সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা থেকে জানা যাচ্ছে, ভারতের সবচেয়ে যে ধনী মুকেশ আম্বানী---তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ গত এক বছরে ৫৮ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ২.৫৭ লক্ষ কোটি টাকা যা সাধারণ মানুষের কল্পনার বাইরে৷ রামদেবজীর ‘পতঞ্জলী’র সঙ্গে যুক্ত তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্র বালকৃষ্ণজীর সম্পত্তির পরিমাণ গত এক বছরে বেড়েছে ১৭৩ গুণ৷ উনি এখন সাত হাজার কোটি টাকার মালিক ও ভারতের ১৯তম শীর্ষস্থানীয় ধনী ব্যষ্টি৷ এই ভাবে দেশের ধনী ব্যষ্টিদের সম্পত্তির পরিমাণ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে---উল্লম্ফন পদ্ধতিতে৷ অন্যদিকে দেশে গড় জনসাধারণের আয় কিন্তু প্রায় যেই কে সেই আছে৷ এখনও, ভারত সরকারেরই রিপোর্ট বলছে, দেশের ২২ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্য সীমারেখার নীচে বাস করছে৷ তাদের জীবনের নূ্যনতম চাহিদা---খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও নূ্যনতম শিক্ষা মিলছে না৷ দেশের ১৭.৭৩ লক্ষ মানুষের মাথা গোঁজবার একটাও ঘর নেই৷ শহরের ফুটপাতে, ব্রীজের তলায় বা কোনরকমে ছেঁড়া প্লাস্টিক, চট প্রভৃতি দিয়ে কোনরকমে ঝুপড়ি বানিয়ে তারা বাস করছে৷ ওদিকে মুকেশ আম্বানীর বাড়ির মাত্র চারজন মানুষের জন্যে মুম্বাইতে রয়েছে ২৭ তলা বাড়ী৷ তার নীচের ৬ তলা কেবল গাড়ী রাখার জন্যে৷ সেখানে ১৬০টি গাড়ী থাকতে পারে৷ বাড়ীর ছাদে তিনটে হেলিপ্যাড৷ অর্থাৎ হেলিকপ্ঢার নামার স্থান৷ ওই বাড়ীতে রয়েছে নাচের হল, ঝুলন্ত বাগান, সিনেমা হল---কী নেই!
দেশের ১ শতাংশ ধনী মানুষের হাতে রয়েছে দেশের ৫৮ শতাংশ সম্পদ৷
অথচ দেশের সমস্ত সম্পদে নীতিগতভাবে দেশের সমস্ত মানুষেরই সমান অধিকার৷ সমগ্র বিশ্বের ক্ষেত্রেও একই কথা খাটে৷ বিশ্বের সমস্ত সম্পদের মালিক প্রকৃতপক্ষে ওই সবকিছুর যিনি স্রষ্টা--- সেই পরমব্রহ্ম৷ সমস্ত মানুষ তো তাঁরই সন্তান৷ এদিকে থেকে তাই বিশ্বের সমস্ত সম্পত্তি সবাকার পৈত্রিক সম্পত্তি৷ এই সম্পত্তিতে সবাকার যৌথ অধিকার মানতেই হবে৷ প্রকৃতি তো কারোর নামে কোন সম্পদ বা সম্পত্তি লিখে-পড়ে দেননি৷
হ্যাঁ, বাস্তবিকতাকে মেনে হয়তো বিশ্বের সমস্ত সম্পত্তিকে সমভাবে বণ্টন করা সম্ভব নয়, কিন্তু কেউ চরম অভাবে ধুঁকতে থাকবে, শুকিয়ে মরবে আর কেউ কেউ চরম বিলাসিতা করে চলবে, এটাকে ন্যায়সম্মত বা মানবতাসম্মত বলে কখনও মানা যেতে পারে না৷
একদিকে পুঁজির পাহাড়, অন্যদিকে চরম দৈন্যতা---এ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন৷ বর্তমানে সমাজের যে চরম আর্ধিক বৈষম্য গোটা বিশ্বজুড়ে, এর মূল কারণ ধনতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা৷ ধনতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থাকে অক্ষুণ্ণ্ রেখে দারিদ্র্য ও বেকার সমস্যার সমাধান অসম্ভব৷ ‘ট্রিক্ল্ ডাউন থিওরি’ এ ব্যাপারে চরমভাবে ব্যর্থ৷ অথচ বর্তমানে দেখা যাচ্ছে প্রায় সমস্ত নেতা-নেত্রীরা এই ধনতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই দেশের চরম দারিদ্র্য বেকার সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চালাচ্ছেন---যা সম্পূর্ণ অসম্ভব৷
