ভারতবর্ষের জনগণের ‘অচ্ছে দিন’-এর স্বপ্ণে এফ.আর.ডি.আই কি বৃহত্তম আঘাত?

লেখক
জ্যোতিবিকাশ সিন্হা

বর্তমানে সংবাদপত্র ও বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে সর্বাপেক্ষা চর্চিত বিষয়ের নাম এফ. আর. ডি. আই বা ফিনান্সিয়াল রেজলিউশন অ্যাণ্ড ডিপোজিট ইনসিওরেন্স বিল ২০১৭ বা আমানত বীমা বিল৷ সংসদের বাদল অধিবেশনে গত আগষ্টে এই বিলটি লোকসভায় পেশ হয়েছিল৷ বিরোধী দলগুলির দাবীতে বিলটি জে.পি.সি বা ‘যৌথ সংসদীয় কমিটিতে’ আলোচনার জন্যে পাঠানো হয়৷ জনসাধারণের আশঙ্কা, এই বিল আইনে পরিণত হলে ব্যাঙ্কে গচ্ছিত গ্রাহকদের আমানতের সুরক্ষা বিঘ্নিত হবে কারণ দেউলিয়া ঘোষণার মুখে থাকা ব্যাঙ্কে জমা টাকা ফেরৎ পাওয়ার ব্যাপারে ১০০ শতাংশ নিশ্চিততা থাকবে না৷ খসড়া বিলটির ৫২ নং ধারা অনুযায়ী---কোনো ব্যাঙ্ক দেউলিয়া ঘোষণার অবস্থায় এলে, ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা হিসাবে গ্রাহকের গচ্ছিত টাকা তাদের অনুমতি ব্যতিরেকেই বর্ধিত সময় আটকে রাখতে পারবে৷ শুধু তাই নয়, প্রয়োজনে সেই আমানত শেয়ার, ডিবেঞ্চার, বণ্ড ইত্যাদিতে বদলে দেওয়া যাবে৷ টাকা জমার সময়ে ব্যাঙ্ক ও গ্রাহকের মধ্যে মেয়াদ শেষে নির্দিষ্ট সুদ সমেত ফেরৎ দেওয়ার যে চুক্তি থাকে তাও কার্যকর হবে না অর্থাৎ এই রকম পরিস্থিতিতে ব্যাঙ্ক একতরফা ভাবে ওই চুক্তি বা সুদের হার বদলে দিতে পারবে৷ খসড়া বিলটিতে এই ‘বেইল ইন’ শর্ত বা আমানতকারীদের কষ্ট সঞ্চিত টাকা দিয়ে ব্যাঙ্ককে বাঁচানোর বিষয়টিই আপামর জনসাধারণকে আতঙ্কিত করেছে৷ বর্তমান ব্যবস্থায় কোনও একটি ব্যাঙ্কে গ্রাহকের যতগুলি অ্যাকাউণ্টে যত টাকাই জমা থাকুক না কেন, সেই ব্যাঙ্কে লাল বাতি জ্বললে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত ফেরৎ পাওয়ার নিশ্চয়তা রয়েছে৷ কারণ, গ্রাহক পিছু এক লক্ষ টাকা বীমা করা থাকে৷ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে বাকী টাকার ক্ষেত্রেও থাকে কেন্দ্রের অলিখিত গ্যারাণ্টি৷ ব্যাঙ্ক জাতীয়করণের পর সরকারী ব্যাঙ্কের ওপর মানুষের আস্থা ছিল যে ব্যাঙ্ক বিপদে পড়লে সরকার রয়েছে---তাই তাদের গচ্ছিত আমানতও ব্যাঙ্কে সুরক্ষিতই থাকবে৷ কিন্তু এই বিল আইনে পরিণত হলে ব্যাঙ্কে গচ্ছিত টাকা ফেরৎ পাওয়ার ক্ষেত্রে এক শত শতাংশ নিশ্চিত থাকতে পারবে না সাধারণ আমানতকারীরা --- এই আশঙ্কায় আতঙ্কিত রয়েছে দেশের জনসাধারণ৷

