আজ ভারতবর্ষে বলা যায় গণতন্ত্রের নামে দলতন্ত্রের শাসন চলছে৷ ভারত একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থা৷ কেন্দ্রীয় সরকার ও বিভিন্ন রাজ্যে যেগুলি সংবিধানে রাষ্ট্র নামে উল্লিখিত সেখানে পৃথক সরকার শাসন চালায়৷ তবে কেন্দ্রের ও রাজ্যের অধিকার দায়িত্ব সংবিধানে নির্দিষ্ট করে দেওয়া আছে৷ এই সংবিধান ১৯৫০ সালের ২৬শে জানুয়ারী লোকসভায় গৃহীত হয় সেই সময়ের ২৪৮ জন সদস্যার সমর্থনে যাঁরা সেই সময় দেশের জ্ঞানীগুণী ছিলেন৷
ভারত এশিয়ার একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত হয়৷ প্রথমে ছিল গণতান্ত্রিক প্রজাতান্ত্রিক সাধারণতান্ত্রিক রাষ্ট্র৷ পরবর্তীতে সমাজতান্ত্রিক শব্দটি যুক্ত হয়৷ এখানে শাসন ব্যবস্থাকে তিনভাগে ভাগ করা হয়৷ কেন্দ্রের শাসন রাজ্যের শাসন ও যৌথ শাসন ব্যবস্থা৷ জনগণের বোট দানের অধিকার প্রথমে ছিল ২১ বছর বয়স, পরবর্তীতে কমিয়ে ১৮ করা হয়৷
কেন্দ্রের শাসন ব্যবস্থা দুই কক্ষ বিশিষ্ট লোকসভা ও রাজ্যসভা, লোকসভার সদস্য প্রত্যক্ষভাবে জনগণের বোটে নির্বাচিত হয়, রাজ্যসভার সদস্য প্রতিটি রাজ্যের বিধানসভার সদস্যরা নির্বাচিত করেন৷ রাজ্যগুলি প্রধানত এককক্ষ বিশিষ্ট৷
এখন একটি প্রশ্ণ উঠেছে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় যেটি আগে কখনও ওঠেনি৷ দেশের বর্তমান উপরাষ্ট্রপতি জগদীশ ধনখড়, যিনি একসময় পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল ছিলেন, তিনি পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বক্তব্য রাখতে চান৷ পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভার অধ্যক্ষকে পত্র দ্বারা একথা তিনি জানান৷
রাজ্যের কাছে ও রাজ্য সরকারের কাছে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷ রাজ্য সরকারের কাছে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷ রাজ্য সরকার জনগণের দ্বারা নির্বাচিত৷ রাজ্যপাল কেন্দ্রের মনোনীত প্রতিনিধি রাজ্য প্রশাসনের প্রধান৷ ধনখড় রাজ্যপাল থাকা কালীন রাজ্য সরকারের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কখনই মধুর ছিল না৷ তিনিও প্রতি পদক্ষেপে সরকারের বিরোধিতা করে গেছেন৷
তিনি বাজেট অধিবেশন চলাকালীন বিধানসভায় বক্তব্য রাখতে চান৷ রাজ্যসভায় তাঁর আচরণ নিয়ে বার বার প্রশ্ণ উঠেছে৷ রাষ্ট্রপতি উপরাষ্ট্র পতি নির্বাচিত হন আইনসভার সদস্যদের বোটে৷ ভারতের সংবিধান জটিল ও দূঢ়৷ উপরাষ্ট্রপতি জগদীশ ধনখড় একজন মাননীয় ব্যষ্টি ভারত যুক্তরাষ্ট্রের৷ তাঁর ইচ্ছাপূরণ করতে রাজ্য সরকার রাজী এমনটাই সংবাদে প্রকাশ৷
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মত উভয় পক্ষকেই অতীত ভুলে গণতন্ত্রের মর্যাদা রাখতে হবে৷ ধনখড় একসময় বিজেপির নেতা ছিলেন৷ রাজ্যের রাজ্যপাল থাকাকালীন তাঁর আচরণেও অনেক সময় তা প্রকাশ পেয়েছে৷ আর এক বছরের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ বিধান সভার বোট৷ তাই অকস্মাৎ প্রাক্তন রাজ্যপালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বক্তব্য রাখতে চাওয়ায় নানা মহলে প্রশ্ণ উঠবে এটা স্বাভাবিক৷ তবে মাননীয় উপরাষ্ট্রপতি দলীয় মানসিকতাকে দূরে সরিয়ে সর্বজনের কল্যাণে ও বিধানসভার সকল সদস্যদের সামনে অনুকরণ যোগ্য দৃষ্টান্ত রেখে বক্তব্য রাখবেন এটা আশা করা যায়৷ তাহলে ভারতীয় গণতন্ত্রের সামনে এক উজজ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে৷
- Log in to post comments