January 2025

উত্তর ২৪পরগণায় অখণ্ড কীর্ত্তন

৫ই জানুয়ারী বনগাঁ মহকুমার রামচন্দ্রপুর গ্রামে বিশিষ্ট আনন্দমার্গী শ্রীতুষার মণ্ডলের বাসগৃহে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তিনঘন্টা অখণ্ড ‘ৰাৰা নাম্‌ কেবলম্‌’ কীর্ত্তন অনুষ্ঠিত হয়৷ এই উপলক্ষ্যে বনগাঁ মহকুমার বিভিন্ন গ্রামের মার্গী ভাইবোনেরা তুষার মণ্ডলের বাসগৃহে সমবেত হয়ে কীর্ত্তনে অংশগ্রহণ করেন৷ স্থানীয় গ্রামবাসীবৃন্দও স্বতঃস্ফূর্তভাবে কীর্ত্তনে অংশগ্রহণ করেন৷ উপস্থিত সকলে তিনঘন্টা কীর্ত্তনের অনির্বচনীয় ভাবতরঙ্গে ও সুরমুর্চ্ছনায় স্বর্গীয় আনন্দে অতিবাহিত করে৷ কীর্ত্তন মিলিত ঈশ্বর প্রণিধান, স্বাধ্যায়ের পর কীর্ত্তন মহিমা ও ‘ৰাৰা নাম কেবলম্‌’ কীর্ত্তন প্রবর্তনের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয় তার কথা স

মহাজাগতিক ৰন্ধন ও মুক্তি

চিতিশক্তির মহাজাগতিক ৰন্ধনে সবাই ৰদ্ধ৷ যতক্ষণ সৃষ্টি আছে, পরমপুরষেরও প্রতিটি বস্তুর সঙ্গে ওতযোগ ও প্রোতযোগের ৰন্ধন রয়েছে৷ কেউ যদি বলে যে অন্য কারোর তার প্রয়োজন নেই, আমি একলাই থাকব, কারোর সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই– এটা বলা তার পক্ষে অনুচিত কাজ হবে৷ পৃথিবীতে কেউ একলা থাকতে পারে না৷ দেখ, তোমার জলের প্রয়োজন, তার জন্যে তুমি কি কোদাল নিয়ে মাটি খুঁড়ে একা একাই কুঁয়ো বানিয়ে দেবে তোমার জুতোর প্রয়োজন এরজন্যে নিজেই জুতো তৈরী করতে বসে যাবে বস্ত্রের প্রয়োজন, তাই নিজেই বস্ত্র তৈরীতে লেগে যাবে – না, এটা সম্ভব নয়৷ সকলেই সকলের ওপর নির্ভরশীল৷

প্রাউট–প্রবক্তার ভাষায় সর্বাধিক শিল্প–বিকাশ

প্রাউট অর্থনীতির বিকেন্দ্রীকরণে বিশ্বাসী৷ তাই একস্থানের উন্নতি না করে’ সর্বত্র যাতে সমানভাবে প্রগতি হতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রেখে স্থানীয় সম্পদ ও শক্তি সামর্থ্যকে প্রথমে নিয়োগ করার পরিকল্পনা নিতে হবে৷ স্থানীয় এলাকায় কাঁচামালের সহজপ্রাপ্যতা, ও ওই এলাকার মানুষদের ভোগ্যপণ্যের প্রয়োজন অনুসারে সর্বাধিক শিল্প বিকাশ প্রয়োজন৷ এই নীতি বহিরাগতদের হাত থেকে অর্থনৈতিক ক্ষমতা ছিনিয়ে নিয়ে স্থানীয় জনসাধারণের হাতে তুলে দেবে৷ এইভাবে ওই সামাজিক-অর্থনৈতিক অঞ্চলের অর্থনৈতিক সম্ভাবনার প্রভূত বিকাশ সম্ভব হবে৷ প্রাউটের অর্থনীতি অনুসারে কৃষির মত অধিকাংশ শিল্পই উৎপাদক–সমবায় ও উপভোক্তা–সমবায়ের দ্বারা পরিচালিত হওয়া উচিত