এখন দেখা যাক, ব্যাঙ্কগুলিতে লালবাতি জ্বালার পরিস্থিতি আসার কারণগুলি কি কি? অর্থনীতিবিদ্দের মতে কারণগুলি হ’ল---(১) ব্যাঙ্কগুলির ওপর রাজনৈতিক প্রভাব ও সরকারী ঋণ নীতি, (২) ব্যাঙ্কগুলিতে পরিচালন ব্যবস্থার খামতি৷(৩) মাত্রাতিরিক্ত অপচয়, (৪) ব্যাঙ্ক ঋণ পরিশোধের বিষয়ে সরকারী উদাসীনতা৷ ব্যাঙ্কগুলি জনসাধারণের সঞ্চিত অর্থ বিভিন্ন মেয়াদে সুদের বিনিময়ে আমানত হিসাবে গ্রহণ করে ও সেই আমানত সঠিকভাবে ঋণপ্রকল্পগুলিতে বিনিয়োগ করে সুদ উপার্জন করে৷ আমানত ও ঋণ উভয়ের সুদ এমনভাবে প্রয়োগ করা হয় যাতে ঋণের মাধ্যমে অর্জিত সুদ থেকে আমানতকারীদের গচ্ছিত ধনের সুদ মিটিয়ে, ব্যাঙ্কের সার্বিক পরিচালন ব্যয় নির্বাহ করার পরেও কিছু উদ্বৃত্ত লভ্যাংশ সরকার ও শেয়ার মালিকদের হাতে তুলে দিতে পারে৷ এই প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণতঃ অর্থনৈতিক ব্যাপার৷ কিন্তু এই বিষয়ে অনেক সময় রাজনৈতিক প্রভাব, সরকারী কর্তাব্যষ্টিগণের অঙ্গুলিনির্দেশের কারণে ব্যাঙ্কের ঊধর্বতন কর্তৃপক্ষ অনেক ক্ষেত্রে ব্যষ্টিগত স্বার্থরক্ষার তাগিদে ঋণ গ্রহীতার ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা না করার ফলে সেই ঋণগুলি সঠিকভাবে পরিশোধ হয় না৷ এছাড়া ব্যাঙ্কের বিভিন্ন স্তরের আধিকারিক ও কর্মীবৃন্দের গাফিলতি, দুর্নীতি ও নিয়মনীতির বিচ্যুতির ফলে সঠিক ঋণগ্রহীতা নির্বাচন, সময়োপযোগী ব্যবস্থা গ্রহণ, ঋণ পরিশোধের বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি ও প্রয়োজনে আইনানুগ পদক্ষেপ ইত্যাদি বিষয়ে খামতি থেকে যায় ও ঋণগুলি অনাদায়ী হতে শুরু করে৷ এই অনাদায়ী ঋণগুলি ক্রমশঃ অনুৎপাদক সম্পদ বা NPA)-তে পরিণত হয় ও শেষ পর্যন্ত ব্যাঙ্কের খাতা থেকে বাদ দিতে হয় যা লভ্যাংশকে প্রভাবিত করে৷ এছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দ্বারা দেশ শাসিত হওয়ায় যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে তারা তাদের পৃষ্ঠপোষক পুঁজিপতি, শিল্পগোষ্ঠীর স্বার্থরক্ষায় অর্থনীতি পরিচালনা করে ও ব্যাঙ্কগুলি থেকে সেই কর্পোরেট ক্ষেত্রসমূহ বিশেষ সুবিধা পায়৷ ব্যাঙ্কগুলির উচ্চতম স্তর থেকে তৃণমূল স্তর পর্যন্ত বহুবিধভাবে অর্থের অপচয় হয় যার অনেকটাই সঠিক পরিচালনার মাধ্যমে রোধ করা যায়৷ সরকারী কর্তাব্যষ্টিগণ ঋণদান ও ঋণ মকুবে যতটা উৎসাহী, ঋণ পরিশোধের বিষয়ে ততটা নয়৷ ফলে ইচ্ছাকৃত ঋণ-খেলাপীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা