স্বাস্থ্য বিজ্ঞান

চুলের যত্ন

চুল চামড়ার নীচ থেকে ঠেলে ওঠে ও সেই ভাবে বাড়ে৷ চুলের শেষাংশ বাড়ে না৷ কাঁচা হলুদ–বাটা মাথায় মেখে স্নান করে, মাথা মুছে নিয়ে, তারপর শুকনো গামছা মাথায় ১৫/২০ মিনিট চেপে বেঁধে রাখলে চুল মজবুত হয়, চুলপড়া বন্ধ হয় চুল একটু ঢেউ খেলানো বা কোঁকড়ানো হয়৷

উকুনের উপদ্রব ঃ

লবণের প্রয়োজন

‘লবণ’ শব্দের অর্থ হ’ল যে সৌন্দর্য বা লাবণ্য আনায়৷ প্রয়োজন মত লবণ শরীরে গৃহীত না হলে শরীরের সৌকুমার্য ও কমনীয়তা নষ্ট হয়ে যায়৷ এই অর্থেই লবণ শব্দটি তৈরী হয়েছে৷ ‘লবণ’ মানে লক্তপ্রাণ (রক্তপ্রাণ)৷

ভেজানো (বা অঙ্কুরিত) ছোলার উপকারিতা

ছোলার খোলা না ছাড়িয়ে জলে ভিজিয়ে ফুলিয়ে নিলে তাকে বলা হয় ‘সিক্তচনকং’৷ ছোলা কিছুটা গুরুপাক হলেও গুড়–আদার সঙ্গে ভিজে–ছোলা মিশিয়ে খেলে তা কিছুটা সহজ পাচ্য হয়৷ ‘লবণেন সহ সিক্তচনকং’–অর্থাৎ নুন দিয়ে ভিজে  কিডনী রোগের ঔষধ৷ যাঁরা কোন কর্মে উৎসাহ পান না, যাঁরা দীর্ঘসূত্রী বা অলস, তাঁরা গুড়, ছোলা–ভিজে ও আদা একসঙ্গে কিছুদিন খেলে কর্মোদ্যম ফিরে পাবেন৷ যথেষ্ট খাদ্যগুণ–সমৃদ্ধ হওয়ায়, যাঁরা নিরামিষ আহার করেন, তাঁদের যদি পেটে সহ্য হয়, তবে সকালে নিয়মিতভাবে ভিজানো বা অঙ্কুরিত ছোলা খাওয়া খুবই উপকারী৷ ভিজে ছোলা পেট পরিষ্কার রাখতেও সাহায্য করে ৷

(দ্রব্যগুণে রোগারোগ্য)

যোগ ও স্বাস্থ্য

যোগাচার্য্য

স্বাস্থ্য বলতে সাধারণতঃ মানুষের ধারণা শরীরটা সুস্থ থাকা৷ না, শুধু শরীর সুস্থ থাকলেই তাকে স্বাস্থ্য বলা হয় না৷ ধরা যাক, একজন শারীরিক ভাবে সুস্থ কিন্তু প্রচণ্ড ধরণের মানসিক বিষাদে ভুগছে৷ তাকে কী করে সুস্থ বলতে পারি কিছুদিন পর মানসিক বিষাদ থেকে তার পরিপাক ক্রিয়ায় ত্রুটি দেখা দেবে, ও তারপর নানান দৈহিক রোগেরও শিকার হবে৷ তাই বলছি, কেবল শারীরিক সুস্থতাকে স্বাস্থ্য বলে না৷

প্রাচীন ভারতে শল্য–চিকিৎসা, বিষ–চিকিৎসা, হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার উদ্ভব ও বিকাশ

এবার আমি মহাভারতের যুগের চিকিৎসা–পদ্ধতি সম্বন্ধে কিছু বলব৷ আয়ুর্বেদের মতে যখনই শরীরে বায়ু কিংবা পিত্ত কিংবা কফের বৃদ্ধি বা স্বল্পতা ঘটে তখনই দেহের সাম্যাবস্থা নষ্ট হয়ে রোগ দেখা দেয়৷ এই সাম্যাবস্থা পুনরায় ফিরিয়ে আনার জন্যই ওষুধের প্রয়োজন হয়৷ বায়ুর স্বল্পতা ঘটলে ওষুধ দিয়ে তাকে বাড়াতে হয়৷ পিত্তের বেলায়ও একই নিয়ম৷ আয়ুর্বেদের এটাই মত৷ একই পর্যায়ভুক্ত ইউনানি চিকিৎসা পদ্ধতি অনুযায়ী চারটা ধাতুর ওপর পরীক্ষা চালানো হয়–বায়ু, পিত্ত, কফ, ও রক্ত৷ এই দু’য়ের মধ্যে তফাৎটা হ’ল এই যে ইউনানি পদ্ধতিতে একটা অধিক ধাতুকে (রক্ত) ধরে নেওয়া হয়েছে৷ বাকি তিনটি ধাতু উভয় পদ্ধতিতেই সমভাবে গুরুত্বপূর্ণ৷ উভয় পদ্ধতিতেই স্থূল

