বহুল প্রচলিত একটি শব্দ আছে তা হলো ‘সংঘ শক্তি কলিযুগে’ কারণটা কি? কলিযুগ কাকে বলে সেটা জানা প্রয়োজন৷ কলিযুগ সেটাই যে যুগে নানা ঘাত প্রতিঘাতের মাধ্যমে অতি দুর্বল শোষিতরা ছিন্ন ভিন্ন হয়ে পড়ে আর যারা সম্পদশালী তাঁরা দুর্বলদের ওপর চরম অত্যাচার করে তাদের শেষ করে তাদের শেষ করে দিচ্ছে তবু তাদের চেতনা ফেরে না৷ সেই কারণেই বলা হয় যে কলিযুগে শোষিত জনগণ ধনকুবেরদের নির্মম শোষণের কারণে ধবংস হয়ে যাবে!
অদ্যাবধি দেখা গেল অন্য একটি প্রবাদ বাক্য ---বীরভোগ্যা বসুন্ধরা অর্থাৎ সম্পদশালী পৃথিবী হলো বীরেদেরই ভোগ করার স্থান৷ এটা কাদের মুখে শোনা যায়? যারা শোষক ও ধনী তাদের মুখে৷ মনে রাখা দরকার স্রষ্টার লক্ষ্য হলো তাঁর সৃষ্টিতে তাঁর সকলপ্রাণী, জীবজন্তু গাছপালা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হোক বিকাশ হোক তাঁর দেওয়া সম্পদ ভোগ করেই৷ এ সম্পদ কারোর পৈত্রিক (বাপের) নয়৷ কিন্তু সেটা হচ্ছে কই? এই কারণেই বেঁচে থাকতে হলে লড়াই করেই শোষিতদের বাঁচতে হবে৷ ঈশ্বরের দেওয়া সম্পদকে ভোগ করতে৷ কারণ সম্পদ হলো চির চঞ্চল তাকে আটকাতে হয়৷ প্রবাদেই আছে ‘লক্ষ্মীচঞ্চলা’ আজ আছে কাল নেই৷
দেখা গেছে লোভী অসংযমীরা সর্বদাই চিন্তা করে কত সম্পদ হরণ করা যায় ছল বল কৌশলে৷ তাই দেখা যায় শোষণের অভাবে পড়ে দুর্বলতার সম্পদ নানাভাবেই ধান্দাবাজদের হাতে তুলে দেয়৷ তাছাড়া এই পৃথিবীতে নানাভাবে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলাতে, সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে মারাত্মক অশান্তি সমাজে পাকিয়ে দুর্বল জনসমাজ নিজস্ব জন্মভূমি প্রাণের দায়ে বাধ্য হয়ে ত্যাগ করে যায় কারণ তাদের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করার শক্তি থাকে না বলেই৷ এর কারণটাই হলো ধনতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার মারাত্মক শোষণ! তাই দরকার বাঁচার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে থাকার৷ সেই কারণে বলা হয়ে সংঘবদ্ধ হয়েই বাঁচার লড়াই করা৷ অন্যায়টা মুখ বুঝে সহ্য করাটাও পাপ৷ তাই বলা হয় ---‘‘অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে তব ঘৃণা তারে যেন তৃণসম দহে৷৷’’ --- কবির কথায়!
এবার বলি শোষকের ছলের অভাব হয় না৷ এই বিরাট দেশ একসময় ঐক্যবদ্ধ ছিল৷ সেটি বিদেশী ইংরেজ ছল বল কৌশলে দখল নেয়৷ চরম শোষন করে নিজেদের জন্মভূমিকে সমৃদ্ধশালী করে৷ যখন এদেশের লোক বুঝলো তখন তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ করতে থাকলো৷ তখন কিছু দলবদ্ধ মানুষ যাঁরা নেতা তাঁরা তাঁদের সঙ্গে মিলে গিয়ে জন্মভূমিকে টুকরো টুকরো করে দলীয় স্বার্থে শাসনের সুবিধা নিল কিন্তু সেই হতদরিদ্র মানুষগুলো হলো আরো নিঃস্ব ও হত দরিদ্র উদ্বাস্তু৷ তারা বাঁচার জন্য চেষ্টা করলো কিন্তু ফল হল অন্য৷ দেশের ধান্দাবাজ রাজনৈতিক দলগুলির দেশীয় ধনীদের নিয়ে দেশশাসন চালালো তাতে হলো কী? দেশীয় রাজনৈতিক দল তারা শাসক হলো আর দেশীয় ধনীরা হলো শোষক লাভবান৷ তাই দীর্ঘ ৭৮ বছরে দেশ হলো শোষণের স্বর্গ রাজ্য! দুর্নীতির আগড়া বিশেষ৷ তাই আজ শোষিত নাগরিকদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাঁচার লড়াই করতে হবে৷ তা না হলে শোষিতদের আরো বিপদ! বর্ত্তমানে দেশটি দলতন্ত্রের শোষণে রক্তশূন্য হয়ে পড়েছে৷ ধনীদের হাতে প্রায় ৭০ শতাংশ সম্পদ৷ আর ১৪২ কোটি মানুষ শোষক দ্বারা শোষিত তারা বৃহত্তর অংশ৷ তাই আজ শাসকে শোষকে লড়াই! বিরোধীদের যারা এককালের শোষক তারা দলীয় স্বার্থেই ঐক্যবদ্ধ হতে সক্ষম হচ্ছে না৷ তারা নিজেদের মধ্যে দল ভাঙ্গাভাঙ্গী করছে৷ আর শোষকরা হাঁ হয়ে দেখছে! এখন সেই শোষিতদের কাজ হলো বোট দান করতে হবে সচেতন হয়ে৷ আর যারা শাসনে থেকে দীর্ঘবছর ধরে অন্যায় করছে তাঁদের পরিত্যাগ করে বোঝাতে হবে দেশের নাগরিকগণ ঐক্যবদ্ধ ও সচেতন! তাই বিরোধীরা সংখ্যায় কম হলেও তাঁদেরই বোট দেওয়া উচিত৷
- Log in to post comments