বৈষম্য-অসাম্য আর বৈচিত্র্য পার্থক্য এক ব্যাপার নয়। বৈচিত্র্য-পার্থক্য বলতে সত্তা থেকে সত্তার স্বরূপগত ভিন্নতা অর্থাৎ অস্তিত্বগত-গঠনগত-গুণগত ভিন্ন ভিন্ন স্বাতন্ত্র্য পরিচয়। আর বৈষম্য-অসাম্য বলতে ওই স্বাতন্ত্র্য পরিচয়কে প্রকৃতিদত্ত সমতা-সম্মানকে মান্যতা না দিয়ে বিরূপাত্মক,অবৈজ্ঞানিক, অমানবিক , বিদ্বেষমূলক বৈবহারিক দৃষ্টিভঙ্গী ও বহিঃপ্রকাশ। যেমন বর্তমান ভারতবাসী বলতে আর্য-অনার্য, শক-হূন-মোঙ্গল-পাঠান, নিগ্রো-অষ্ট্রিক-দ্রাবিড়-মঙ্গোলীয় রক্তের মিশ্রণজাত শঙ্কর জনগোষ্ঠী। কিন্তু সকল ভারতবাসীই ভারত সন্তান, 'অমৃতস্য পুত্রাঃ' - এটাই হল বৈচিত্র্যের স্বীকৃতি। এখানে মানুষে মানুষে পার্থক্য আছে, ভিন্নতা আছে, তথাপি স্বরূপ বা উৎস সূত্রে সুনিবিড় ঐক্যে বাঁধা। একেই বলে বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য, দৃষ্টি সংশ্লেষণাত্মক। আর যদি বলা হয় আর্যরা দেবাংশী, সব সুখসুবিধা তারাই ভোগের অধিকারী ; আর অনার্যরা তাদের পদদাস, ওরা তাই আর্যদের ক্রীতদাস উচ্ছিষ্টভোজী --- এখানেই বৈষম্য -অসাম্য। এর দৃষ্টি বিভেদমূলক, বিশ্লেষণাত্মক।
৮। বৈচিত্র্যই প্রাকৃত ধর্ম, তাই সব মানুষের মাথাপিছু আয় ও ক্রয়ক্ষমতা এক হবে না। তাই মানুষের সামাজিক-অর্থনৈতিক ক্ষেত্রের ব্যবধান নিরলস চেষ্টা রাখা সত্ত্বেও সামান্য হলেও কিছু থাকবে, এটাই বাস্তব। কিন্ত মানুষের বেঁচে থাকার অবশ্য-শর্ত হিসাবে যে যুগের মানুষের যেটা সর্বনিম্ন প্রয়োজন ( জীবনযাত্রার নিম্নতম মান ) সামাজিক জীব হিসাবে প্রত্যেকটা মানুষ তা পাবার নিশ্চিততার আধিকারী। সবার আগে সেটার ব্যবস্থা অবশ্যই করতে হবে। এরই ঠিক পরের লেজুড় কথাটা হল - সমাজে সাধারণ মানুষ ছাড়াও বিশেষ বিশেষ গুণে গুণ সম্পন্ন মানুষ থাকে। সমাজের স্বার্থে তাদের গুণের সেরাটা নিতে নিম্নতম মান দেওয়ার পর ইন্সেন্টিভ হিসাবে বাড়তি সুখ সুবিধা থাকা দরকার। মুড়ি মিছরি একদর হলে কি চলবে ? ৯। বণ্টনব্যবস্থা সুনির্দিষ্ট নীতি মেনে হওয়া উচিত। সমবণ্টন যে নয় তা অগেই বলা হয়েছে। প্রয়োজন অনুযায়ী বণ্টন --- তাও প্রয়োগে নানা অসুবিধা। একমাত্র যুক্তিসঙ্গত বণ্টনই সুষ্ঠু বণ্টন ব্যবস্থা গড়তে পারে। ১০। পরিবর্তনশীল জগতে খরা-বন্যা-অগ্নিকাণ্ড-ঝড়.