কৃশতা

কারণ ঃ শারীরিক কৃশতার কারণ নানাবিধ ঃ

১) দুর্বল বা অসুবস্থ পুং বা স্ত্রীবীজ থেকে যে সকল শিশুর দেহ সৃষ্টি হয়েছে, তারা স্বভাবতই শক্তিহীন ও কৃশকায় হয়ে থাকে৷

২) শিশু যদি যথেষ্ট পরিমাণে মাতৃস্তন্য না পায় সেক্ষেত্রেও সে সাধারণতঃ কৃশকায় হয়ে থাকে৷

৩) দারিদ্র্য নিবন্ধন যে সকল পিতা–মাতা সন্তান–সন্ততিদের জন্যে যথেষ্ট পরিমাণে দুগ্ধের ব্যবস্থা করতে পারেন না ও অল্প বয়স থেকে তদের জন্যে ভাত, ডাল বা সাবু–বার্লি দেওয়া হয়, তাদের যকৃৎ ও পরিপাক যন্ত্রগুলি দুর্বল হয়ে পড়ে ও অধিকাংশ ক্ষেত্রে তারা কৃশকায় হয়ে পড়ে৷

নারকোল

নারকোলের সংস্কৃত ভাষায় প্রচলিত নাম তিনটি (১) নারিকেল (এটি অন্তঃস্থ ‘ল’), (২) নালিকের (এটিও অন্তঃস্থ ‘ল’) ও (৩) কের৷ নারকোল পৃথিবীর বিষুবরেখায়, কর্কটক্রান্তীয় ও মকরক্রান্তীয় এলাকায় জন্মায়৷ নারকোলের প্রজাতি আছে অনেক রকমের৷ তবে বয়সঃসীমা ও উচ্চতার নারকোল যা আন্দাজ সাত বছর বয়সে ফল দেয়, দেয়ও মাঝারি পরিমাণে৷ ৰাঁচে আন্দাজ ৪০ বছর৷ গরিষ্ঠ প্রজাতির নারকোল ফল দেয় আন্দাজ ন’বছর বয়সে বাঁচে আন্দাজ ৭৫ বছর৷ ফল দেয় যথেষ্ট পরিমাণে৷ আজকালকার অধিক ফলনশীল নারকোল তিন বৎসর বয়সে ফলন দিতে শুরু করে৷ নারকোল উৎপাদনে পৃথিবীর প্রধান পাঁচটি দেশ হচ্ছে ইন্দোনেশিয়া,ফিলিপিন্স্‌,মালয়েশিয়া,শ্রীলঙ্কা ও ভারত৷ ভারতের নারকোল গাছ ও ফ

কুবের চাকরী পেলেন

সংস্কৃতে ‘কোষাধ্যক্ষ’ শব্দের একটি অর্থ হল কুবের৷ পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী দেবতাদের কাছে ছিল প্রচুর ধনরত্ন৷ এই ধনরত্ন তাঁরা ৰেশীর ভাগই সংগ্রহ করেছিলেন সমুদ্র মন্থনকালে সমুদ্রের তলদেশ থেকে৷ এছাড়া সংগ্রহ করেছিলেন সুমেরুশিখর (উত্তর মেরু) থেকে মূল্যবান ধাতু ও কুমেরুশিখর (দক্ষিণ মেরু) থেকে মূল্যবান মণি–মাণিক্য প্রস্তরাদি৷ এই বিপুল ধনরত্নের রক্ষণাবেক্ষণ হয়ে দাঁড়াল একটি সমস্যা৷ দেবতারা ছিলেন দারুণ ভোগলিপ্সু ও তৎসহ ক্ষমতালোভী৷ দেবতাদের দ্বারা যথাযথভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব ছিল না৷ তবে কি ওই বিপুল পরিমাণ ধনরাশির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব অসুরের হাতে তুলে দেৰেন!

