December 2024

সপ্তর্ষির প্রশ্ণ

জ্যোতিবিকাশ সিন্‌হা

কৃষ্ণা রজনীর শেষ প্রহর

সপ্তমীর ক্ষয়িষ্ণু চাঁদ তখনও

ঢালছে অন্তিম জ্যোৎস্নার পুষ্পবর্ষণ,

আকাশের উজ্জ্বল তারার নিশানায়

ছোট্ট তরী ভাসিয়েছে মানুষ

ঝঞ্ঝা বিক্ষুব্ধ জীবনের অপার সমুদ্রে

অসহ্য ব্যথার তীব্র কালকূট বুকে

ফেনিল জীবন যন্ত্রণার

উত্তাল তরঙ্গমালা চারিদিকে

মুক্তির আশ্বাস খুঁজেছে শুক্রে-মঙ্গলে

কিংবা ওই আলো-বিলানো

 চাঁদের কোণে পেয়েছে কি?---

ঊষার প্রথম পদক্ষেপে পাখীর কলগুঞ্জন

পূর্ব দিগন্তে সদ্য জেগে ওঠা চকোলেট রং

সামাজিক অবক্ষয় ঃ সমাধানের পথ কী

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

সম্প্রতি আর.জি.করের মর্মান্তিক ঘটনা সমাজে একটা নাড়া দিয়ে ছিল৷ মানুষ হয়তো সজাগ সচেতন হচ্ছে৷  কিন্তু  পেছন থেকে ক্ষমতা হারানো একটি রাজনৈতিক দল দলীয় স্বার্থ সিদ্ধি করতে গিয়ে সেই আন্দোলনকে বিপথে চালিত করে৷

আগ কঁহা লগী

গদ্গদ  বচ  ঘঞ ঞ্চ গদ্গদবাচ৷ তোমরা অনেক নেতার জ্বালাময়ী বত্তৃণতা প্রাক্–স্বাধীনতাকালে হয়তো শুণেছ৷ তাঁরা ভাষণে আগুন ছুটিয়ে দিতেন, যদিও বক্তব্যে বড় একটা কিছু থাকত না৷ শ্রোতার তলিয়ে ভাবার অবকাশ থাকে না৷ এই ধরণের অভ্যন্তরীণ মূল্যহীন যে ভাষণ তা’ ‘গদ্গদবাচ’৷

একবার বিহারে কোন এক জনসভায় জনৈক নেতা এলেন নির্ধারিত সময়ের দু’ঘণ্টা পরে৷ শ্রোতারা অধীর আগ্রহে কখনো রোদে মুখ পুড়িয়ে, কখনো বা জলে জামা ভিজিয়ে অপেক্ষা করে আছে৷ নেতার আসতে দেরী হ’ল কারণ তিনি একটি দূরবর্ত্তী স্থানের সুলভ শৌচালয়ের ফিতে কাটতে গেছলেন৷

(১) ‘ঘন্‌’ ধাতু+ ‘ড’ প্রত্যয় করে আমরা ‘ঘ’ শব্দ পাই৷ নানান্‌ অর্থে ‘ঘন্‌’ ধাতু ব্যবহৃত হয়-‘আঘাত হানা’, ‘থুড়ে থুড়ে কাটা’ n), ‘হত্যা করা’, ‘টুংটুং মধুর শব্দ করা’, ‘ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দেওয়া’, ‘আবরণ দেওয়া’, ‘পুরু করে বিছিয়ে দেওয়া’ প্রভৃতি৷ তাই ‘ঘ’ মানে ‘যে হত্যা করে’ ‘যে আঘাত হানে’, ‘যে থুড়ে থুড়ে কাটে’, ‘ছোট ঘণ্টা’ (ঘণ্টি), ‘হাতে এক সঙ্গে ব্যবহৃত হয়’ ‘এই রকম সরু আকারের চুড়ি’, ‘প্রাচীনকালের মেয়েদের কোমরে ব্যবহৃত চন্দ্রহার’,‘যে কোন কিছুকে ছাড়িয়ে-ছিটিয়ে দেয়’, ‘যে কোন কিছুকে ঢেকে দেয়’ (যেমন-‘মেঘ’), যা পুরু হয়ে বিছিয়ে থাকে (যেমন ‘দুধের সর’)৷

নয়াবসানের কথা

কোন জায়গায় নোতুন প্রজা বন্দোবস্ত হলে অর্থাৎ নোতুনভাবে প্রজা বসানো হলে সেই জায়গাগুলোর নামের শেষে ‘বসান’ যুক্ত হয়৷ যেমন–রাজাবসান, নবাববসান, মুকুন্দবসান, নুয়াবসান (অনেকে ভুল করে ‘নয়াবসান’ বলে থাকেন–সেটা ঠিক নয়৷ দক্ষিণী রাঢ়ী ও উত্তরী ওড়িয়ায় নোতুনকে ‘নুয়া’ বা ‘নোয়া’ বলা হয়৷ ‘নয়া’ হচ্ছে হিন্দী শব্দ৷ বিহারের ভাষায় ‘নয়া’র পর্যায়বাচক শব্দ হচ্ছে ‘নয়্কা’ বা ‘নব্কা’৷ মেদিনীপুর জেলার নোয়াগ্রাম শহরটিকে আজকাল অনেকে ভুল করে নয়াগ্রাম বলে থাকে)৷

