ভারতীয় রাজনীতির করচা

লেখক
হরিগোপাল দেবনাথ

ভারতীয় প্রাচীন শাস্ত্রে রাজনীতির সংজ্ঞা নির্দেশ করতে গিয়ে বলা হয়েছে নীতিনাং রাজঃ ইত্যর্থে রাজনীতিরঃ’৷ অর্থাৎ মানুষের জীবনে অনুসরনীয় ও পালনীয় নীতিসমূহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ (রাজঃ) নীতিটাই হচ্ছে রাজনীতি৷ আবার নীতিঃ শব্দটির বুৎপত্তিগত মানে করলে দাঁড়াচ্ছে নী-ধাতুর সঙ্গে ক্তিন-প্রত্যয় যুক্ত হয়ে প্রথমা বিভক্তির একবচনে হচ্ছে নীতিঃ৷ নী-ধাতুর মানে---যে এগিয়ে নিয়ে চলে বা পথ দেখিয়ে চলে (ইংরেজী---টু লীড)৷ তাহলে রাজনীতিটা হল সেই নীতি বা আদর্শধারা তথা শ্রেষ্ঠ পন্থা যার মাধ্যমে মানুষের  বৈয়ষ্টিক তথা সমষ্টিগত বা সামূহিক জীবনে খণ্ডতা থেকে পূর্ণতার পথে, অসম্পূর্ণতা থেকে সম্পূর্ণতার পানে, অন্ধকার থেকে আলোর পানে এগিয়ে যাবার কাজ সম্পন্ন হয়৷ অর্থাৎ বৈয়ষ্টিক জীবনে  মানবতার পূর্ণত্ব প্রতিষ্ঠিত হতে হলে আবার সমষ্টিগত তথা রাষ্ট্রিক বা সামাজিক জীবনে  সামুহিক কল্যাণ প্রতিষ্ঠা করতে রাজনীতি আদর্শ পন্থা৷ আমাদের ইতিহাসভিত্তিক মহাকাব্য ‘মহাভারত’ ও পৌরাণিক মহাকাব্য ‘রামায়ণ’ ও রাজনীতি সম্পর্কে আমাদের  অনুরূপ শিক্ষাই দেয়৷ তারকব্রহ্ম শ্রীকৃষ্ণ ছিলেন আদর্শ শিক্ষক ও রাজনীতিবিদ, যার প্রমাণ আমরা পাই শ্রীমদভাগবদ গীতায়৷

আমরা সচরাচর রাজনীতির ইংরেজী প্রতিশব্দ হিসেবে পোলিটিকল শব্দটি ব্যবহার করে থাকি৷ কিন্তু প্রকৃত বিচারে বলতে হচ্ছে যে সংস্কৃত শব্দ রাজনীতি আর ইংরেজী শব্দ কিছুতেই সমার্থক হতে পারে না, যেমন ধর্ম ও রেলিজন বা ন্যাশন ও জাতি সমার্থক নয়৷ অক্সফোর্ড ডিকসনারীতে  পোলিটিকসের সংজ্ঞা হিসেবে বলা হয়েছে যে, পলিটিক্‌স হচ্ছে--- রাষ্ট্রের ঘটন ---প্রকৃতি, পরিচালন-ব্যবস্থা ও প্রশাসন সহ অন্যান্য রাষ্ট্রসমূহের সঙ্গে সেই রাষ্ট্রের নিয়মবদ্ধ সম্পর্ক রক্ষা করে চলার জন্যে বিজ্ঞান ও কলাশাস্ত্র৷