রাঢ় পরিচয়

উত্তুঙ্গ তরঙ্গমালায় বিক্ষুব্ধ এক মহাসমুদ্র৷ যে সমুদ্রের নাম নেই, গোত্র–পরিচয় নেই৷ কে নাম দেবে, কে এর পরিচিতি অন্যকে শোণাবে কারণ মানুষ যে তখন পৃথিবীতে আসেনি৷ সে আজ থেকে তিরিশ কোটি বৎসর আগেকার কথা৷*ঙ্মনৃতাত্ত্বিক দিক থেকে প্যালিজোয়িক যুগের কার্বোনিফারসের সময়কাল (যখন গাছপালার উদ্ভব হ’ল) ২৭০–৩৫০ কোটি বছর আগে৷–সম্পাদক৷ৰ পার্বত্য ঊষর ভূমি সম্বন্ধে বলবার মত, নাম নেবার মত কোন বৃক্ষরাজিও তখন পৃথিবীতে আসেনি৷**ঙ্মৰীজযুক্ত গাছের প্রথম উদ্ভব মেসোজোয়িক যুগের ট্রাইয়াসিক কালের (২১০–২৫০ কোটি বছর আগে)৷–সম্পাদকৰ এই নাম–না–জানা গিরিভূমিকেই পরবর্তীকালে নাম দেওয়া হয়েছিল ‘রাঢ় দেশ’৷ ‘রাঢ়’ শব্দটি প্রাচীন অষ্ট্রিক ভ

সেয়ানে সেয়ানে

‘চাবি’ শব্দটি আমরা পোর্তুগীজদের কাছ থেকে পেয়েছি৷ এঁদের ভাষায় ‘ন্তুড়্ত্র’–এর উচ্চারণ কতকটা ‘শ’–এর মত৷ তাই ‘চাবি’–কে আমি স্পেন ও পোর্তুগাল দু’য়েতেই ‘শাবি’ উচ্চারণ করতে শুনেছি৷ আজ এই ‘চাবি’ শব্দটি বাঙলা তথা সমগ্র উত্তর ভারতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত৷ অথচ আজ থেকে ৪৫০ বছর আগেও শব্দটির সঙ্গে এদেশের কারো পরিচয় ছিল না৷ উত্তর–ভারতে ‘চাবি’–কে বলা হত ‘কুঞ্জী’ আর বাঙলায় বলা হত ‘কাঠি’৷ তালা–চাবিকে রাঢ়ে এখনও কেউ কেউ ‘কুলুপ–কাঠি’ বলে থাকেন৷ এমনকি যাঁরা ‘চাবি’ বলেন তাঁরাও কেউ কেউ ‘চাবিকাঠি’ বলে থাকেন৷ বলেন–সিন্দুকটি তোমার চাবিকাঠিটি আমার৷ ‘কুঞ্জী’ শব্দটি এককালে উর্দু ভাষায় ব্যাপকভাবে চলত৷ আজ তার প্রভাব কমে এসেছে

ধরা আর সরা

দেশজ শব্দে ‘ট’ যথাযথভাবেই বজায় থাকে৷ আর ‘ড’ বা ‘ড়’ মৌলিক শব্দ হিসেবেই থেকে যায়৷ যেমন, আজ ভুলোর সঙ্গে ভোঁদার আড়ি হয়ে গেল৷ ওরা বলছে, ওরা আর একসঙ্গে মার্ৰেল খেলবে না, একটা পেয়ারাও আর কামড়াকামড়ি করে খাবে না৷ গোপনে কান পেতে শোনাকেও আড়িপাতা বলে৷ এটিও বাংলা দেশজ শব্দ৷

 ঢেঁকি

‘ঢেঁকি’ মানে ভারী বস্তু৷ প্রাচীনকালে আর্যরা যখন ভারতে এসেছিল তারা তখন যব, রাই ও অন্যান্য শস্যের খোসা ছাড়ানোর জন্যে উদূখল্‌ (উখ্‌ড়ি) ব্যবহার করত৷ ভারতের সাবেকী ৰাসিন্দারা ব্যবহার করত ঢেঁকি৷ উখ্‌ড়ি চালাতে যে পরিমাণ শক্তির প্রয়োজন ঢেঁকিতে পাট দিতে গেলে তার চেয়ে অনেক কম শক্তির প্রয়োজন৷ তাই কালক্রমে, ঢেঁকি উদূখল্‌কে স্থানচূ্যত করলে৷ ঢেঁকির কোন সংস্কৃত প্রতিশব্দ নেই৷

ধানের তুষ ছাড়াবার অথবা ধান থেকে চিড়ে তৈরী করবার এক একটি দেশীয় যন্ত্রবিশেষ৷ ঢেঁকি একটি অনার্য উপকরণ৷