কলাগাছ মুখ্যতঃ মুথা থেকেই বেরোয় ও প্রারম্ভিক অবস্থায় তাকে ৰাংলায় ‘তেউড়’ ৰলে৷ বীচে কলার বীজ থেকেও কলা হয়৷ তবে সে ধরণের গাছ কলা দিতে অত্যন্ত বিলম্ব করে৷ ভারতের প্রাচীন বিশ্বাস অনুযায়ী অতি প্রাচীনকানে বেতের ৰন দাবানলে দগ্দ হয়ে যাবার পর সেই দগ্দ বেতের মূল থেকে বর্ষার জল পেয়ে প্রথম কলাগাছের জন্ম হয়েছিল৷ খাদ্য হিসাৰে কলা ৰেশ পুষ্টিকর৷ তবে যেসব কলায় অম্লভাব ৰেশী যেমন চাঁপাকলা, সেগুলি সন্ধ্যার পরে খেলে অম্লদোষ হতে পারে৷ দ্রাবিড় ও আরো কয়েকটি অনার্য সমাজে কদলী বৃক্ষ শুভের প্রতীক৷ তাই মাঙ্গলিকে কদলী বৃক্ষের ব্যবহার রয়েছে৷ ৰাংলার মানুষের ওপর দ্রাবিড় ও অন্যান্য অনার্যদের প্রভাব যথেষ্ট পরিমাণে থাকায় ৰাঙালীর বিবাহ মণ্ডপে কলাগাছ রাখা হয়৷ কিন্তু উত্তর ভারতে এই প্রয়োজনে কলার ব্যবহার হয় না৷ থি-য়ে ভাজা পাকা কলা রক্তামাশয়ের ওষুধ৷ দুগ্দ ক্ষীরার রস সহ পাকা কলা সব রকম আমাশয়ের ওষুধ বিশেষ প্রকারে ব্যবহৃত পাকা কলা পালাজ্বরের ওষুধ৷ প্রাচীনকাল থেকেই ৰাঙলায় কলা একটি কৃষিপণ্য রূপে গণ্য হয়ে আসছে৷ ক্ষণার বচনে আছে---
‘‘৩৬০ ঝাড় কলা রুয়ে থাকগে চাষী ঘরে শুয়ে৷
রুবি বটে খাৰিনে কলাতলায় যাৰিনে৷৷’’
‘‘রুয়ে কলা কেটোনা পাত তাতেই কাপড় তাতেই ভাত৷৷’’
ভরা বর্ষায় কলা রোপণ না করাই বিধেয় কারণ তাতে মুথা পচে যাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষণার বচনে আছে---
‘‘ভাদ্র মাসে রুয়ে কলা সর্ৰাংশে ম’লো রাবণ শালা৷৷’’
কলাগাছের জন্যে ঘন ঘন মাটি পরিবর্তনের দরকার হয়৷ এক জমির তেউড় অন্ততঃ পাঁচ ক্রোশ দূরবর্তী স্থানে রোপণ করতে হয়৷ নতুবা কলার ফলন কমে যায়, ফল ছোট হয়ে যায় ও কীটের উপদ্রব ৰাড়ার সম্ভাবনা থেকে যায়৷ ৰাঙলায় কলার চাষ সবচেয়ে বেশী হয় হুগলী জেলায়৷ এছাড়া হাওড়া, মেদিনীপুর,নদীয়া,মুর্শিদাৰাদ,২৪পরগণা,জলপাইগুড়ি ও ত্রিপুরায় প্রচুর পরিমাণে কলা জন্মায়৷ সমগ্র অসম উপত্যকা ও কেরল কলা উৎপাদনে প্রখ্যাত৷ তামিলনাড়ুর উত্তরাংশে, মহারাষ্ট্র ও মধ্যপ্রদেশের অংশবিশেষে ও বিহারের বৈশালী জেলায় কলার উৎপাদন যথেষ্ট৷ দক্ষিণ ভারতের মানুষ ও ৰাঙলার মানুষ কলা পাতায় খেতে খুবই ভালবাসে প্রাচীন ৰাঙলার মানুষ কলা পাতাকেই একটি উন্নতমানের ভোজন পাত্র বলে মনে করতেন---
‘‘ওগ্গর ভত্তা রম্ভা পত্তা
গাইক্ক ঘিত্তা দুগ্দ সজত্তা’’............. (শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকারের লঘুনিরক্ত থেকে সংগৃহীত)