কৃষিসভ্যতার সূচনাকাল থেকে পৃথিবীর সমস্ত দেশে নানারীতিতে প্রবর্ত্তিত হয়েছে শস্য উৎসব৷ ঘরের মেয়েরাই এইসব শস্যউৎসবের উদ্যোক্তা৷ মাঠের শস্য ঘরে তোলার পর সুখী সংসারের স্বপ্ণে মেয়েরা গান গায়, নাচে, পুজো করে৷ পৃথিবীর সমস্ত দেশের মেয়েরাই ফসলী ঋতুতে কৃষি উৎসবে মেতে ওঠে৷
বাঙলার ঘরে ঘরে পৌষ সংক্রান্তিতে পৌষালী পার্বন অনুষ্ঠিত হয়৷ নতুন ধান ওঠার সঙ্গে সঙ্গে উৎসবের আয়োজন শুরু হয়ে যায়৷ বাঙালীর কাছে ধনি লক্ষ্মী৷ সেই ধনি গোলার ওঠা মানে লক্ষ্মীর আগমণ৷ তাঁকে পুজো করতে হবে বেঁধে রাখতে হবে৷ ঘরের পুরুষরা খড় দিয়ে গোলা বাঁধে আর মেয়েরা ছড়া কাটে---
আওনি বাওনি চাওনি৷
তিন দিন পিঠা খাওনি৷৷
অর্থাৎ লক্ষ্মীর আবির্ভাব (আওনি), লক্ষ্মীর বন্ধন (বাওনি) লক্ষ্মীর ঘরে চিরস্থায়ী বসতি হোক এই প্রার্থনা (চাহনি-চাওনি)৷ পৌষ সংক্রান্তির আসল মজা তিন দিন ধরে পিঠে খাওয়া৷ এই পিঠে ও কিন্তু শস্যজাত খাদ্য৷ এইদিন মেয়েরা উঠোনে বারান্দায় আলপনায় এঁকে গোবরের নাড়ু আর চালের গুঁড়ো পুজো করে৷ সারারাত জেগে, থেকে সেসব পাহারা দেয়৷ একে বলে পৌষ আগলানো৷’ মেয়েরা দুপুর বেলা কুনকেতে ধান ও ধানের ছড়া ভরে পুজো করে৷ ধান্য লক্ষ্মীর বন্দনা গায়৷
শুধু বাঙলায় নয়, দক্ষিণ ভারতেও এই তিথিতে অনুরূপ শস্য উৎসব ‘পাঙ্গল’ পালিত হয়৷ আসামে হয় বিহূ উৎসব৷ তাই গুজরাটে সূর্য পূজার অঙ্গ হিসাবে ঘুড়ি ওড়ানো হয়৷ সূর্যের কৃপা ছাড়া, কৃষি-কাজে সফলতা লাভ করা অসম্ভব৷ সূর্যকে আনন্দ দেওয়ার জন্যই ঘুড়ি ওড়ানো হয়৷
- Log in to post comments