এছাড়া পাশ্চাত্য জগতের বিভিন্ন চিন্তাবিদ্‌গণ বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকেও পলিটিকস্‌ কথাটির ব্যাখ্যা করেছেন৷  কিন্তু, প্রাচীন ভারতীয় চিন্তাধারার সঙ্গে তাদের কারোরই সাদৃশ্য বা সামঞ্জস্য হচ্ছে না৷ তবে একথা অবিসংবাদিতরূপে প্রতিষ্ঠিত স্বাধীনোত্তর ভারতে প্রাচীন ভারতীয় শাস্ত্রকথা বা আদর্শ নিয়ে  এখন রাজনীতি চলার কোন প্রশ্ণই উঠে না৷ কারণ  মানুষ মাত্রেই অনুকরণপ্রিয় হয় আর আধুনিক ভারতবাসীর একটা স্বতঃসিদ্ধ ধারণাই বদ্ধমূল হয়ে রয়েছে৷--- ‘যা পাশ্চাত্ত্য জগতের৷ তা-ই তুলনামূলক বিচারে অধিকতর ভাল হবে৷ কারণ আধুনিক জড়কেন্দ্রিক ভোগবাদী সমাজ চাকচিক্যময় ও বর্হিমুখী চিন্তাধারাকে অধিকমাত্রায় পছন্দ করে চলেছে তাই, এদেশের অনেক কিছুর মতই, ভারতীয় রাজনীতির উপরে পাশ্চাত্য পোলিটিক্‌সের বার্ণিশটা এতটাই কড়াভাবে লেগেছে যে বাইরের বার্ণিশের চাপেই ভেতরটাও ফাঁপড়া হয়ে পড়ে বার্ণিশেরটানেই রঙ-চড়া হয়ে গেছে৷ সুতরাং বর্তমান ভারতেও যে প্রাচ্য আর পাশ্চাত্য বা অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে মানব-মননশীলতার যুগোপযোগী পরিবর্তন ঘটে যেতে বাধ্য সে কথা বলার জন্যে অপেক্ষা রাখে না৷

প্রাচীন ভারতে ভারতীয় রাজনীতির যে মর্যাদা বা স্ট্যাটাস তা’ ক্ষুণ্ণ্ হয়ে পড়ে৷ অবশ্য এরও পূর্বে মধ্য-প্রাচ্যের ইসলামী সভ্যতা আর পাঠান-মোগলদের শাসন প্রভাবটাকেও উড়িয়ে দেওয়া চলে না৷ আর ভারতবর্ষ মানবসভ্যতার সূচনা থেকে ‘‘দিবে আর নিবে মিলাবে মিলিবে৷ কেউ যাবে না ফিরে এই ভারতের মহামানবের সাগর তীরে’’--- এই নীতিতে বিশ্বাসী বলেই সবাই সাদরে সসম্মানে কোল পেতে ঠাঁই দেবার পক্ষপাতী বলে ভারতের  সভ্যতা বা সংস্কৃতি অনেকটাই গঙ্গানদীর মত---ভাল-মন্দ, পূত-পবিত্র আর পঁচাগলা-নোংরা সবই অকাতরে সে বহন করে চলে৷ ভারতের রাজনীতিতেও তাই ঘটেছে, বোধ হয়, এ সত্যটিও অস্বীকার করার যুক্তিসঙ্গত কোন উপায় নেই৷

মনে হয়, তবুও ভারত নিজেকে সামলে নিতে পারত, যদি বিদেশী হুঁকোতে তামাক না টেনে নিজস্ব হুঁকো-কল্কিতে ধূমপানের সুখটা পেতে চাইত৷ কিন্তু ওই যে, অন্ধ অনুকরণ প্রিয়তা! কথায় বলে না--- ‘একে তো নাচুনী বুড়ী তাতে আবার ঢোলের বাড়ি’৷ এই হল ভারতের দুরবস্তার অনবদ্যকারণ৷ ব্রিটিশ সেয়ানাদের সঙ্গে আমাদের দেশীয় নেতৃত্ব হালে পানি পেতেও পারতেন যদি গদীর মোহ, তোষামোদ-প্রিয়তা আর গোষ্ঠীস্বার্থটাকে সংযত রাখতে সক্ষম হতেন৷ ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে গোড়াতে তো  সকলেই কংগ্রেসী ছিলেন৷ সেই কংগ্রেসে ভাঙন ধরেছিল কেন কাদের কারসাজিতে ও কীভাবে? এ প্রশ্ণ কয়টির সঠিক  উত্তরের মধ্যেই নিহিত রয়েছে---ভারতের তৎকালীন সুনেতৃত্বের অভাবের উৎস বীজটুকু৷ আমরা স্বাভাবিকভাবে ব্রিটিশকেই ও তাদের ধূর্র্তমিপূর্ণ শঠতা, কপটতা, ‘ভাগ করো  শাসন করো---পলিসিকে দায়ী করে থাকি৷ তবে, একথাও কি উড়িয়ে দেওয়া চলে যে, আমাদের দেশীয় নেতৃত্বের ভিত্তিটা যদি আদর্শও নৈতিকতাপূর্ণ চিন্তাধারা প্রসূতই থাকত তাহলে সেই শক্ত জমিতে ব্রিটিশ দুরভিসন্ধিকারীরা এতটাই সহজে  হলকর্ষন দ্বারা ভূমি প্রস্তুত করে ওদের মনোবাঞ্ছা পূরণের জন্যে কাড়ি কাড়ি ফসল ঘরে তুলতে পারত না কিছুতেই৷