ঝঞ্ঝা-অতিমারী-খনিজতেল লৌহ আকরিকের মত একবারই তৈরী হওয়া কাঁচা মালের সীমিত ভাণ্ডার -ইত্যাদি ব্যাপার গুলো স্বাভাবিক ব্যাপার। ভোগ্যদ্রব্য ব্যবহারে স্থান,কাল ও পাত্র ভেদে মানুষের রুচিও পরিবর্তনশীল। বণ্টন ব্যবস্থায় এসব কথা মাথায় রাখা দরকার। ১১। বণ্টন আসলে চাহিদা অনুযায়ী যোগানের ভারসাম্য অবস্থা। চাহিদা থাকলে উৎপাদন হবে, উৎপাদন হলে তবেইনা যোগানের প্রশ্ন,---তা পুনরুৎপাদনশীল দ্রব্যই( যেমন কৃশিজ দ্রব্য, বনজ দ্রব্য যুগের পর যুগ ধরে উৎপাদন চলতেই থাকে, বন্ধ হয়ে যায়না ) হোক আর অপুনরুৎপাদনশীল ( যেমন খনিজ ভাণ্ডার একবার শেষ হলে আর নোতুন করে সৃষ্টি করা যায়না ) দ্রব্যই হোক। কোন জিনিসের চাহিদা নেই, চাহিদা ছিল না, চাহিদা হবেও না। তাহলে কি উৎপাদন হবে ? টাকা চলেনা অথচ টাকসাল আছে, এমন আজগুবি ব্যাপার কখনও হয় ! কাজের কথা হল -- ন্যূনতম প্রয়োজনীয় ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য, মূলধনী দ্রব্য ( মূলধন হল উৎপাদনের উৎপাদিত উপকরণ বা দ্রব্যসামগ্রী যা ভবিষ্যৎ উৎপাদনের কাজে ব্যবহার করা হয় ), 'সর্বাধিক-সুখ-সুবিধা' পাওয়ার উপযোগী দ্রব্য, সৌখীন ও বিলাস দ্রব্য, ও অভিজ্ঞতালব্ধ সম্ভাব্য আপৎকালীন চাহিদার দ্রব্য সম্বন্ধে প্রকৃত চাহদার বিজ্ঞান সম্মত পরিসংখ্যান ব্যবস্থা থাকা দরকার। সমাজে এই অনুসারে উৎপাদন করবে বা যোগানের ব্যবস্থা করবে। এবং এবিষয়ে নিয়ামক সংস্থা অর্থাৎ কালেক্টিভ্বডির নিয়ন্ত্রন থাকাটা আবশ্যিক। তবেইনা যুক্তিসঙ্গত সুষ্ঠু বণ্টন ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব। ১২। বণ্টক কে ? এটাও তো কথা। সাধারণ মানুষের সাধারণ বিশ্বাস তথা বাস্তব অভিজ্ঞতা বলে --চবেযার মাল সেই বে,চবে এ আর নোতুন কথা কী ? অর্থাৎ যে তৈরী বা উৎপাদন করবে সেই বিক্রি করবে। কিন্তু কেন্দ্রিত অর্থনৈতিক পরিকাঠামোর বাজার ব্যবস্থায় সেটা হবার নয়। সাধারণ মানুষ সরাসরি উৎপাদকের নাগাল পায়ণা। তারা জিনিস কেণে খুচরা বিক্রেতার কাছ থেকে। শিল্পদ্রব্য হলে ভোক্তা আর উৎপাদকের মাঝে থাকে এজেন্ট, সাব-এজেন্ত,পাইকার ও খুচরা বিক্রেতা। কৃষিজ, বনজ,ক্ষুদ্র বা কুটির শিল্পজাত দ্রব্য পেতে ব্যাপারী বা চালানী বা ফড়ে, আড়তদার, মহাজনের হাত ঘুরে পেতে হয়। এই ব্যবস্থার অভিশাপটা কী ? না উৎপাদন মূল্য হিসাবে ( মার্জিনাল প্রফিট্ সহ, যে লাভ টুকু না থাকলে কারবার অচল) উৎপাদক যা পায় -- তা অনেক ক্ষেত্রেই বিক্রয় মূল্যের ভগ্নাংশ মাত্র।