার্বিক উন্নয়ন করবে ও অন্যকে উন্নয়নে সাহায্যে করবে কারণ বাঁচ আর অপরকে বাঁচতে দাও প্রাউট দর্শন প্রত্যেক মানুষকে নীতিবাদী ও নব্যমানবতাবাদী হওয়ারই নির্দ্দেশ দিয়ে থাকে কারণ মানুষ শুধু মানুষের জন্যে নয়, মানুষ, পশু-পাখী তরুলতা সবার কথাই মানুষকে  ভাবতে হবে, সবাইকে নিয়ে বাঁচতে হবে এটাই নব্যমানবতাবাদের কথা

তাই পৃথিবীর রাষ্ট্রগুলিকে অবশ্যই পররাষ্ট্র গ্রাসের মানসিকতা পরিত্যাগ করে নব্যমানবতাবাদের আদর্শে  প্রতিষ্ঠিত হয়ে বিশ্বরাষ্ট্রের সার্থক সদস্য হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতেই হবে পরোক্ষভাবে করোনা এই শিক্ষাটাই কি দিতে চাইছে না---হিংসাশ্রয়ী লোভী পররাষ্ট্র গ্রাসী রাষ্ট্রগুলোকে তাই নব্যমানবতাবাদের  আদর্শে  নোতুন সমাজ যারা গড়তে চায় তাদের মহান প্রাউট দর্শনের কল্যাণমুখী আদর্শকেই স্বীকার করতে হবে