সম্ভব হয় না৷ ঋণ শোধ সংক্রান্ত আইনগুলির দীর্ঘসূত্রতার ফলে বহু অর্থের অপচয় হয় আইন আদালতের বিভিন্ন স্তরে৷এই সব আইনের ফাঁক গলে ও সরকারী বদান্যতার কারণে বড় বড় শিল্পপতি গোষ্ঠী হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যাঙ্ক ঋণ অনাদায়ী রেখে বহাল তবিয়তে দেশে বিদেশে ঘুরে বেড়ায় অথচ ছোট ছোট সাধারণ ঋণ গ্রহিতারা সময়মত ঋণ না পাওয়ায় কৃষি, ক্ষুদ্রশিল্প ও কর্মসংস্থান মার খায়৷ বর্তমান ব্যাঙ্ক ব্যবস্থায় প্রায় ২ লক্ষ কোটি অনাদায়ী ঋণ NPA)-এর সিংহভাগই রয়েছে বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠীদের হাতে৷ অথচ ব্যাঙ্ক বা সরকার তাদের কেশাগ্রও স্পর্শ করতে পারছে না৷ আর এই বিপুলNPA ব্যাঙ্কের লভ্যাংশ ধবংস করে ব্যাঙ্কগুলিকে ক্রমশঃ দেউলিয়া হওয়ার দিকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে৷ কেন্দ্রীয় সরকার কঠোর আইন-প্রণয়নের মাধ্যমে এই ঋণ খেলাপীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করলে আজ ব্যাঙ্কগুলির অবস্থা এই পর্যায়ে এসে পৌঁছাত না৷ কিন্তু এই সদর্থক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে কোনও কেন্দ্রীয় সরকারই আগ্রহী নয়৷ যার ফল ভুগতে হচ্ছে সাধারণ আমানতকারীদের যারা নিজেদের কষ্টার্জিত অর্থ, অবসরকালীন প্রাপ্ত শেষ সম্বল ব্যাঙ্কে গচ্ছিত রেখে দিনাতিপাত করেন৷ ঋণ থেকে প্রাপ্ত সুদের পরিমাণ কমে যাওয়ার ফলে ব্যাঙ্কগুলি আমানতেও সুদ ক্রমাগত কমিয়ে চলেছে৷ এছাড়াও কর্পোরেট ক্ষেত্রগুলির চাপে কেন্দ্রীয় সরকার ঋণে সুদের পরিমাণ কমানোর নীতি নেওয়ায় তার প্রভাবও পড়ছে আমানতে প্রদত্ত সুদের ওপর৷ সব মিলিয়ে সাধারণ আমানতকারী বিভিন্ন দিক থেকে আক্রান্ত৷ তাদের আয় ক্রমশঃ কমেই চলেছে৷ ব্যাঙ্ক রাষ্ট্রীয়করণের ফলে সরকারী গ্যারাণ্টির জন্যে আমানতের মূল অঙ্ক ফেরতের যে নিশ্চয়তা ছিল তা এই নূতন প্রস্তাবিত এফ. আর. ডি. আই বিলের ৫২ নং ধারার দৌলতে ধোঁয়াশায় আচ্ছন্ন৷ এইখানেই সাধারণ মানুষের মূল আশঙ্কা৷

শুধু তাই নয়, ব্যাঙ্কে গচ্ছিত আমানতের জন্যে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত বীমার নিয়ম চালু হয় ১৯৯৩ সালে৷ সেই সময় (২৫ বছর আগে) মানুষের সঞ্চয়ের গড় হিসাব করে এই অঙ্কের আমানত বীমা করা হয়৷ কিন্তু ২৫ বছর পরে এখন টাকার অবমূল্যায়ন, ক্রয়ক্ষমতাহ্রাস,মানুষের গড় আয় ও সঞ্চয় ক্ষমতা, ব্যাঙ্কে