স্বাস্থ্য বিজ্ঞান

মধু

আয়ুর্বেদাচার্য

নেবুর রস ও মধু

ঠাণ্ডা লাগলে বা সর্দিতে গরম জলের সাথে নেবুর রস ও মধু মিশিয়ে খেলে অসুস্থতা দূর হয়ে যায়৷ গল্ ব্লাডারে ও লিভারের ব্যাধি দূর করতেও মধু যথেষ্ট সাহায্য করে৷ নেবুর রস, মধু আর অলিব ওয়েল মিশিয়ে পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করলে লিভার ও গল্ ব্লাডারের ব্যাধি দূর হয়ে যায়৷

কলার বিচি ও মধু

ঘামাচী (ঘর্মচচী)

চামড়াকে ঘর্মচচী থেকে বিমুক্ত করার জন্যে সমপরিমাণ তাজা দুধের সর ও ময়দা মিশিয়ে অল্পক্ষণ আঙ্গুলে ফেনিয়ে বা ফেটিয়ে নিয়ে, তারপর সারা শরীরে ওই সর–ময়দা মেখে ১৫/২০ মিনিট আলো–হাওয়া যুক্ত শুকনো জায়গায় (রোদে নয়) বসে থাকতে হয়৷ তারপর ওই লেপটে যাওয়া সর–ময়দাকে ঘষে ঘষে তুলে দিতে হয় ও সাবান না মেখে স্নান করতে হয়৷ সর–ময়দা ব্যবহারে সামান্যতম ক্ষতি হয় না৷ বরং ১৬ আনা লাভ হয়৷ শীতের দিনে চামড়া ফেটে গেলে অথবা অন্য যে কোন কারণে চামড়া খসখসে হয়ে গেলে, মেয়ে–পুরুষ যে কেউই সর–ময়দা ব্যবহার করতে পারেন৷

হলুদ–গাত্র–হরিদ্রা ঃ

কর্কট রোগ (ক্যান্সার)

লক্ষণ ঃ আক্রান্ত স্থানে কাটা–ছেঁড়ার মত যন্ত্রণা, অতিরিক্ত অসহিষ্ণুতা বোধ, স্পর্শকাতরতা, দুর্বলতা, বমনেচ্ছা প্রভৃতি এই ব্যাধির প্রধান লক্ষণ৷ রোগটির প্রথম অবস্থায় রোগী বিশেষ কোন যন্ত্রণা অনুভব করে না, তাই প্রথমের দিকে রোগটি প্রায়শই উপেক্ষিত হয়৷

মধু

আয়ুর্বেদাচার্য

হৃদরোগের চিকিৎসায় মধু

দুর্বল হৃৎপিণ্ডের পক্ষে মধু এক বল দানকারী উৎকৃষ্ট পানীয়৷ মধু প্রয়োগের ফলে শরীর বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে দেখেছেন হৃৎপিণ্ডের মাংসপেশী অধিক সবল ও সাবলীল ভাবে কাজ করতে পারে৷ মধু খেলে রক্ত বাড়ে ও নাড়ীগুলির প্রসারণ ঘটে, তাতে রক্ত সঞ্চালন সহজতর হওয়ায় হৃৎপিণ্ডের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে না৷ হৃদ্রোগীরা স্বস্তি অনুভব করেন৷ এছাড়া সহজে পাচ্য গ্লুকোজ যথেষ্ট পরিমাণে মধুতে রয়েছে যা দ্রুত রক্তের সঙ্গে মিশে যেতে পারে আর সর্বক্ষণ কর্মব্যস্ত হৃদযন্ত্রের ক্লান্ত মাংস পেশীকে সবল করে তুলতে পারে৷

পরিপাকক্রিয়া বৃদ্ধির সহায়ক

মধুর উপকারিতা

আয়ুর্বেদাচার্য

মধুর বহুমুখী গুণাগুণ সম্পর্কে অধিকাংশ লোকে অবগত নন৷ সাধারণ মানুষ ভেবে থাকেন কিছু রোগ আরোগ্যেই এর প্রয়োগ হয়ে থাকে মাত্র৷ কিন্তু মধু যে একটি উত্তম আহার্য্য ও পানীয় সে বিষয়ে সবাই জ্ঞাত নন৷ আধুনিক বিজ্ঞানের কল্যাণে মধুর গুণাগুণ জানতে পেরে পাশ্চাত্ত্য দেশের বহু লোক মধুর উৎপাদন বৃদ্ধির ব্যাপারে বিশেষ সচেষ্ট হয়েছেন৷ অনেকে সেই দেশগুলিতে এখন গুড় চিনির ব্যবহার কমিয়ে মধুর ব্যবহার করতেও শুরু করেছেন৷ ভারতবর্ষের যোগী ও মুনি ঋষিরা অবশ্য প্রাচীন কাল থেকেই এর গুণাগুণ সম্বন্ধে বিশেষ ভাবে অবগত ছিলেন৷

ভীম একাদশী করলে

লোভী মানুষের মত লোভী জানোয়ারও কোন কিছু পড়ে থাকলে তা’ তুলে আত্মসাৎ করার চেষ্টা করে৷ এই ধরনের অতিলোভী ও অতিভোজী একটি জীব হচ্ছে নেকড়ে বাঘ যা উত্তর ভারতে লাকড়া বা লকড়বাঘা নামে পরিচিত, কথ্য ৰাংলায় ‘নেকড়ে’, ইংরেজীতে প্সপ্তন্দ্র, সংসৃক্তে ‘বৃক’ বা ‘বৃক–ব্যাঘ্র’৷ নেকড়ে প্রচুর পরিমাণে খায়৷ নিজের প্রয়োজনের তুলনায় চার–পাঁচ গুন বেশী খায়৷ নিজের দৈহিক ওজনের চেয়েও বেশী ওজনের ভোজ্য গ্রহণ করে৷ তারপর কয়েকদিন অসাড় হয়ে পড়ে থাকে, উঠতে–বসতে চায় না৷ তারপর হজম হয়ে যাবার পর আবার গা–ঝাড়া দিয়ে ওঠে৷

