প্রবন্ধ

শোষণমুক্ত সমাজ গড়তে প্রাউটের আহ্বান

প্রভাত খাঁ

মানুষ নিছক উদর সর্বস্ব জীব বিশেষ নয়৷ মানুষ সৃষ্টির শ্রেষ্ঠতম প্রাণী৷ কারণ একমাত্র মানুষই পারে এই বিশ্বের সৃষ্টি রহস্য জানতে৷ তার সূক্ষ্মতম মানসিক বিকাশের মাধ্যমে৷ অন্য কোন প্রাণীর সেই সামর্থ নেই৷ তবে সঞ্চর ও প্রতিসঞ্চর ধারার মাধ্যমে যে সৃষ্টি প্রবাহ চলে তার প্রথম ও শেষ কথা হ’ল--- আমরা যথা হতে আসি তথায় ফিরিয়া যাই৷ সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্মতম সত্তা থেকে সঞ্চর ধারার স্থূল থেকে স্থূলতম সত্তায় রূপান্তরিত হয়ে সৃষ্টি চলেছে৷ সেই এক কোষি প্রাণী থেকে আরম্ভ করে এর অগ্রগতি, তাই জীবজন্তু, গাছপালা থেকে আরম্ভ করে ধীরে ধীরে এই মানুষের সৃষ্টি৷ মানুষ মন প্রধান জীব হিসেবে নিজেকে জানতে চায়৷ আর সেই জানার আকাঙ্খাতে সেই

আনন্দমার্গে যোগতন্ত্র মনুষ্যত্ব বিকাশের সাধনা

আচার্য সত্যশিবানন্দ অবধূত

তন্ত্র কী? এ নিয়ে নানান্ জনের নানান্ প্রশ্ণ৷ এই সমস্ত প্রশ্ণের নিরসনের জন্যে এই  প্রবন্ধের অবতারণা৷

লিপিমালার প্রথম অক্ষর ‘অ’-এর ইতিকথা

সমরেন্দ্রনাথ ভৌমিক

আমরা সকলেই জানি বিদ্যাসাগর মহাশয়ের বর্ণপরিচয়ের প্রথমভাগে ১২টি স্বরবর্ণের মধ্যে প্রথমেই ‘অ’ বর্ণটি স্থান পেয়েছে৷ শুধুমাত্র বাংলা ভাষায়  ‘অ’ স্বরবর্ণটি প্রথম স্থান পেয়েছে, তা নয়, এই ‘অ’ অক্ষরটি বিশ্বের অধিকাংশ লিপিমালারই প্রথম অক্ষর হচ্ছে ‘অ’৷ দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সব লিপিমালাতেই প্রথম অক্ষর ‘অ’, ব্রাহ্মী, সারদা, নাগরী, ডোগরী, টেকরি, চুরুবালি মোড়ি, কোটাবালি মোড়ি, গুজরাটি, মারাঠি, লণ্ডেই, তামিল, তেলেগু, মালয়ালাম, কন্নর, ওড়িয়া, বাংলা, থাই, বর্মী (মগী ভাষা সমেত) সব ভাষাতেই প্রথম অক্ষর ‘অ’৷ অন্যদিকে লাতিন সেমিতীয়, গ্রীক প্রভৃতি ভাষাগুলিতেও তাই৷ ভারতীয় লিপিগুলিতে প্রথম অক্ষরের উচ্চারণ যেমন ‘অ’, তেমন

গণ–অর্থনীতিকে সার্থক করে তুলতে হবে সমবায়ের মাধ্যমে

প্রভাত খাঁ

ব্যষ্টি নিয়ন্ত্রিত ও রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত উৎপাদন ব্যবস্থাই অদ্যাবধি পৃথিবীর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে ও মূলতঃ বন্টন ব্যবস্থাকে পরিচালিত করছে৷ এদের যথাক্রমে ধনতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ও রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রক সাম্যবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা বলে উল্লেখ করা হয়৷

আজ এই দুটিই উৎপাদন ও বন্টন ব্যবস্থাই শোষণের হাতিয়ার হিসাবে চিহ্ণিত হচ্ছে৷

সারা পৃথিবীতে চলছে চরম অর্থনৈতিক শোষণ৷ বর্ত্তমানে ধনতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাই স্বনামে ও বেনামে কাজ করে চলেছে৷ এই দুই ক্ষেত্রেই শ্রমিক, বুদ্ধিজীবী নানাভাবে আর্থিক দিক থেকে শোষিত হচ্ছে৷

ডাকাতে কালী

প্রণবকান্তি  দাশগুপ্ত

বাংলাদেশে এককালে ডাকাতদের দৌরাত্ম্য ছিল অপ্রতিহত৷ মাথায় ঝাঁকড়া ঝাঁকড়া চুল, লাল চোখ, মুখে মুখোশ, হাতে তৈলাক্ত লম্বা লাঠি, কারো হাতে ধারালো রামদা বা কুঠার, রাতের অন্ধকারে ‘হারে রে রে’ শব্দে ডাকাতি করে রণপায়েপালিয়ে যাওয়া---সেকালের সেইসব ডাকাতদের কথা মনে পড়লে কার না গা ছমছম করে৷

সেইসব ডাকাতরাই আবার খুব কালী মায়ের ভক্ত হত৷ ডাকাতির  কাজে শক্তি চাই৷ তাই শক্তির পুজো৷ তাদের আরাধ্য কালীরা আজো অনেক জায়গায়  ডাকাতে কালী নামে প্রসিদ্ধ হয়ে আছে৷

