বাঁচাও বাঘরোল

লেখক
শ্রীপ্রদীপ রঞ্জন রীত

গ্রামীণ দক্ষিণবঙ্গের একটি বিপন্ন বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী হ’ল বাঘরোল৷ ইংরেজী নাম ফিশিং ক্যাট৷ অঞ্চলভেদে প্রাণীটির নাম গোবাঘা, বাঘাভাম ইত্যাদি৷ হাওড়া ও সন্নিহিত এলকার জলা ও জঙলা ভূমিতে এদের বেশী দেখতে পাওয়া যায়৷ এটি পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য প্রাণী বা স্টেট এনিম্যাল৷ খড়িবন, হোগলাবন বা জঙ্গলযুক্ত জলাভূমি এেেদর আদর্শ বসতিক্ষেত্র৷ রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ী ও কারখানা সম্প্রসারণের সঙ্গে সঙ্গে এদের বাসভূমিতে টান পড়েছে৷ ফলে এরা লোকালয়ে বেরিয়ে পড়ছে বা পড়তে বাধ্য হচ্ছে৷ প্রাণীটি সম্পর্কে গ্রামীণ মানুষের মধ্যে যুগ যুগ ধরে একটা আতঙ্ক আছে৷ সেই ভয় ও অসচেতনতা থেকে মানুষ এদের দেখা পেলে একে পিটিয়ে মারে৷ বসতভূমির হ্রাস ও মানুষের হাতে মার খাওয়া এই দুটো কারণে এদের সংখ্যা খুব কমে গেছে৷ অস্তিত্বের সংকটের মুখে পড়েছে প্রাণীটি৷ ‘বাঘ’ শব্দটি নামের সাথে যুক্ত থাকায় ও দেখতে কিছু সাদৃশ্য থাকায় অহেতুক আতঙ্কে করে  নিরীহ এই প্রাণীটি সম্পর্কে৷  দোষের মধ্যে জলা জংলাভূমির মাছ খায়৷ কিন্তু ইঁদুর খেয়ে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে৷ সাধারণ বিড়ালের থেকে কিছুটা বড় প্রাণীটিকে আসুন আমরা বাঁচিয়ে রাখতে উদ্যোগী হই৷ মূলত গ্রামীণ দক্ষিণ বঙ্গেই এদের দেখা মেলে৷ অতএব এই এলাকার মানুষের ওপরই দায়িত্ব বর্তায়---একে টিঁকিয়ে  রাখার৷

বাঘরোলকে অহেতুক ভয় পাবেন না, মারবেন না, মারতে দেখলে বাধা দিন৷ সঙ্গে সঙ্গে এলাকার বাঘরোল বাঁচিয়ে  রাখার সচেতনতা গড়ে তুলুন৷ নইলে বাঙলার রাজ্য প্রাণীটি অচিরে পৃথিবীর বুক থেকে বিলুপ্ত হবে৷