ক্রিকেট ও কদর্য জাতিবিদ্বেষ

লেখক
পথিক বর
সদ্য শেষ হওয়া ক্রিকেট বিশ্বকাপ নিয়ে দুই বাঙলার কিছু ক্রিকেট ভক্ত (ক্রিকেট জুয়াড়ি) সোশ্যাল মিডিয়ায় পরস্পর বিরোধী এমন কিছু অশালীন আনপড় মন্তব্য করছে আর ভাবছে তারাই যেন দুই বাঙলার ত্রিশ কোটি মানুষের একমাত্র প্রতিনিধি৷ তাদের কথাই যেন ৩০ কোটি মানুষের মুখের মনের কথা৷ এরা বোঝেনা দুই বাঙলার সম্পর্ক আজকের ক্রিকেট নামক নিকৃষ্ট জুয়ার সঙ্গে নয়৷ দুটি ভিন্ন রাষ্ট্রের বাসিন্দা হলেও দুই বাঙলার সম্পর্ক রাষ্ট্রের রাজনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে ওঠা পড়া করে না, সব সময়৷ ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি কৃষ্টি আচার-আচরণ আহার বিহারে সে সম্পর্ক চিরস্থায়ী৷ রবীন্দ্রনাথ নজরুল জমীউদ্দিন জীবনাদাস---এইরকম হাজারো হাজারো নাম দুই বাঙলার সম্পর্কের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে যুক্ত৷ এপার ওপারের কিছু আবড় ক্রিকেট বোদ্ধা (বুদ্ধু) পাগল (জুয়াড়ী) এই সম্পর্ক শেষ করতে পারবে না৷ খেলায় হার-জিত থাকেই৷ বাংলাদেশ ভালো খেলেও গ্রুপ লিগ থেকেই বিদায় নিয়েছে৷ অস্ট্রেলিয়ার মতো দলকেও হারের মুখোমুখি এনেও শেষ রক্ষা করতে পারেনি৷ ভারত অসাধারণ ক্রিকেট খেলেও একেবারে তীরে এসে তরী ডুবেছে৷ এতে কেউ খুশি হবে, কেউ দুঃখ পাবে এটাই স্বাভাবিক৷ এসবই খেলার অঙ্গ কিন্তু স্পোর্টসম্যান স্পিরিট বলে একটা কথা থাকে, যা হার জিত নিয়ে মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক নষ্ট করে না৷ এই স্পিরিট যাদের নেই তাদের কোন একটা খেলা নিয়ে কোন মন্তব্য করার নৈতিক অধিকার নেই শুধুমাত্র জুয়াড়ি ছাড়া৷ খেলার ফলাফল কে নিয়ে রাষ্ট্রবিরোধী মন্তব্য, জাতিবিদ্বেষের মতো নিকৃষ্ট মানের ভাষা প্রয়োগ, পরস্পরকে হুমকি---এই কদর্য অশালীন আচরণ কোন ক্রিকেট প্রেমিকদের হতে পারে না৷ এমনিতেই ক্রিকেটকে বলা হয় জেন্টলম্যান গেম৷ যদিও ক্রিকেটের সেই কৌলিন্য আজ আর নেই৷ খেলা নিয়ে উন্মাদনা এক জিনিস৷ কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় খেলার ফলাফলের পরিপ্রেক্ষিতে নিকৃষ্ট ভাষায় রুচিহীন মন্তব্য এ কোন ক্রিকেট প্রেমিকদের আচরণ নয়৷ জুয়াড়ীদের পরাজয়ের হতাশার বহিঃপ্রকাশ মাত্র! তাই সোশ্যাল মিডিয়ার এই নগণ্য সংখ্যক ক্রিকেট জুয়াড়ির সঙ্গে দুই বাঙলার ৩০কোটি বাঙালীর কোন সম্পর্ক নেই৷