গড় আমানত বৃদ্ধি ইত্যাদি বিবেচনা করলে সেই এক লক্ষ টাকার বীমার পরিমাণ বাড়িয়ে ১০ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা করা উচিত৷ ভারতবর্ষের মত কল্যাণকামী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জনগণের স্বার্থ রক্ষাই সরকারের একমাত্র উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য---এই মর্মেই প্রত্যেক জনপ্রতিনিধি ভারতীয় সংবিধানের কাছে দায়বদ্ধ৷ কিন্তু বর্তমানে রাজনৈতিক দলগুলির গোষ্ঠীস্বার্থের যূপকাষ্ঠে জনগণের স্বার্থের বলি দিয়ে ধামাধরা পুঁজিপতি ও শিল্পপতিদের অঙ্গুলীহেলনে অর্থনীতিকে পরিচালিত করার চেষ্টা হচ্ছে৷ কেন্দ্রের বর্তমান সরকারকে সাধারণ মানুষ বিপুল ভোটে জয়ী করে ক্ষমতায় এনেছিলেন অনেক ‘অচ্ছে দিন’-এর স্বপ্ণ বুকে নিয়ে৷ বিপুল কর্ম সংস্থান, আমজনতার সার্বিক উন্নয়ন, কালো টাকা-কালোবাজারী ধবংস সহ বহুবিধ আশ্বাস ও শপথ নিয়ে এই সরকার কেন্দ্রে অধিষ্ঠিত হয়েছে৷ কিন্তু দেশ শাসনের তিন বছর পর সব ক্ষেত্রেই যেন একটা পরিকল্পনার অভাব ও হঠকারিতার ছাপ পরিলক্ষিত হচ্ছে৷ নোট বন্দী, হঠাৎ জি. এস. টি. চালু, সর্বক্ষেত্রে আধার কার্ডের প্রয়োগের মধ্যে বর্তমান সরকারের এই হঠকারিতার ছবিগুলোই পরিস্ফূট৷

নোট বাতিল পরবর্তী অধ্যায়ে প্রায় প্রতিদিন এক-এক রকমের নির্দেশনামায় জনগণ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল৷ হাজার হাজার মানুষ কর্মহীন, অন্নহীন, সম্বলহীন হয়ে দিন গুজরান করতে বাধ্য হয়েছে৷ নগদহীন বা ‘ক্যাসলেশ’ ও পরে লেশ ক্যাশ অর্থনীতি শতকরা ৭০ ভাগ অর্ধশিক্ষিত-অশিক্ষিত ভারতবাসীর কাছে গ্রহণযোগ্য হতে পারে নি---হওয়ার কথাও নয়৷ হঠাৎ করে জি. এস. টি. চালু করতে গিয়ে হাজার হাজার মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ে ও সাধারণ ব্যবসায়ী থেকে আপামর জনগণ কয়েকমাস ধরে এক বিভ্রান্তির রাজ্যে বসবাস করতে বাধ্য হয়েছিল৷ এখনও জনসাধারণের কাছে জি. এস. টি-র সম্যক চিত্র পরিষ্কার নয়৷ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউণ্ট, ফোন, বিমা, পেনশন, বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে আধার কার্ডের আবশ্যিকতা আর একবার মানুষকে বিভ্রান্ত করে চলেছে৷ বহু মানুষ পেনশন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন৷ এই বিষয়ে সংসদেও আলোচনা হয়েছে৷ এছাড়াও আধারের মাধ্যমে ব্যষ্টিগত তথ্য ফাঁসের বিষয়টিও