আগামী ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচন প্রসঙ্গে

লেখক
প্রভাত খাঁ

দেশে ২০২৪এর লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে৷ তাতে সব রাজনৈতিক দল যারা যা শক্তি তাই নিয়ে লড়ার জন্য প্রস্তুত৷ সবাই পরীক্ষায় বসে যে সব প্রার্থী তাদের আশা করে যেন তেন প্রকারে পাশ করতেই হবে৷ সেটা অন্যায় পথে হোক বা ন্যায় পথে হোক৷ এটা হলো চিরকালের একটা হওয়ার পদ্ধতি৷ তাই যারা বোটারতারা হলেন মূলতর ভাগ্যবিধাতা সেখানে কোন বাচ বিচার নেই৷ তারা সব বুঝে দেখে ও শুনে যাদের নাম ঠিক দেবেন তারাই জয়ী বলে ঘোষিত হবে৷ এব্যাপারে একটা কথা বার বার মনে আসছে তা হলো বোট দান কেন্দ্রে যারা বোট নিতে ও দিতে আসবে তারা ঠিকঠাক ব্যবস্থা যাতে বোটা দেবার বুথগুলিতে তাই বলতে বাধ্য হচ্ছি একটা কথা তো হলো বোটারদের একটা দায়িত্ব আছে সেটা সেই স্থানের চারপাশের যেন কোন অশান্তি না হয় সেটার দিকে স্থানীয় এলাকার বোটারদের সচেতন থাকতে হবে যাতে বোটারগণ নিশ্চিত বোট দান করতে পারেন৷ মাত্র কটা বোট কর্মীও সামান্য পুলিশের কাজ নয় সেই স্থানের শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষা করা৷ দুঃখের সঙ্গে বলতে বাধ্য হচ্ছি একটি কথা তা হলো নানা দলের যারা প্রার্থী তাদের কিন্তু প্রধান কাজ সকল বোটার যাতে শান্তিতে বোট দান করতে পারে সেটা দেখা৷ দেখা গেছে গণ্ডগোলটা মূলতঃ হয় রাজনৈতিক দলের সমর্থকদের দ্বারাই৷ কারচুপী বলতে যা বোঝায় সেটা কিছুটা হয় যারা বুথের মধ্যে থাকে সেই রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি ও যারা বোট নিচ্ছেন ও যে বাক্সে বোট পড়ছে তার প্রতি কঠোর নজর রাখা৷ বোটদান ও বোট পরিচালনায় নিরপেক্ষতা যাতে বজায় থাকে৷

আজ এতো বছর পরও যদি এমনটা হয় তা হলো দোষটা তো পড়ে পরোক্ষভাবে শাসকদলের উপর! সেটা কোন মতেই কাম্য নয়৷ তাই নির্বাচনটা যেন প্রহশন না হয়৷ এটা একেবারেই অপ্রিয় সত্য কথা যারা শাসনে থাকে তাদের স্বাভাবিকভাবে একটা সুবিধা থাকে তা হলো তারাই নির্বাচন পরিচালনার দায়ভার নেয়৷ আর দলতন্ত্র মানেই তো দলাদলি আর কামড়া কামড়ি! গণতন্ত্র তখনই সমর্থনযোগ্য হয় যখন দলহীন গণতন্ত্র হয়৷ আজ তো দেখা যাচ্ছে ভারতে গণপীড়নের গণতন্ত্র দল৷ গণতন্ত্র যেখানে দলতন্ত্রটাই প্রাধান্য পায় আর নামে গণতন্ত্র চলে দলতন্ত্র৷ গণতন্ত্র গড়াগড়ি খায়৷ তাছাড়া বিজয়ী প্রার্থীকে জয়লাভে পেতে হ. যে বোট পড়েছে সেই বোটের নূন্যতম ৫১শতাংশ৷ কিন্তু দেখা যায় ও দেশের বোটে একাধিক প্রার্থী থাকেন তাতে বোট কাটাকাটি হয় শেষে যে তাদের মধ্যে বেশী বোট পায় সেই জয়ী হয়৷ ভারতের মতো দেশে এই বোটাবুটিটাকে দেশের দলীয় নেতা ও নেত্রীগণের কাছে এটা হল একটা খেলা৷ এতটা বাড়াবাড়ি তাছাড়া বোটের আগে শাসক দলগুলির হয়ে যায় যাকে বলে প্রতিশ্রুতি দানে সেই দাতা শিশুপাল৷ তারা এইদোব সেই দোব তাদের দেবার আর সীমা পরিসীমা নেই! তাদের অহংকার এতো বেশী তারা পবিত্র সংবিধানকেই অগ্রাহ্য করে চলে কেবল শাসক হিসাবে গদীর মোহন্ত হতে! এদিকে সময় থেমে থাকে না৷ তাই দেশ নাকি স্বাধীন হয়েছে৷ দীর্ঘ ৭৭ বছর হয়ে গেল ২০২৪তে৷ স্বাধীন দেশের হাল দলীয় রাজনৈতিক দলগুলো যারা শাসনে বর্তমান আম জনতা যারা হত দরিদ্রতাদের আর্থিক সামাজিক অবস্থার কতটুকু হাল ফিরিয়েছে? দেশের কোটি কোটি মানুষ বেকার, চরম দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে কারণ৷ চরম বেকার সমস্যায় দিশেহারা৷ করের ধাক্কায় হতদরিদ্ররা রক্তশূন্য৷ ১শতাংশ ধবনিদের হাতে দেশের ৭০ শতাংশ সম্পদ৷ বাকী জনতা শোষিত ও বঞ্চিত হয়ে চলেছে৷ শাসকের মুখে শুধু মিথ্যা স্তোকবাক্য৷ আর নানা ধর্মমতের ভাষাভাষী মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে রাখতে চায়৷ ধর্ম নিরপেক্ষ ভারত যুক্তরাষ্ট্রের শাসকগণ দেখে শুনে বলতে বাধ্য হচ্ছি এরা দেশের সংবিধানকেই অগ্রাহ্য করছে৷ যে দলই হোক শাসনে যখন আসে তখন শাসকতো সকলেরই৷