তরমুজ

পৃথিবীতে তরমুজের অনেক প্রজাতি রয়েছে৷ ভারতীয় তরমুজের ওপর–শাদা, ওপর–সবজে ও ওপর–কালচে–তিন প্রজাতিই রয়েছে৷ সাধারণতঃ ভারতীয় তরমুজের ভেতরটা ঘোর লাল অথবা ফিকে লাল হয়ে থাকে৷ গোয়ালন্দ, আমতা, তারকেশ্বর, ৰর্দ্ধমান, ভাগলপুর ও সাহারাণপুরের তরমুজেরও নিজস্ব বৈশিষ্ট্য রয়েছে৷ আকারে সবচেয়ে ৰড় হয়ে থাকে ভাগলপুরী তরমুজ৷ যার ভেতরটা হলদে সেই চীনা তরমুজের আকার কিছুটা ছোট হয় কিন্তু মিষ্টত্ব খুবই বেশী৷ বর্ত্তমানে সাক্ষেকী জাপানী বর্গীয় তরমুজ দক্ষিণ ৰাংলায় সমুদ্র–ঘেঁষা অঞ্চলে ভালই জন্মাচ্ছে–এর স্থানিক নাম দেওয়া হয়েছে সাগরশ্রী৷ উদ্ভিদ বিজ্ঞানীরা ৰলেন তরমুজের আদি বাসস্থান নাকি আরব দেশে৷ অনুমিত হয় জলপথে এই তরমুজ কলিঙ্গ

অশোক

অশোক একটি ভারতীয় প্রজাতির (Indica) গাছ৷ অত্যুষ্ণ বা অতি শীতল অঞ্চল বাদে ভারতের সর্বত্রই অশোক গাছ জন্মায়৷ কেউ কেউ দেবদারু (ঢেউ খেলানো পাতা) গাছকে ভুল করে অশোক বলে থাকেন৷ না, দেবদারু ও অশোক এক গাছ নয়৷ দেবদারু (Indian Pine) পাইন বর্গীয় গাছ, অশোক তা নয়৷ অশোক ফুল অধিকাংশ ক্ষেত্রে লালচে রঙের৷ কিন্তু শাদা, সোণালী ও হলদে রঙের অশোক ফুলও হয় যদিও তারা দুষ্প্রাপ্য৷

অশোক ফুল, ছাল ও মূল নানান ধরনের ঔষধ প্রস্তুতিতে লাগে৷ বিশেষ করে বিভিন্ন স্ত্রী–ব্যাধিতে অশোকের ঔষধীয় গুণ সর্বজনস্বীকৃত৷ অশোকাসব, অশোকারিষ্ট, অশোকক্ষীর প্রভৃতি ঔষধগুলি এই অশোক থেকেই প্রস্তুত হয়৷

বধিরতা

লক্ষণ ঃ এই রোগে আক্রান্ত হবার প্রথমের দিকে রোগী কাণে ভোঁ–ভোঁ শব্দ শোণে ও ক্রমশঃ অনান্য সমস্ত শব্দই রোগীর কাছে অস্পষ্ট হয়ে যেতে থাকে৷

কারণ ঃ জন্মগত কারণ ব্যতিরেকে বধিরতা নিজে কোন রোগ নয়–অন্য রোগের প্রতিক্রিয়া মাত্র৷ তাই এ রোগের অজস্র কারণ থাকতে পারে৷

১) অতিরিক্ত কুইনাইন বা অন্য কোনবিষ ঔষধ রূপে দীর্ঘকাল ব্যবহার করলে শ্রবণশক্তি হ্রাসপ্রাপ্ত হয় বা স্তম্ভিত হয়ে যায়৷

২) পুষ্টিকর খাদ্যের অভাবে প্রৌৌত্বে বা বার্দ্ধক্যে অনেক লোকের শ্রবণযন্ত্রের স্নায়ুপুঞ্জ দুর্বল হয়ে পড়ে ও তার ফলে বধিরতা দেখা দেয়৷

বাতরোগ

রোগের লক্ষণ ঃ রক্তে অম্লদোষ ৰেড়ে গেলে বাত রোগের সৃষ্টি হয়৷ এখানে বাতরোগ বলতে বিশেষ করে গ্রন্থিবাতের ( গেঁটে বাত) কথাই ৰলা হচ্ছে৷

ঔষধ ঃ এই বাতরোগ কোন ঔষধের বহিঃপ্রয়োগে খুব ভাল ভাবে সারে না৷ তবে সাময়িক ভাবে উপশম হয়৷ বাতরোগে মালিশ জাতীয় বস্তুর মধ্যে যেগুলি উত্তম মানের তাদের অনেকেরই উপাদান হ’ল ধুতুরা ফল৷ কণ্ঢকযুক্ত ধুতুরা ফল খাদ্য হিসেবে কথঞ্চিৎ বিষাক্ত হলেও বহিঃপ্রয়োগে ভাল ফল দেয়৷ তবে কৃষ্ণ ধুতরোর ফলেতে এই গুণ একটু বেশী৷