খুবই মারাত্মক৷ সামান্য ৫০০ টাকার বিনিময়ে আধার তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়া, ওয়েব সাইটে আধার তথ্য প্রকাশিত হওয়া ইত্যাদি ঘটনা সাধারণ মানুষের ব্যষ্টিগত ও সম্পত্তির নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুতর বিষয়৷ সর্বশেষ সংবাদে প্রকাশ, একটি বিশেষ নম্বর ও মানুষের ছবির মাধ্যমে আধারের ব্যবহার ও তথ্য সুরক্ষিত করার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে৷ যাই হোক, প্রতিটি ক্ষেত্রে এই অস্থিরতা, মানুষের হয়রানি কোনও কল্যাণকামী রাষ্ট্রের নেতৃবৃন্দের কাছে কাম্য নয়৷ এ বিষয়ে যথাযথ সতকর্তা অবলম্বন না করলে সমূহ বিপদ---জনসাধারণের ও পক্ষান্তরে সরকারেরও৷

পরিশেষে বলতে চাই, ব্যাঙ্ক জাতীয়করণের মাধ্যমে তৎপূর্ববর্তীকালে প্রতিনিয়ত ব্যাঙ্কফেলের সঙ্গে পরিচিত ও আতঙ্কিত মানুষের কাছে ব্যাঙ্কের ওপর আস্থার বিষয়টি খুবই শক্তপোক্ত হয়েছিল৷ কিন্তু নোট বন্দীর পর থেকে ব্যাঙ্কে টাকা রেখে কোন কারণে বিপদের সময় প্রয়োজন মত টাকা তুলতে পারবে কি না---এই আশঙ্কা বর্তমানে মানুষের মনে বাসা বাঁধতে শুরু করেছে৷ কারণ যে কোনও রাত্রে ঘোষিত হতে পারে যে, পরের দিন সকাল থেকে নতুন নিয়মে ব্যাঙ্ক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা জমা-তোলা করতে হবে ও পরবর্তীকালে ওই নিয়মগুলিও বদলে যেতে পারে৷ অর্থাৎ একই সঙ্গে ব্যাঙ্ক, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ও সরকার সকলের ওপরেই বিশ্বাসের ভিত নড়ে গেছে৷ এখনও যেটুকু আস্থা ব্যাঙ্কের ওপর বেঁচে আছে এফ. আর. ডি. আই বিল আইনে পরিণত হলে তাও নিঃশেষিত হবে৷ তখন সাধারণ মানুষ জীবন ও সম্পদ দুই-য়ের নিরাপত্তার অভাবে ভুগবে৷ ব্যাঙ্কের সঞ্চিত টাকা যে কোন সময় অনিশ্চিত হতে পারে, আবার বাড়ীতে টাকা রাখলে চোর-ডাকাতের হানায় সম্পত্তির সঙ্গে জীবনহানিরও আশঙ্কা থাকবে৷ এমতাবস্থায় সমস্ত রাজনৈতিক দলকে (শাসক ও বিরোধী) যথেষ্ট বুদ্ধিমত্তা, বিবেচনা ও সতর্কতার সঙ্গে যে কোনও বিল বা আইন প্রণয়ন করতে হবে যাতে সাধারণ মানুষের জীবন, ধন, সম্মান সুরক্ষিত থাকে৷ একটা বিষয় সর্বদা মনে রাখতে হবে যে, গণতন্ত্রে শেষ কথা কিন্তু বলবে জনগণই৷ যতই ধনবল বা পেশীবলের দ্বারা জনগণকে দাবিয়ে রাখার চেষ্টা হোক না কেন---গণদেবতার বিস্ফোরণ কখন হবে কেউ জানে না৷ তাই রাজনীতির কারবারীরা সাবধান---নইলে রশিতে পড়বে টান, রাজপাট হবে খান্-খান্৷