অমানবিক আহার

লেখক
জিজ্ঞাসু

আজকের সমাজের সর্বস্তরে ভুল আহারের কারণে দৈহিক-মানসিক ব্যাধির প্রকোপ বেড়ে যাচ্ছে---রক্ত, চামড়া, পাকস্থলী, হাড়, সন্ধি, ব্রেনের অসুখের কারণে ডাক্তার, হাসপাতাল ও ওষুধের পেছনে অর্থদণ্ড দিতে হচ্ছে, সময় নষ্ট হচ্ছে, শক্তি নষ্ট হচ্ছে৷ আজ শুধু ডিম ও মুরগী বিষয়ে লিখব৷ সস্তায় প্রোটিন, ভিটামিনের নামে ছেলে-বুড়ো সবাই ডিম খাচ্ছে৷ মুরগীর মলদ্বার থেকে বের হওয়া ডিম বস্তুটি আসলে তো আন-ফার্টিলাইজড্ অপুষ্ট, অসহায় এক পাখীর সম্ভাবনা৷ অপ্রকাশের অসহায় ক্রন্দনে যা ভরা থাকে৷ যার জন্ম হতে হতেও হতে পারল না৷ এবার জানাই কী অবস্থায় মুরগী ডিম দেয়৷ মুরগীর খাদ্য চাই, কিন্তু পোলট্রি মালিকদের শুধু ব্যবসায়িক লোভে অর্থ বাঁচাতে, মুরগীর দ্রুত ফুলে উঠতে, ওজন বাড়াতে ওদের মরা মুরগীর মাংস নুন জলে মিশিয়ে খাওয়ানো হয়৷ তাছাড়া মরা মুরগীর ছাল, চামড়া, রক্ত, মাংস, হাড় থেকে মল পর্যন্ত এই সব কিছুকে নিয়ে শুকিয়ে মেশিন দ্বারা পাউডার বানিয়ে ওই সব মেশানো বস্তুটিকে মুরগীকে খেতে দেওয়া হয়৷ এরপরে মুরগীটিকে আরও দ্রুত বাড়াতে নানারকম রাসায়নিক ইন্জেক্শন দেওয়া হয় যেমন---procain penicillin, oxitetracycline, tylosine, bacitracin, neomicine sulfate, steptomicine, virginamycine, linomycine, oleandomycine, bamberamycine ও ভ্রূণ জন্মাবার সাথে সাথেই স্টেরয়েড বিষ দেওয়া হয় কেবল দ্রুত ফুলে ওঠার জন্যে৷ এর ফলে ওই অস্বাভাবিক খাদ্য খেয়ে ও ওষুধের বিষে ওদের দেহ-মন তৈরী হয়৷ তার ওপর মৃত্যুর আগে পর্যন্ত ওরা বন্দী জীবন-যাপন করে৷ অসহায় হতাশার জীবন৷ তাই পুষ্ট বা অপুষ্ট ডিম হোক বা মুরগীর মাংসই হোক বেশীরভাগ বিষাক্ত রাসায়নিকে ভর্তি থাকে৷ প্রমাণস্বরূপ দেখে নিতে পারেন মুরগীটিকে কাটার আগে (খাঁচা থেকে বের করার পর) লক্ষ্য করুন পাখীটির বুক ও তলার দিকের পালক প্রায় নেই৷ ক্যানসারের ওষুধের বিষে যেমন মাথা ও গায়ের লোম উঠে যায় ঠিক তেমনি বিষাক্ত রাসায়নিক তাপে ও যন্ত্রণায় ওই পাখীর পালক উঠে যায়৷ অসহায়, অসুস্থ হতাশ এক প্রাণী৷ কিন্তু সর্বভুক৷ মানুষের ওইসব লক্ষ্য করার সময় নেই৷ চোখের সামনেই প্রাণীটিকে কেটে, ছাল ছাড়িয়ে, টুকরো টুকরো করে ব্যাগে ভরে ঘরে নিয়ে আসে৷  একবারও ভাবে না যে মানুষটি যতখানি প্রোটিন ভিটামিন খাচ্ছে তার চেয়ে বেশী খাচ্ছে ওই প্রাণীটিতে থাকা বিষাক্ত কেমিক্যালস্, মুরগীর রাগ, ভয়, হতাশা, হিংস্রতা ও মুরগীটির গোপন অসুখ৷ অতএব মুরগী ও ডিম খাওয়ার পূর্বে মানুষের বিকল্প পুষ্টির সাত্ত্বিক আহারে যাওয়ার সময় এসেছে৷ যাবতীয় শাক-সব্জি, ডাল, ফলমূল, শস্য খাদ্য থেকে বুদ্ধিমান মানুষ বিকল্প খাদ্য বেছে নিতে পারেন৷ বিকল্প আছেই৷ এবার মানুষ কবে যুক্তি-বুদ্ধি-বিবেকের ডাকে সত্য মানুষ হবেন, আমরা সেই আশায় থাকব৷ মানুষের অজ্ঞতার শেষ হোক, তার বুদ্ধি মুক্তি পাক, আরও মানবিক হোক মানুষ৷ পৃথিবী মা উদগ্র হিংসার তাপ থেকে কিছুটা মুক্তি পাক, শান্তি আসুক পৃথিবীতে---এই প্রার্থনা করব, দ্রুত মানুষের শুভবুদ্ধি আসুক৷