সর্দিগর্মীর ঔষধ (হ’ল) চূর্ণ–নিম্বু (চূর্ণ–নেৰু)৷ আগে বলা হয়েছে কোন একটা পাত্রে খানিকটা চূণ তার দ্বিগুণ জলে ভালভাবে গুলে নিতে হয়৷ তারপর তাকে থিতিয়ে যেতে দিতে হয় অর্থাৎ তাকে থিতু (‘থিতু’ শব্দ ‘স্থিতু’ শব্দ থেকে আসছে) অবস্থায় খানিকক্ষণ থাকতে দিতে হয়৷ চূণের জল থিতিয়ে গেলে চামচে করে ওপরের চূর্ণ–রহিত জল আস্তে আস্তে তুলে একটা পাত্রে ঢ়েলে নিতে হয়৷ এই চূণের জলে পাতিনেবুর ট্যাবা নেৰুর রস মিশিয়ে খুব অল্প মিছরি (নামে মাত্র) গুঁড়ো দিয়ে খেলে সর্দি–গর্মী ঙ্মগরমকালে ‘লু’ লেগে যাওয়া বা হঠাৎ হঠাৎ ঠাণ্ডা–গরমে জ্বর হয়ে গায়ের তাপমাত্রা এক লাফে চরমে উঠে যাওয়াৰ প্রশমিত হয়৷ তাছাড়া কাঁচা ৰেলের শরৰৎ, আমপোড়ার শরৰৎ সর্দি–গর্মীতে তাড়াতাড়ি বেশ ফল দেয়৷ কচি আঁৰের ঝোল শরীরের পক্ষে স্নিগ্ধকারক৷ তবে ওই ঝোল পাতলা হওয়া উচিত৷ দগ্ধ গাঙ্গেষ্ঠি অর্থাৎ কচি আম পুড়িয়ে তার শরৰৎ সর্দি–গর্মীর মহৌষধ৷ এ ছাড়া ঘর থেকে বেরোবার সময় আমানি খেয়ে বেরোতে হয়৷ আর সর্দিগর্মী হলে আমানি খেলে তাড়াতাড়ি ফল দিয়ে দেয়৷ সর্দিগর্মীতে বাইরে থেকে বরফ প্রয়োগ করে লাভ হয় না –বরং অবস্থা খারাপ হয়ে যেতে পারে৷
বাসক ও রাম বাসক ঃ বাসক ও রাম বাসক গাছ পূর্ব ভারতে ভালই জন্মায়৷ রাম বাসক উচ্চতায় তেমন ৰড় হয় না৷ অনেক সময় গাছ একটু ৰড় হলে শুয়ে পড়ে৷ রাম বাসকের সঙ্গে শেয়ালের ন্যাজের কেমন যেন একটা সুদূর সম্পর্ক রয়ে গেছে৷ তাই রাম বাসককে ৰলা হয় ক্রোষ্টুপুচ্ছী, ক্রোষ্টুপুচ্ছিকা, ক্রোষ্টুকপুচ্ছী, ক্রোষ্টুক–পুচ্ছিকা৷
বাসক গাছও উচ্চতায় তেমন ৰড় হয় না, কিন্তু ডালপালা শক্ত থাকে৷ এর পাতা ঘন সবুজ ও লম্বা৷ এর সবচেয়ে বেশী গুণ পাতায়৷ বাসক পাতার বা বাসক রসের গুণ কফ মুক্তিতে ও জ্বর প্রতিরোধে, সর্দির ৰাড়াৰাড়িতে ও পালাজ্বরের আক্রমণে বাসকের জুড়ি মেলা ভার৷
‘‘বাসি মুখে বাসকের রস খেও মধু সাথে
বলতে পারি পালাজ্বরটি পালিয়ে যাবে এতে৷৷’’
বাসক পাতা ছেঁচে নিয়ে পাতার রস বের করে ব্যবহার করা ছাড়াও আর এক রকম ভাবে এর ব্যবহার হয়৷ বিশেষ করে সর্দির ৰাড়াৰাড়িতে ও কফমুক্তিতে–এক মুঠো বাসক পাতা দ্বিগুণ পরিমাণ জলে সিদ্ধ করে যে ক্কাথ তৈরী হয়, তা মধুসহ দু’চামচ দিনে কয়েকবার খেতে হয়৷
রামবাসকের মধ্যেও বাসক পাতার গুণগুলি কিছুটা রয়েছে৷ তাছাড়া অল্প বয়সে শুক্র সংক্রান্ত রোগে রামবাসকের রস অল্প পরিমাণে তালমিছরির সঙ্গে ভক্ষণ করলে দ্রুত রোগ নিরাময় হয়ে যায়৷ ব্যবহার করতে হয় প্রত্যুষে খালি পেটে৷ রামবাসকের পাতার রস না পাওয়া গেলে তুলসীর মূলে একাজ হয়ে থাকে৷ তবে রামবাসকের চেয়ে সে কম শক্তিশালী৷ এ ধরনের অসুখে ঙ্ম শুক্র সংক্রান্ত অসুখেৰ বাসক পাতাতেও কাজ দেয় না৷ আয়ুর্বেদের অনেকগুলি ঔষধই রামবাসক থেকে তৈরী হয়৷ এক বল্কা ছাগ দুগ্ধে, বাসক পাতার রস ও হরিতকী চূর্ণ মিলিয়ে–সব মিলিয়ে আধ পোয়া হবে–সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের পরে খেলে ব্রঙ্কাইটিস রোগে ভাল ফল দেয় ৷ (‘দ্রব্যগুণে রোগারোগ্য’)