উদ্/ওদ্+ অনট্ = ওদন ৷ ‘ওদন’ মানে যাকে ভেজানো হয়েছে৷ ধানের সংস্কৃত ‘ব্রীহি’, চালের সংস্কৃত ‘তণ্ডুল’ আর ভাতের সংস্কৃত ‘ওদন’৷ ভাত ভিজে জিনিস, তাই তার নাম হয়েছে ‘ওদন’৷ যে মানুষ সৎপথে থেকে অন্ন সংগ্রহ করেন বা অন্ন সংস্থান করেন তাঁর অন্ন পবিত্র অন্ন লে গণ্য হয়ে থাকে৷ কলহজীবী, মৃতকজীবী, পরপিণ্ডভোজী, ধর্মব্যবসায়ী ও সুযোগসন্ধানীর অন্ন অপবিত্র অন্ন লে গণ্য করা হয়ে থাকে৷ যারা মানুষে মানুষে কলহ াধিয়ে দিয়ে অর্থ উপার্জন করে তাদের লা হয় ‘কলহজীবী’৷ এই কলহজীবীর অন্ন অভক্ষ্য লে গণ্যও হয়ে থাকে৷ কারও মৃত্যুর সুযোগ নিয়ে যারা অর্থোপাজন করে (যেমন মৃতদেহকে পিণ্ডদান করে অর্থোপাজন, শ্রাদ্ধে পৌরোহিত্য করে অর্থোপাজন প্রভৃতি) তাদের ‘মৃতকজীবী’ লা হয়ে থাকে৷ প্রাচীনকালে মৃতকজীবীর অন্ন অভক্ষ্য লে গণ্য করা হত৷ যে মানুষ নিজে অর্থোপাজন করে না, অন্যের উপার্জনের অন্ন ধবংস করে, অথচ বিনিময়ে কোন সেবা দান করে না তাকে লে ‘পরপিণ্ডভোজী’৷ প্রাচীনকালে এই পরপিণ্ডভোজীর অন্ন অভক্ষ্য লে বিবেচিত হত৷ কিছু কিছু অথর্ববেদী যাঁরা মৎস্য, মাংস ভক্ষণ করতেন প্রকারান্তরে তাঁরাও হয়ে যেতেন মৃতকজীবী৷ তাই তাঁদের সম্বন্ধেও লা হত ‘অর্থবান্নং মা ভুঞ্জীথাঃ’৷ যে সমস্ত গোষ্ঠী যাজন ক্রিয়াকেই জীবিকারূপে গ্রহণ করেছে তারা ধর্মব্যবসায়ী রূপে গণ্য হয়ে থাকে৷ এই ধর্মব্যবসায়ীর অন্ন প্রাচীনকালে অভক্ষ্য লে বিবেচিত হত৷ যারা সঙ্গতভাবে পরিশ্রমের বিনিময়ে অর্থোপার্জন করে না, অর্থোপার্জনের জন্যে সব সময় নানান্ ফন্দি-ফিকর্ খাটিয়ে ড়োয় তাদের লা হয় ‘সুযোগসন্ধানী’৷ এই সুযোগ সন্ধানীর অন্নও এককালে অখাদ্য লে বিবেচিত হত৷ সুতরাং এই যাদের কথা একটু আগে বললুম তাদের ওদন/অন্ন/ভাত অপবিত্র লে গণ্য হত৷ আর যারা সঙ্গতভাবে পরিশ্রমের বিনিময়ে অর্থোপার্জন করত তাদের অন্ন পবিত্র ওদন লে গণ্যও করা হত৷ মধ্যযুগের ভারতে এক রাজার নাম ছিল শুদ্ধোদন (গৌতম বুদ্ধের পিতা৷ এর মানে যিনি সৎভাবে থেকে অর্থোপার্জন করতেন৷ তাই এঁর ওদন গ্রহণ করা চলত)৷