মার্কসবাদও মূলগতভাবে ত্রুটিপূর্ণ৷ যেখানে বিশ্বপিতাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয় না, সেখানে বিশ্বপিতার অস্বীকৃতির কারণে বিশ্বভ্রাতৃত্বও দৃঢ় ভিত্তিক হয়ে উঠতে পারে না৷ তাছাড়া মানুষের মানসিক উৎকর্ষ ঘটানোর জন্যে যে নৈতিক ও আত্মিক অনুশীলনের প্রয়োজন তার প্রয়োজনীয়তাও অস্বীকার করার ফলে মানুষের মনের ব্যাপ্তি, মনের উদারতা,মানবপ্রেম, সেবা ও ত্যাগের মনোভাব---এসব সদ্গুণের বিকাশও সম্ভব নয়৷ তার ওপর নীতিগত ত্রুটির জন্যে মার্কসবাদে একনায়কত্বের উদ্ভব খুবই স্বাভাবিক৷ এখানে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কেন্দ্রিকতার কারণে জনগণ অর্থনৈতিক দিক থেকে শাসকগোষ্ঠীর দাক্রেস পরিণত হয়৷ এ সমস্ত কারণে গত শতাব্দীতেই মার্কসবাদের অকাল মৃত্যু ঘটেছে৷
অথচ এখনও হয় পুঁজিবাদ না হয় মার্কসবাদ---এই গোঁড়ামী থেকে, এই ডগমা তথা ভাবজড়তার বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে আসার মত মুক্ত মানসিকতার বড় অভাব দেখা দিচ্ছে৷ এই ডগমা বা ভাবজড়তার প্রাচীর ভা৷তে হবে৷ মানুষকে নতুনভাবে চিন্তা করতে হবে৷ ‘‘পুরোনো সঞ্চয় নিয়ে ফিরে ফিরে শুধু বেচাকেনা / আর চলিবে না’’ (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)৷ আমাদের নতুন পথের চিন্তা করতে হবে৷
সেই নতুন পথেরই সন্ধান দিয়েছেন এ যুগের সর্বশ্রেষ্ঠ দার্শনিক শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার---তাঁর যুগান্তকারী প্রাউট দর্শনের মাধ্যমে৷ তিনি যে প্রগতিশীল সমাজতন্ত্র তথা অর্থনৈতিক গণতন্ত্রের পথের সন্ধান দিয়েছেন, সেই পথেই রয়েছে সমস্ত সমস্যা সমাধানের আসল চাবিকাঠি৷ এই প্রাউট অতি দ্রুত সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে৷ একমাত্র প্রাউটই পারে নব্যমানবতাবাদ ভিত্তিক সর্বাত্মক শোষণমুক্ত সর্বা৷সুন্দর সমাজ গড়তে৷ চরম অসম বণ্টন
সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা থেকে জানা যাচ্ছে, ভারতের সবচেয়ে যে ধনী মুকেশ আম্বানী---তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ গত এক বছরে ৫৮ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ২.৫৭ লক্ষ কোটি টাকা যা সাধারণ মানুষের কল্পনার বাইরে৷ রামদেবজীর পতঞ্জলীর সঙ্গে যুক্ত তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্র বালকৃষ্ণজীর সম্পত্তির পরিমাণ গত এক বছরে বেড়েছে ১৭৩ গুণ৷ উনি এখন সাত হাজার কোটি টাকার মালিক ও ভারতের ১৯তম শীর্ষস্থানীয় ধনী ব্যষ্টি৷ এই ভাবে দেশের ধনী ব্যষ্টিদের সম্পত্তির পরিমাণ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে---উল্লম্ফন পদ্ধতিতে৷ অন্যদিকে দেশে গড় জনসাধারণের আয় কিন্তু প্রায় যেই কে সেই আছে৷ এখনও, ভারত সরকারেরই রিপোর্ট বলছে, দেশের ২২ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্য সীমারেখার নীচে বাস করছে৷ তাদের জীবনের নূ্যনতম চাহিদা---খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও নূ্যনতম শিক্ষা মিলছে না৷ দেশের ১৭.৭৩ লক্ষ মানুষের মাথা গোঁজবার একটাও ঘর নেই৷ শহরের ফুটপাতে, ব্রীজের তলায় বা কোনরকমে ছেঁড়া প্লাস্টিক, চট প্রভৃতি দিয়ে কোনরকমে ঝুপড়ি বানিয়ে তারা বাস করছে৷ ওদিকে মুকেশ আম্বানীর বাড়ির মাত্র চারজন মানুষের জন্যে মুম্বাইতে রয়েছে ২৭ তলা বাড়ী৷ তার নীচের ৬ তলা কেবল গাড়ী রাখার জন্যে৷ সেখানে ১৬০টি গাড়ী থাকতে পারে৷ বাড়ীর ছাদে তিনটে হেলিপ্যাড৷ অর্থাৎ হেলিকপ্ঢার নামার স্থান৷ ওই বাড়ীতে রয়েছে নাচের হল, ঝুলন্ত বাগান, সিনেমা হল---কী নেই!