কিন্তু বর্তমান হিন্দুত্ববাদী কেন্দ্র সরকার ঘোষনা করছে যে তারা ৩৭০ আসন এতে জয়ী হবে একা৷ আশা করতেই পারে! আর সব শাসকদল যে যেমন পারে বোট পেতে নানা কৌশল নিয়ে ব্যস্ত৷

এদিকে বিরোধী দলের মিলিত নেতা ও নেত্রীগণ আশা করছে তারা কেন্দ্রের গদী ওল্টাবে৷ তারাও আশায় ভর করে আছে, করতেই পারে৷

কিন্তু জয় পরাজয় নির্র্ধরণ করার ভাগ্যবিধাতা কারা ? তারা হলো সংখ্যায় বেশী হতদরিদ্র আমজনতা ভাগ্যবিধাতা৷ তারা বিচার করবে৷ তাদের দিকে দলীয় শাসকগণ কতটুকু সেবা দিয়েছে? সেটা বিচার করে দেখা হচ্ছে? অপ্রিয় সত্য কথা শাসক বিরোধী সব দলই মুখে যাই প্রতিশ্রুতি দিক, সকলেই কিন্তু নিজ নিজ দলের অস্তিত্ব রক্ষায় ব্যস্ত, আম জনতার স্বার্থ নিয়ে নয়৷ তাই বোট শেষে যেই ক্ষমতায় আসুক জনতার ভাগ্য পরিবর্তন হয় না৷

তবে নাগরিক হিসাবে সব দলের কাছে আবেদন একটাই দয়া করে সকলে নজর দিক যাতে করে অধিকাংশ বোটার যেন মতামতটা দিতে পারে বোট বাক্সে৷ কারণ এটাই তো বোট দাতাদের পবিত্র কর্ত্তব্য৷ তবেই বোঝা যাবে নির্বাচনটা সার্থক হলো৷ আমরা বিশ্বাস করি জয় পরাজয় ভাগ্যক্রমে ঘটে৷ আশা করলেই যে সফল হওয়া যায় তা কিন্তুনয়৷

এটা কিন্তু অতীব সত্য কোন দেবদেবী বোট দিতে আসবেন না৷ বোট দিতে আসবে সেই হতদরিদ্র চিরবঞ্চিত নর নারায়াণগণ যাদের দিকে কোন দলেরই তেমন নজরই নেই৷ দয়ার দান নয় নাগরিকদের আর্থিক দিক থেকে স্বনির্ভরশীল করে গড়ে তোলার দিকে সচেষ্ট হতেই হবে৷ তা না হলে ভস্মে ঘি ঢালাই হবে৷ সেই শোষণ বাড়বে বই কমবে না এটাই একেবারে অপ্রিয় সত্য! অধিকাংশ জনগণ চরম নিরাশ হয়ে পড়েছে৷ বোটটা জরুরী রাজনৈতিক দলগুলোর অস্তিত্ব রক্ষায় জনগণের নয়!