কৃষিজ দ্রব্যের উৎপাদক চাষীরা, কুটির শিল্পীরা তাও পায় না। তার মানে দাঁড়াল উৎপাদক পেলনা ন্যায্য মূল্য, ভোক্তা পেলনা ন্যায্য দামে জিনিস। লাভের গুড় খেল মিডিল্ম্যানেরা। তাহলে উপায় কী ? উৎপাদক যদি তার জিনিষ বাজারজাত করতে চায় তাহলে গড়তে হবে উৎপাদক সমবায়, আর ভোক্তা যদি ন্যায্য মূল্যে জিনিস পেতে চায় তাললে তাদের গড়তা হবে উপভোক্তা সমবায়। উৎপাদক সমবায় সঙ্গে উপভোক্তা সমবায়ের সরাসরি দ্রব্য বিনিময় ব্যবস্থা থাকা দরকার। সোজা কথাটা হচ্ছে উৎপাদন ও বণ্টন উৎপাদক সমবায় ও উপভোক্তা সমবায়ের হাতেই থাকা উচিত , ব্যবসায়ীদের হাতে কোন মতেই নয়। কেননা ব্যবস্থাপনা ব্যবসায়ীদের হাতে গেলে কতগুলো জনবিরোধী কাজকর্মের সম্ভবনা থেকেই যাবে। যেমন ক- সামূহিক কল্যাণের বদলে প্রাধান্য পাবে কিসে সর্বোচ্চ মুনাফা হয়। খ- ন্যূনতম ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের কৃত্রিম অভাব সৃষ্টি করতে পারে। গ- মজুতদারী - কালোবাজারী চলবে রমরমিয়ে। ঘ--মুদ্রাস্ফীতি মন্দার দরজা খুলে যাবে। ঙ--মানুষকে কাজ হারাবার আতঙ্ক তাড়া করবে। এই প্রসঙ্গে আরো ভাবা দরকার কেন--- অ- ব্যষ্টিগত মালিকানায় ব্যবসার সুযোগ যত কমিয়্য দেয়া যায় ততই মঙ্গল, আ- গৃহনর্মাণ সামগ্রী সমবায় বা রাজ্য সরকারের হাতে থাকাই মঙ্গল , ই- সমবায় বা স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে উৎপাদন - বণ্টন ব্যবস্থা যত বাড়িয়ে দেয়া যায় ততই মঙ্গল, ঈ-- 'কী-ইণ্ডাষ্ট্রী' বা 'মূলধনী দ্রব্য' ছাড়া রাজ্য সরকার বা কেন্দ্রীয় সরকারকে যত কম জড়ান যায় ততই মঙ্গল। কাজের কথাটা হচ্ছে --- উৎপাদক ও ঊপভোক্তার মধ্যে যোগটা বা সম্পর্কটা যতই প্রত্যক্ষ হবে ততই শোষণ বঞ্চনার ফাঁক-ফোকরগুলো কমতে থাকবে , প্রায় থাকবেই-না বলা চলে।
আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে। ৯।। (খ) পর্যবেক্ষণ লব্ধ চেতনার দ্বিতীয় দিগন্ত হচ্যে অর্থনীতির ভিত্তি হিসাবে আধ্যাত্মিক চেতনাকে মান্যতা না দেয়া। সাধারণ ভাবে আধ্যাত্মিকতা বলতে বোঝায় মনকে বিস্তার করার অনুশীলন, আর 'আব্রহ্মস্তস্ব ', অর্থাৎ 'সমদর্শিত্ব'-- মানে সব কিছুই বৃহতের বা ব্রহ্মের বা ঈশ্বরের বা পরমপুরুষের সম্যক্ প্রকাশ --এই বিশ্বাস ও এই অনুযায়ী ক্রিয়া- প্রতিক্রিয়া। এই আধ্যাত্মিকতা ব্যাপারটাকে বোঝা-চেনার বা ধারণা করার কতগুলো বাস্তব বোধ ও ইন্দ্রীয়ঘন প্রতিরূপ আছে---যেগুলো আবার শিকলি-বন্ধনে আবদ্ধ, যথা