তৃণভোজী জীব, মাংসাশী জীব, মানুষ

তোমরা জান জীবজন্তুরা মুখ্যতঃ তৃণভোজী (graminivorous) ও মাংসভোজী (carnivorous) –এই দু’টি মুখ্য শাখায় বিভক্ত৷ তৃণভোজীদের দাঁতগুলো থাকে মুক্তোর মত ধবধবে শাদা ও সাজানো৷ যারা মাংসভোজী জীব তাদের দাঁতগুলি হয় খোঁচা খোঁচা, ঈষৎ হল্দেটে অথবা লালচে মেশানো হলদেটে৷ মুখের দুই পাশে থাকে মাংস কাটবার কর্ত্তন দন্ত (canine teeth)৷

সয়াবীন

সয়াবীন একটি প্রচুর স্নেহগুণ–যুক্ত উত্তম খাদ্য৷ কিন্তু এতে রয়েছে কিছুটা বুনো গন্ধ৷ এর আদি বাস চীন ও উত্তর পূর্ব এশিয়ার প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে৷ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে একে de-odourised (দুর্গন্ধনাশক) করতে পারলে এর জনপ্রিয় হওয়ার পথে কোন বাঁধা থাকে না৷

তরমুজ

পৃথিবীতে তরমুজের অনেক প্রজাতি রয়েছে৷ ভারতীয় তরমুজের ওপর–শাদা, ওপর–সবজে ও ওপর–কালচে–তিন প্রজাতিই রয়েছে৷ সাধারণতঃ ভারতীয় তরমুজের ভেতরটা ঘোর লাল অথবা ফিকে লাল হয়ে থাকে৷ গোয়ালন্দ, আমতা, তারকেশ্বর, ক্ষর্দ্ধমান, ভাগলপুর ও সাহারাণপুরের তরমুজেরও নিজস্ব বৈশিষ্ট্য রয়েছে৷ আকারে সবচেয়ে বড় হয়ে থাকে ভাগলপুরী তরমুজ৷ যার ভেতরটা হলদে সেই চীনা তরমুজের আকার কিছুটা ছোট হয় কিন্তু মিষ্টত্ব খুবই বেশী৷ বর্ত্তমানে সাবেকী জাপানী বর্গীয় তরমুজ দক্ষিণ বাংলায় সমুদ্র–ঘেঁষা অঞ্চলে ভালই জন্মাচ্ছে–এর স্থানিক নাম দেওয়া হয়েছে সাগরশ্রী৷ উদ্ভিদ বিজ্ঞানীরা বলেন তরমুজের আদি বাসস্থান নাকি আরব দেশে৷ অনুমিত হয় জলপথে এই তরমুজ কলিঙ্গ

বয়ঃব্রণ ও তার ঔষধ

মানুষের সাধারণতঃ ১৪ থেকে ১৭ বছর বয়সে শরীরে বিভিন্ন ধরনের নতুন নতুন গ্রন্থিরসের ক্ষরণ ত্রন্দ্বন্তুব্জন্দ্বব্ধ প্সন্দ্র ড়প্সব্জপ্পপ্সুন্দ্বগ্গ্ হতে থাকে৷ এর ফলে রক্তের উষ্ণতায়, গতিতে, সংরচনায় পরিবর্তন ঘটে৷ তাতে করে মুখমণ্ডলে, বিশেষ করে কপাল ও গালে ছোট ছোট ফুসুক্ড়ি দেখা যায়৷ বাংলায় একে ব্রণ বলা হয়৷ এটা বিশেষ একটা বয়সে হয় তার পূর্বেও হয় না, পরেও হয় না৷ তাই একে বয়ঃব্রণ বলা হয়৷ সংস্কৃত ভাষায় ব্রণ বলতে বয়ঃব্রণকে তো বোঝায়–ই, অধিকন্তু যে কোন ক্লেশদায়ক ফোঁড়া বা ফুসুক্ড়ির জন্যেও ব্রণ শব্দ চলতে পারে৷ ব্রণরোগ মানে ঘা–এর রোগ৷

‘যথা অতি রমনীয় চারু কলেবরে

ব্রণ অন্বেষণ করে মক্ষিকানিকরে৷’

বাতরোগ

রোগের লক্ষণ ঃ রক্তে অম্লদোষ বেড়ে গেলে বাত রোগের সৃষ্টি হয়৷ এখানে বাতরোগ বলতে বিশেষ করে গ্রন্থিবাতের ( গেঁটে বাত) কথাই বলা হচ্ছে৷

ঔষধ ঃ এই বাতরোগ কোন ঔষধের বহিঃপ্রয়োগে খুব ভাল ভাবে সারে না৷ তবে সাময়িক ভাবে উপশম হয়৷ বাতরোগে মালিশ জাতীয় বস্তুর মধ্যে যেগুলি উত্তম মানের তাদের অনেকেরই উপাদান হ’ল ধুতুরা ফল৷ কণ্ঢকযুক্ত ধুতুরা ফল খাদ্য হিসেবে কথঞ্চিৎ বিষাক্ত হলেও বহিঃপ্রয়োগে ভাল ফল দেয়৷ তবে কৃষ্ণ ধুতরোর ফলেতে এই গুণ একটু বেশী৷