দেশের ১ শতাংশ ধনী মানুষের হাতে রয়েছে দেশের ৫৮ শতাংশ সম্পদ৷
অথচ দেশের সমস্ত সম্পদে নীতিগতভাবে দেশের সমস্ত মানুষেরই সমান অধিকার৷ সমগ্র বিশ্বের ক্ষেত্রেও একই কথা খাটে৷ বিশ্বের সমস্ত সম্পদের মালিক প্রকৃতপক্ষে ওই সবকিছুর যিনি স্রষ্টা--- সেই পরমব্রহ্ম৷ সমস্ত মানুষ তো তাঁরই সন্তান৷ এদিকে থেকে তাই বিশ্বের সমস্ত সম্পত্তি সবাকার পৈত্রিক সম্পত্তি৷ এই সম্পত্তিতে সবাকার যৌথ অধিকার মানতেই হবে৷ প্রকৃতি তো কারোর নামে কোন সম্পদ বা সম্পত্তি লিখে-পড়ে দেননি৷
হ্যাঁ, বাস্তবিকতাকে মেনে হয়তো বিশ্বের সমস্ত সম্পত্তিকে সমভাবে বণ্টন করা সম্ভব নয়, কিন্তু কেউ চরম অভাবে ধুঁকতে থাকবে, শুকিয়ে মরবে আর কেউ কেউ চরম বিলাসিতা করে চলবে, এটাকে ন্যায়সম্মত বা মানবতাসম্মত বলে কখনও মানা যেতে পারে না৷
একদিকে পুঁজির পাহাড়, অন্যদিকে চরম দৈন্যতা---এ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন৷ বর্তমানে সমাজের যে চরম আর্ধিক বৈষম্য গোটা বিশ্বজুড়ে, এর মূল কারণ ধনতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা৷ ধনতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থাকে অক্ষুণ্ণ্ রেখে দারিদ্র্য ও বেকার সমস্যার সমাধান অসম্ভব৷ (ট্রিক্ল্ ডাউন থিওরি) এ ব্যাপারে চরমভাবে ব্যর্থ৷ অথচ বর্তমানে দেখা যাচ্ছে প্রায় সমস্ত নেতা-নেত্রীরা এই ধনতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই দেশের চরম দারিদ্র্য বেকার সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চালাচ্ছেন---যা সম্পূর্ণ অসম্ভব৷
মার্কসবাদও মূলগতভাবে ত্রুটিপূর্ণ৷ যেখানে বিশ্বপিতাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয় না, সেখানে বিশ্বপিতার অস্বীকৃতির কারণে বিশ্বভ্রাতৃত্বও দৃঢ় ভিত্তিক হয়ে উঠতে পারে না৷ তাছাড়া মানুষের মানসিক উৎকর্ষ ঘটানোর জন্যে যে নৈতিক ও আত্মিক অনুশীলনের প্রয়োজন তার প্রয়োজনীয়তাও অস্বীকার করার ফলে মানুষের মনের ব্যাপ্তি, মনের উদারতা,মানবপ্রেম, সেবা ও ত্যাগের মনোভাব---এসব সদ্গুণের বিকাশও সম্ভব নয়৷ তার ওপর নীতিগত ত্রুটির জন্যে মার্কসবাদে একনায়কত্বের উদ্ভব খুবই স্বাভাবিক৷ এখানে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কেন্দ্রিকতার কারণে জনগণ অর্থনৈতিক দিক থেকে শাসকগোষ্ঠীর দাক্রেস পরিণত হয়৷ এ সমস্ত কারণে গত শতাব্দীতেই মার্কসবাদের অকাল মৃত্যু ঘটেছে৷
অথচ এখনও হয় পুঁজিবাদ না হয় মার্কসবাদ---এই গোঁড়ামী থেকে, এই ডগমা তথা ভাবজড়তার বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে আসার মত মুক্ত মানসিকতার বড় অভাব দেখা দিচ্ছে৷ এই ডগমা বা ভাবজড়তার প্রাচীর ভা৷তে হবে৷ মানুষকে নতুনভাবে চিন্তা করতে হবে৷ (পুরোনো সঞ্চয় নিয়ে ফিরে ফিরে শুধু বেচাকেনা / আর চলিবে না--রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)৷ আমাদের নতুন পথের চিন্তা করতে হবে৷
সেই নতুন পথেরই সন্ধান দিয়েছেন এ যুগের সর্বশ্রেষ্ঠ দার্শনিক শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার---তাঁর যুগান্তকারী প্রাউট দর্শনের মাধ্যমে৷ তিনি যে প্রগতিশীল সমাজতন্ত্র তথা অর্থনৈতিক গণতন্ত্রের পথের সন্ধান দিয়েছেন, সেই পথেই রয়েছে সমস্ত সমস্যা সমাধানের আসল চাবিকাঠি৷ এই প্রাউট অতি দ্রুত সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে৷ একমাত্র প্রাউটই পারে নব্যমানবতাবাদ ভিত্তিক সর্বাত্মক শোষণমুক্ত সর্বা৷সুন্দর সমাজ গড়তে৷
- Log in to post comments