(২৪) ‘ভট্’ ধাতুর অর্থ ভরণ করা বা পরিপোষণ করা (To nourish)৷ ভাবারাঢ়ার্থে ভট্+ অচ্ করে ‘ভট’ ৰলতে ৰোঝায় যে ধারণ করে বা পরিপোষণ করে৷ যোগারুঢ়ার্থে ‘ভট’ শব্দের একটি অর্থ হচ্ছে বৈতনিক রাজকীয় সৈন্য যে অস্ত্র ধারণ করে রয়েছে৷
ৰলা হয়েছে ঃ
‘‘তয়োর্বিরোধোহয়ং উপাধি কল্পিতো
ন বাস্তবঃ কশ্চিদুপাধিরেষঃ৷
ঈশাদ্যমায়া মহদাদি করণং
জীবস্য কার্যং শৃণু পঞ্চকোষম্৷’’
*************************
‘‘এতাবুপাধি পর জীবয়োস্তয়ো
সম্যগ্ নিরাসেন পর ন জীবো৷
রাজ্যং নরেন্দ্রস্য ভটস্য খেটক
স্তয়োরপোহেন ভটো ন রাজা৷৷’’
অর্থাৎ পরম সত্তা ও জীবের মধ্যে পার্থক্যটা উপাধিগত৷ পরম সত্তার উপাধি সপ্তকোষাত্মক ও জীবের উপাধি পঞ্চকোষাত্মক৷ এই উপাধি দু’টোর কোনটাই শাশ্বত বা অবিনশ্বর নয়৷ জীবের ও পরম সত্তার উপাধি সরিয়ে দিলেই দু’য়ে এক হয়ে যায়৷ যেমন, যার হাতে খেটক (গদা) আছে আমরা তাকে ৰলি ‘ভট’ (সৈনিক)/ আর যার সঙ্গে ‘রাজা’ উপাধি সংযুক্ত আমরা তাকে ৰলি নরেন্দ্র (রাজা)৷ ভটের থেকে যদি গদারূপ উপাধি সরিয়ে নেওয়া হয় আর রাজা থেকে যদি রাজ্যরূপী উপাধি সরিয়ে নেওয়া হয় তা হলে দুই-ই তখন সাধারণ মানুষে পর্যবসিত হয়৷
(২৫) ‘ভট্’ ধাতুর অর্থ পালন করা বা পরিপোষণ করা৷ এই ‘ভট+ ড প্রত্যয় করে যে ‘ভ’ শব্দ পাই তার একটি মানে পরম ব্রহ্মের পালনকারী তন্ত্র অর্থাৎ বিষ্ণু৷
(২৬) ‘ভট্’ ধাতু+ ‘ক্ত’ প্রত্যয় করে পচ্ছি ‘ভট্ট’ শব্দ৷ ‘ত’ বর্গের সঙ্গে ‘ট’ বর্গের সংযুক্তি হয় না৷ তাই ‘ভট্+ ‘ক্ত’= ‘ভট্ত’ না হয়ে হবে ‘ভট্ট’৷ যিনি জ্ঞানকে ধারণ করে রয়েছেন তিনি ‘ভট্ট’ অর্থাৎ বিদ্বান৷ যিনি একাধারে জ্ঞানীও বটেন, আবার শিক্ষকও বটেন তিনি ভট্ট+ আচার্য= ভট্টাচার্য --- ৰাংলায় ‘ভট্চাজ্’৷
(২৭) ‘ভট্ট’ শব্দ থেকে আমরা ‘ভাট’ শব্দ পাচ্ছি৷ ‘ভাট’ মানে যিনি জীবিকাগতভাবে অন্যের গুণগান করে থাকেন৷ ৰাঙলার কোথাও কোথাও এই ভাটেরা কোন বৃক্ষে বা কোন উচ্চাসনে বসে কাঁসি ৰাজিয়ে মৃতের গুণগান করে থাকেন৷ এই ‘ভাট’ অর্থে যে ‘ভট্ট’ শব্দ তার জন্যেও ‘ভ’ ব্যবহৃত হবে৷ এই ‘ভাট’ ব্রাহ্মণদের কোথাও কোথাও ব্রহ্মভট্টও বলা হয়৷ (শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকারের লঘুনিরক্ত থেকে সংগৃহীত)