১. জীবজগৎ,উদ্ভিদজগৎ, জড়জগৎ তথা প্রতিভাসিক জগতের ও অতীন্দ্রিয় জগতের সব কিছুর উৎস বা স্রষ্টা এক ও অদ্বিতীয় সত্তা।। বিজ্ঞানের পরিভাষায় একে বলা যায়-- 'সুপ্রীম্ নিউক্লিয়াস্ পয়েণ্ট্ '। এরই উপযুক্ত বাংলা পরিভাষা হচ্ছে 'পরমপুরুষ' (সুপ্রীম্ হল পরম, আর পুরে অর্থাৎ কেন্দ্রে যার অবস্থান তিনিই পুরুষ) । তার মানে দাঁড়াল -- আমরা সকলেই পরমপুরুষের বা পরম পিতার সন্তান। আবার এই 'সুপ্রীম্ নিউক্লিয়াস পয়েণ্ট' যে শক্তির সাহায্যে কাজ করে সেই শক্তিকে বলে " সুপ্রীম অপারেটিভ প্রিন্সিপল্ '। এই ক্রিয়াত্মিকা শক্তিকে বাঙলায় বলে ' পরমা প্রকৃতি', দার্শনিক পরিভাষায়-- এটাই মাতৃশক্তি। অর্থাৎ পরমাপ্রকৃতি আমাদের মা। সুতরাং সৃষ্ট জগতের প্রতিটি সত্তাই পরস্পর সৌভ্রাতৃত্বের আত্মিক বন্ধনে আবদ্ধ, অর্থাৎ মানুষ মানুষ ভাই ভাই। আধ্যাত্মিকতায় আধারিত এই সহজ সত্যকে স্বীকার করে না নেওয়ায় সমাজ জীবনের মত অর্থনীতিতেও যে বিষফল ফলেছে তা হচ্ছে বিভেদ - বৈষম্য। অর্থাৎ প্রতিটি মানুষের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা তথা সকল জীবের সামগ্রিক সমান কল্যাণ ভাবনাকে, 'সমদর্শিত্ব' কে প্রথাগত অর্থনীতির তত্ত্বগুলো পাত্তাই
২. আবার পৌরাণিক বিশ্বাস অনুযায়ী পঞ্চভৌতিক জগৎ তিন ভুবনে বিন্যস্ত --- স্বর্গ-মর্ত্য-পাতাল। দার্শনিক ও বাস্তব দৃষ্টিতে তা হচ্ছে--জল -স্থল-অন্তরীক্ষ্য। তাহলে ব্যাপারটা দাঁড়াল-- জগৎপিতা পরমপিতা এই তিনভুবনের স্রষ্টা। এর থেকেই তিনটি কথা ভেসে উঠছে, যেমন --ক) পরমপুরুষ যেহেতু আমাদের পিতা(সুপ্রীম্ফাদার্), পরমাপ্রকৃতি আমাদের মা(সুপ্রীম্ মাদার্), তিনভুবন তাঁদেরই সৃষ্টি সেইহেতু ত্রিভুবনই আমাদের পিতৃভূমি, মাতৃভূমি, আমাদেরই স্বদেশ। হর পিতা, গৌরী মাতা, ত্রিভুবন আমাদে স্বদেশ। এই বোধের অভাবে এসেছে প্রাদেশিকতা, উগ্রজাতীয়তাবাদ, অর্থনৈতিক সাম্রাজ্যবাদ খ) এর থেকে সিদ্ধান্ত হল যে জগতের সমস্ত সম্পদই আমাদের পৈতৃক সম্পত্তি, এই সম্পত্তিতে জগতের সকল মানুষের ভোগের সমান অধিকার। জীব জগৎ যেন একটা যৌথপরিবার। যৌথ পরিবারে পৈতৃক সম্পত্তি যেমন পরিবারের সবাই মিলেমিশে ব্যবহারের, ভোগের অধকারী তেমনি ত্রিভুবনের সব কিছু জগতের সবাই মিলে মিশে যুক্তিসংগত ভোগের সমান অধিকারী। এর থেকে কেউ কাঊকে বঞ্চিত করতে পারেনা। এই-দৃষ্টির অভাবে অর্থনীতিতে নেমে এসেছে