আজকের প্রবন্ধটির আলোচ্য বিষয় হ’ল---প্রাকৃতিক বিপর্যয় ‘খরা’ সৃষ্টিতে মাইক্রোবাইটামের প্রভাব৷ শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকারের অভিমতানুসারে খরা সৃষ্টির অন্যতম কারণ হ’ল মাইক্রোবাইটাম৷ কিন্তু ‘খরা’ কাকে বলে? ‘খরা’ Drought) হ’ল একটি প্রাকৃতিক বিপর্যয়৷ দীর্ঘদিন ধরে বৃষ্টিপাত না হলে যে প্রাকৃতিক পরিবেশ সৃষ্টি হয় তাকে খরা বলে৷ এখন খরা কেন হয় ও কি কি কারণে ঘটে? এ পর্যন্ত বিদ্যৎজনের মত হ’ল--- প্রথমতঃ ব্যাপকভাবে বনজ সম্পদ অর্থাৎ গাছপালাকে ধবংস করার জন্য খরার সৃষ্টি হয়৷ তার কারণ গাছপালা তার শিকড় দিয়ে মাটি হ’তে জল শোষণ করে, আর সেই জলই মাটিকে সরস রাখতে সাহায্য করে কিন্তু ব্যাপক হারে গাছপালাকে নিধন করার জন্য মাটিকে সরস রাখতে পারে না৷ ফলে খরার সৃষ্টি হয়৷
সুতরাং বনোচ্ছেদ বন্ধ করলে হয়ত খানিকটা খরার হাত থেকে রক্ষা পেতে পারে৷
এরপর দ্বিতীয় কারণ হ’ল--- সমুদ্র ও মহা সাগরের নিম্নচাপ সৃষ্টি হওয়ার প্রাকৃতিক নিয়ম৷ এই দ্বিতীয় প্রাকৃতিক নিয়মকে নিয়ন্ত্রণে আনা মানুষের পক্ষে খুব সহজ সাধ্য কাজ নয়, তবে বলা যায়, ভবিষ্যতে যদি কোন দিন আবহাওয়া বিজ্ঞান ও সামুদ্রিক বিজ্ঞানের Meterological and marine science) উন্নতি করতে পারে সে দিন হয়ত এই দ্বিতীয় কারণকে প্রভাবিত করতে পারবে বা এর থেকে নিস্তার পেতে পারে৷ কিন্তু শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার খরা সৃষ্টির জন্য সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ কারণ হিসাবে বলেছেন---‘‘সূর্য সহ অন্যান্য জ্যোতিষ্করা যেমন ---ধূমকেতু, নেবুলা বা গ্যালাক্সি Galaxy)-এর কৌনিক গতির Angular movement) হঠাৎ পরিবর্তন৷’’ এটা হ’ল খরার অন্যতম তৃতীয় কারণ৷ আর এই তৃতীয় কারণ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য শ্রী সরকার বলেছেন---‘‘এই তৃতীয় কারণকে একমাত্র নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন পরম চৈতন্য সত্তা৷ অবশ্য মানুষ যদি পজিটিভ মাইক্রোবাইটার পথ নেয়, আর পরম চৈতন্যসত্তার কৃপা Grace of Supreme Consciousness) কৃপা পায়, তা হ’লে মানুষও এই তৃতীয় কারণকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে৷’’ কিন্তু এই গ্রহ, তারা প্রভৃতি জ্যোতিষ্কদের কৌনিক গতির হঠাৎ পরিবর্তনের ফলে কিভাবে খরা ঘটে থাকে? এর উত্তরে মাইক্রোবাইটাম উদ্ভাবক শ্রী সরকারের অভিমত হ’ল---‘‘কিছু ধূমকেতু আছে যার গতিপথ আগে থেকে স্থিরিকৃত হ’য়ে থাকে৷ আর জ্যোতির্বিদরা তাদের পৃথিবীর কক্ষপথে আগমন ও তজ্জনিত সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে জানতে পারেন৷ কিন্তু কিছু কিছু ধূমকেতু আছে যারা আগাম কোন সতর্ক বার্র্ত ছাড়াই হঠাৎ এসে উপস্থিত হয়৷ যখন এইরকম কোন শক্তিশালী জ্যোতিষ্কের আগমন হয় বা তাদের কক্ষপথের যদি কোন পরিবর্ত্তন ঘটে তাহলে তাদের মহাকর্ষীয় টানে ঋতুচক্র বা সৃষ্টিধারার স্বাভাবিক ক্রিয়াকলাপে বাধা সৃষ্টি হতে পারে৷ যেমন কোন শক্তিশালী ধূমকেতু বা উল্কার প্রবল মাধ্যাকর্ষন শক্তির প্রভাবে মেঘ তৈরী হওয়া বন্ধ হয়ে যেতে পারে৷ সংস্কৃতে এই অবস্থাকে বলে---বক্রীদশা৷ বিশাল সংখ্যায় পজিটিভ বা নেগেটিভ মাইক্রোবাইটামের একত্র সমাবেশের ফলে উল্কা, ধূমকেতু বা উপগ্রহের মধ্যে এক ধরণের বিচ্যুতি আসতে পারে৷ বিশাল মহাশূন্যে সবকিছুর গতি প্রকৃতি নির্ভর করে পজিটিভ বা নেগেটিভ মাইক্রোবাইটার গতি প্রকৃতির ওপর৷’’
গ্রহ-তারা-জ্যোতিষ্কদের কৌনিক গতির হঠাৎ পরিবর্তনের ফলে যে শুধু প্রাকৃতিক বিপর্জয় ডেকে আনে তা না, জ্যোতিষ্কের কৌনিক গতি মানুষের মনকেও প্রভাবিত করে৷ এই কৌনিক গতির পরিবর্তনের দরুন মানুষের শরীর -মানসিক সংরচনার পরিবেশগত ভারসাম্য ecological balance) নষ্ট হতে পারে৷
যেমন---যদি কেউ স্নিগ্দ-শান্ত পূর্ণিমার রাতে মৃদুমন্দ ঠাণ্ডা বাতাসে বসে শারীরিক তৃপ্তি উপভোগ করছে৷ ধরা যাক, অনেকক্ষণ ধরে এই মনোরম মিষ্টি ব্যাথাহীন অনুভূতি উপভোগ করে চলেছে৷ এইভাবে মনোরম অনুভূতি ভোগ করতে করতে যদি স্নায়ুকোষগুলি নির্জীব হ’য়ে যায়, আর সেই সঙ্গে চিন্তাশক্তিও বিকল হ’য়ে গেল৷ অর্থাৎ এটা এক ধরণের মানসিক ব্যাধিতে পরিণত হ’ল৷ তা হ’লে দেখা যাচ্ছে --- পরিবেশগত ভারসাম্য হারানোর ফলে এরূপ নানা ধরণের মানসিক ব্যাধি দেখা দিতে পারে৷
অতএব দেখা যাচ্ছে যে, কোন জ্যোতিষ্কের কৌনিক স্থানচ্যুতি ঘটলে যেমন মানুষের মনকে প্রভাবিত করে তেমনি বহির্জাগতিক পরিবেশকেও প্রভাবিত করবে৷ তাই আমাদের অন্তর্জগৎ ও বহির্জাগতিক সমতা রক্ষা ক’রে চলতে হবে৷ শ্রী.পি.আর সরকার বলেছেন---‘‘এটাই হ’ল পরিবেশগত ভারসাম্য৷’’ This is ecological balance)
- Log in to post comments