সময়োচিত কিছু কথা

বিশ্বদেব মুখোপাধ্যায়

দিদি আনন্দ অরুন্ধুতী আমাকে জানিয়েছিলেন আমাদের দেশে ফলের গাছ বেশি করে লাগালে দেশের বাচ্চারা নানান ধরনের প্যাকেটজাত খাবার ছেড়ে অধিক পরিমানে ফল খাবে ও এতে তাদের পুষ্টি হবে৷ তিনি আমাকে এই বিষয়টা জানিয়েছিলেন আম্ফান ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় কী কী ধরনের গাছ লাগানো  উচিত, এ সম্বন্ধে আমার পূর্বেকার  লেখার পরিপ্রেক্ষিতে৷ দিদির এই প্রস্তাবে আমি সম্পূর্ণ সহমত পোষণ করি৷ আমাদের দেশে শিশু থেকে বৃদ্ধ -এক বিরাট সংখ্যক মানুষ অপুষ্টির শিকার৷ ফল থেকে বেশিরভাগই শতহস্ত দূরে৷ তার অন্যতম একটা প্রধান কারণ  হল ফলের অতিরিক্ত মূল্য৷ কৃষিপ্রধান আমাদের এই রাজ্য তথা দেশের মাটি এতটাই উর্বর যে এখানে নানান ধরণের ফল ও ফসল সহজে

দুরাচারী শাসকের হাত থেকে মুক্তির পথ প্রাউট

এইচ.এন. মাহাত

সম্প্রতি ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পশ্চিম বাঙলার বিভিন্ন জায়গায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেছিলেন একবার বিজেপি সরকার এলে সোনার বাঙলা তৈরী করবেন৷ আবার অপর দিকে বাঙালী মানেই বিদেশী বাংলাদেশী, বহিরাগত৷ তাদেরকে দেশ থেকে তাড়াতে হবে৷ কেন্দ্রীয় সরকারের এই দ্বিচারিতা ও বাঙলার প্রতি বিমাতৃসুলভ মানসিকতার জন্য বিভিন্ন ভাবে বাঙলার অর্থনীতিকে পঙ্গু করার চক্রান্ত  করে চলেছে৷ তাছাড়াও বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি ভারতের মধ্যে প্রাচীন হওয়ার পরেও তাকে স্বীকৃতি  দেয়নি৷ প্রধানমন্ত্রী গুজরাটী হওয়ায় যে গুজরাটের ভাষা ভারতের মুষ্টিমেয় কয়েক হাজার মানুষ জানে সেই ভাষাকে উচ্চ শিক্ষা ও চাকুরীর ক্ষেত্রে স্বীকার করেছে অথচ বাংলাকে  এখন

গ্রাম স্ব-নির্ভর হলে দেশ স্ব-নির্ভর হবে

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

স্বাধীনতারপর সাত দশক পার হয়ে গেলেও সর্বসাধারণের সার্বিক কল্যাণের স্বার্থে, সামগ্রিকভাবে দেশের হতদরিদ্র মানুষের উন্নয়নের জন্যে কোন বলিষ্ঠ ও বাস্তবমুখী অর্থনৈতিক পরিকল্পনা গড়ে ওঠেনি৷ এর একমাত্র কারণ ভারতবর্ষের রাজনীতি, অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করে দেশীয় পুঁজিপতিরা, অর্থনীতিবিদ্ ও নেতারা শিখণ্ডী মাত্র৷

‘স্বপ্ণ, নিদ্রা, স্বাভাবিক মৃত্যু ও অপঘাত মৃত্যু’’

সমরেন্দ্রনাথ ভৌমিক

মানব শরীর হ’ল একটা জৈব যন্ত্র (Humanbody is a biological machine)৷ এই জৈব যন্ত্রে সমাবেশ  ঘটছে ৬টি চক্রের ও পাঁচটি কোষের৷ এই ৫টি কোষ হ’ল--- কামময় কোষ, মনোময় কোষ, অতিমানস কোষ, বিজ্ঞানময় কোষ ও হিরন্ময় কোষ৷

কামময় কোষ হ’ল প্রথমস্তর৷ এই কোষের অধিষ্ঠান হ’ল মূলাধার চক্র৷ মনোময় কোষের অধিষ্ঠান স্বাধিষ্ঠান চক্র, অতিমানস কোষের অধিষ্ঠান হ’ল মনিপুরচক্র৷ বিজ্ঞানময় কোষের অধিষ্ঠান হ’ল অনাহত চক্র৷ হিরন্ময় কোষের অধিষ্ঠান হ’ল বিশুদ্ধ চক্র৷ কামময় কোষকে জীবের স্থূল মন বলে৷ মনোময় কোষকে জীবের সুক্ষ্ম মন বলে৷  আর অতিমানস, বিজ্ঞানময় ও হিরন্ময় কোষ তিনটিকে একত্রে জীবের কারণ মন বলে৷

মানুষ! মানুষ ! হারায়ে হঁশ কোথায় চলেছ তুমি?

প্রফুল্ল কুমার মাহাত

একথা বলেছেন তারকব্রহ্ম, মহাসম্ভূতি শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী৷ তিনি  মানুষকে চরম হুঁশিয়ারী দিয়ে,আসন্ন মহাসঙ্কটের সাবধান বাণী শুনিয়ে  মহান পরিত্রাতারূপে প্রভাত সঙ্গীতের বজ্রগম্ভীর সুরে তার স্বরে দৃপ্তকন্ঠে একথা বলেছেন৷ বর্তমান মানব সমাজের অধিকাংশ মানুষের  চলার বিসদৃশ গতিবিধি দেখে যার পর নাই অসন্তুষ্ট, ক্ষুদ্ধ, রুষ্ট হয়ে বাধ্য হয়ে এহেন দৈববাণী শুনিয়েছেন৷