শোষণ বঞ্চনার অভিশাপ। গ) পরমপুরুষের অস্তিত্ব তাঁর সৃষ্টির কণায় কণায়। কবির ভাষায় " আপনি প্রভু সৃষ্টিবাঁধন প'রে বাঁধা সবার কাছে।" সাধক দার্শনিকের ভাষায় ' আই কাণ্ট্ সী ইউর্ বডি ফর্ ইউর্ সোল্ '। উপনিষদের ভাবনায় --' সর্বং খলিদং ব্রহ্ম '। সূক্ষ্ম পারমানবিক তত্ত্ব বা অণুজীবৎ তত্ত্ব অনুসারে ব্যাপ্ত-গুপ্ত-প্রতিভাসিক জগতের সব কিছুই সংখ্যাতীত অণুজীবৎ (মাইক্রোবাইটা) দিয়ে গঠিত। এর মানে দাঁড়াল সৃষ্টির প্রতিটি এককেরই সমান গুরুত্ব, একককে অস্বীকার করে সমষ্টির ভাবনা সম্ভব নয়, আবার সমষ্টির সিম্বায়োটিক ভাবনাকে গুরুত্ব নাদিলে এককের অস্তিত্ব ও অর্থহীন, বিপন্ন। সামঞ্জস্যপূর্ণ ভাবনাতেই চেতনার পূর্ণতা। অগুনিত বালুকণা মিলেই তো বেলাভূমি। বালুকণা নেই, -বেলাভূমিও নেই। উৎস থেকে মোহানার মেলবন্ধনেই সৃষ্টির অভীপ্সা পূরণ তথা সার্থকতা। এই বোধোদয় না হওয়াতে অর্থনীতিতে জন্ম নিয়েছে সম্পদের অশুভ কেন্দ্রীভূতকরণ, কোথাও ব্যষ্টি বা গোষ্ঠীভূত কোথাও বা তা রাষ্ট্রীয়। কোথাও মানুষের ব্যষ্টিগত অর্থনৈতিক স্বার্থকে পিষে দেয়া হল, কোথাও সমষ্টির স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে ব্যষ্টিকে অবাধ স্বাধীনতা দেয়া হল। এর থেকে বেরিয়ে আসতে একটা তাত্বিক ভাবনা এসেছে - 'রিজিয়নাল্ ইন্ এ্যাপ্রোচ্, ইউনিবার্স্যাল্ ইন আউট্ লুক্'। কোন ফুলের মালার সামগ্রিক সৌন্দর্য্য নির্ভর করে প্রতিটি ফুলের সুষম সৌন্দর্যের ওপর। বাস্তবে তা প্রয়োগের ক্ষেত্রে দাঁড়াবে ।'আঞ্চলিকতার পথ ধর বিশ্বের আঙিনায় উত্তরণ '। তা অর্থনীতিতে হয়ে গেল বিকেন্দ্রিত অর্থণীতি। মানে কোন নির্দিষ্ট একজন,দুজন, গোষ্ঠী বা রাষ্ট্র নয় --ন্যূনতম প্রয়োজন পূর্ত্তি ঘটিয়ে সর্বাধিক সুখ সুবিধা পাওয়ার সমান অধিকার ও ব্যবস্থাপনা প্রতিটি মানুষের জন্যই উন্মুক্ত থাকা। প্রতিটি প্রজার কল্যাণেই রাজার কল্যান।প্রজাদের সামগ্রিক উন্নয়নই রাজ্যের বা রাষ্ট্রের উন্নয়ন। একে সোজাসুজি বললে দাঁড়ায় --যুগের জীবনযাত্রার মান ও তার ক্রমোন্নয়ন বজায় রাখতে যুগের বাজার দর অনুযায়ী ক্রয়ক্ষমতা থাকা। একেই এককথায় বলে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা। বিশ্ব জুড়েই আধ্যাত্মিকতা অর্থনীতিতে সংবেদ বা আকর্ষণ হয়ে স্থান পায়নি বলেই অর্থনীতির গোঁড়াতেই এই গলদ থেকে গেছে। (ক্রমশঃ)
- Log in to post comments