 ঢঃ (১) বৈদিক ভাষায় ‘ঢম্‌’ একটি প্রাচীন ধাতু যার অর্থ একত্রিত করা বা একত্রিত হওয়া, যূথৰদ্ধ বা দলবদ্ধ হওয়া, অনেকের সঙ্গে মিলে মিশে থাকা, বক্রতাপ্রাপ্ত হওয়া বা বেঁকে যাওয়া বা স্বভাবগতভাবে বাঁকা হয়ে থাকা৷ এই ‘ঢম্‌’ ধাতুর ণিজন্তে তদুত্তরে ‘রক্‌’ প্রত্যয় করে পাই ‘ঢাম্র’৷ পৃষীদীর্ঘে পাই ‘ঢামর’৷ ‘ঢামর’ শব্দের ভাবারূঢ়ার্থ ঃ যে একত্রিত হয় বা একত্রিত করে, যে বা যারা যুথবদ্ধ হয়ে থাকে বা বেঁকে যায় বা বাঁকা হয়ে থাকে৷ যোগারুঢ়ার্থে ‘ঢামর’ শব্দের অর্থ হাতী৷ এই ‘ঢম্‌’ ধাতু+ ‘ড’ প্রত্যয় করে যে ‘ঢ’ শব্দ পাচ্ছি তার একটি মানে হচ্ছে হাতী৷ হাতীর পর্যায়বাচক শব্দ হস্তী, করী, গজ, বারণ, ঐরাবত (বৃহৎ), কুঞ্জর প্রভৃতি৷

আচরণাৎ ধর্ম

ধর্ম বৈবহারিক, সৈদ্ধান্তিক নয়৷ কে ধার্মিক, কে ধার্মিক নয়–তা তার বিদ্যা, ৰুদ্ধি বা পদমর্যাদা থেকে প্রমাণিত হয় না৷ কে ধার্মিক তা প্রমাণিত হয় তার আচরণ থেকে৷ কে অধার্মিক তাও প্রমাণিত হয় তার আচরণ থেকে৷ যে ধার্মিক হতে চায়, তাকে তার আচরণ ঠিক করতে হবে৷

সামাজিক সুবিচার ঃ নারী

কোন বিশেষ কার্যে বা জীবনের কোন বিশেষ ক্ষেত্রে, কোন বিশেষ মানুষ বা শ্রেণীর মধ্যে যদি কোন শারীরিক, মানসিক, সামাজিক, নৈতিক বা আধ্যাত্মিক দুর্বলতা দেখা দেয়, তবে বাকীদের উচিত তাদের হূদয়বৃত্তির সবটুকু মাধুর্য ঢ়েলে দিয়ে তাদের সেই দূর্বলতাটুকু দূর করে’ দেওয়া৷ প্রকৃত মানবিকতা বা প্রকৃত অধ্যাত্মদৃষ্টির অভাবে মানুষ কিন্তু ঠিক তার উল্টোটাই করে’ থাকে৷ কারুর কোথাও কোন দুর্বলতা দেখতে পেলে সুবিধাবাদী মানুষ সেই ফাঁক দিয়ে শিং গলিয়ে তার প্রাণের ফসলটুকু খেয়ে ফেলতে চায়–দুর্বলের ব্যথা বা মর্মবেদনার কথা ভেবে দেখাটাই নিজের দুর্বলতা বলে’ মনে করে৷ (তাই)  সমাজে যত প্রকারের অনর্থ ঘটে থাকে তার প্রায় ৭৫ ভাগই হয়ে থাকে মা

জলের বিশুদ্ধতা

জলম্, নীরম, তোয়ম্, উদকম, কম্বলম, পানীয়াম–জলের এই ক’টি হল পর্যায়বাচক শব্দ৷ জল শব্দটিকে তৎসম রূপেই ৰাংলায় ব্যবহার করি৷ যার মানে–any kind of water (যে কোন প্রকারের জল)৷ ‘নীর’ মানে সেই জল যা অন্যকে দেওয়া যায় ‘তোয়’ মানে যে জল উপচে পড়ে ‘উদক’ মানে যে জল খুঁড়ে পাওয়া যায় ‘কম্বল’ মানে যে জল ওপর থেকে পড়ে ‘পানীয়’ মানে যে জল পান করবার যোগ্য, খাল–বিল–নালার জল নয়৷ ৰাংলা ভাষায় ‘জল’ ও ‘পানী’ দুটো শব্দই চলে৷ জল শব্দটি তৎসম, আর পানী শব্দ ‘পানীয়ম’–এর তদ্ভব রূপ৷ ‘জল’ মানে যে কোন জল–ড্রেনের জল, পুকুরের জল, ফিল্টার করা কলের জল–সবই৷ তবে drinking water বললে তার জন্যে ৰাংলা হবে পানীয় জল বা পানী৷ মনে রাখবে, যে কোন জল

বকফুল

পরিচয় ও প্রজাতি ঃ বকফুল (গাছের) অনেক প্রজাতি রয়েছে৷ তবে মুখ্যতঃ দু’টি প্রজাতি নজরে পড়ে৷ একটিকে বলতে পারি কিছুটা হ্রস্ব, অপরটি হচ্ছে দীর্ঘ৷ হ্রস্ব প্রজাতির বকফুল (মোটামুটি) উঁচু হয় আর দীর্ঘ প্রজাতিটি আট মানুষের চেয়েও বেশী উঁচু হয়৷ হ্রস্ব–দীর্ঘ নির্বিশেষে বকফুল গাছ ৰাড়ে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে৷ ফুলের আকার ও আকৃতির বিচারে বকফুল শাদা, গোলাপী, লাল ও পঞ্চমুখী জাতের হয়ে থাকে৷