ব্রিটিশ বেনিয়ারা সওদাগিরির অছিলায় আমাদের দেশে এসে রত্নখনির সন্ধান পেয়ে গিয়েছিল৷ সেই রত্নখনিটা সাধারণ অর্থে বোঝায় এদেশের প্রাকৃতিক, খনিজ, কৃষিজ, জলজ ইত্যাদি সম্পদরাশি৷ কিন্তু, ব্রিটিশ-বেনিয়াদের চোখে এটাও লোলুপতা জাগিয়ে তুলেছিল, যখন ওরা  চাক্ষুষ করতে পেরেছিল--- এই দেশের মানুষগুলোর মধ্যে মূলতঃ ধর্মীয় গোঁড়ামি, অন্ধবিশ্বাস, কুসংস্কার নানারকমের  ভাবজড়তা (ডগমা), কূপমণ্ডুকতা, জাতপাত ভেদ, পারস্পরিক অবিশ্বাস ও অসহিষ্ণুতা ইত্যাদি৷ ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর প্রতিনিধিরা ও খ্রীষ্টমত প্রচারক পাদ্রীরা---উভয়ে মিলেই সেদিন হয়তো টের পেয়ে গেছল যে, বাঙলার মাটিতে হিন্দুত্ববাদ আর মুসলমানত্ব---দু’য়ের মাঝখানে যেমন অতি মসৃণাকারে হলেও একটা চিড়-রেখা ধরে গেছে তদ্রূপ আবার উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যেই একটা রেষারেষি মূলক প্রতিদন্দিতাও রয়েছে ক্ষমতার মিনারে আরোহনের নেশাগ্রস্ত হয়ে৷ আর, সম্ভবতঃ সেই ধারণা থেকেই তারা মাটি খোঁড়া শুরু করে দেয় ও উদ্দেশ্য সফল করে নেয় মাটির নীচ থেকে বাঙলার নবাবী মসনদ-লোভী জনাব মীরজাফরের৷ কালের গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার উপযুক্ত মুসাফির ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদীরা একদিন পুরো দেশটাই ওদের ঝুলিতে ভরে নিতে পেরেছিল শুধু যে বুদ্ধির আর ধূর্ত্তামির জোরে তাই বা কেমন করা বলা যাবে? ওদের সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসী নীতি নিয়ে আমাদের দেশটার অশিক্ষা, অজ্ঞতাজনিত কূপমণ্ডুকতা, স্বার্থচিন্তাজনিত লোলুপতা,লোলুপতার কারণে সাহেবদের মোসাহেবি করে উচ্ছিষ্ট-ভোজনের মানসিকতা, চাষা-ভূষা, গতর-খাটা শ্রমিক-মজুর, দীন-দরিদ্রদের বুভুক্ষা,তথাকথিত বড়লোকের  চোখে হেয় প্রতিপন্ন হয়ে থাকা আপামর অসহায় দুঃস্থ জনতার শোচনীয় দুর্দশা জনিত কারণে দেশবাসীদের মধ্যে ঐক্যবোধ ও সংহতি -চেতনার অভাবটুকুই সেদিন ব্রিটিশ প্রলুব্ধ করেছিল আরো বেশীমাত্রায়৷

কালের গতিতেই এস,এন,ব্যানার্জী, ডব্লিউ, সি, ব্যানার্জী প্রমুখদের হাত থেকে কংগ্রেসের নেতৃত্ব চলে গিয়েছিল এম.কে গান্ধীর হাতে৷ গান্ধীর ছত্রছায়ায় গড়ে উঠেছিল জে, নেহেরু আর নেহেরুর পাশাপাশি সেদিন আরেক মস্ত বড় পিলার দাঁড়িয়েছিলেন জিন্নাহ৷ বস্তুতঃ জিন্নাহ---নেহেরুর যোগসাজসে ও অন্যান্যদের সহযোগিতায় ভারতীয় রাজনীতিতে নোতুন মোড় এসে গিয়েছিল৷ তারপর, রাশিয়া থেকে কম্যুনিজম  নিয়ে এদেশে আবির্ভূত হয়েছিলেন এম, এন, রায়৷ উল্লেখ্য যে, ছাত্রজীবন থেকেই ব্যাষ্টিত্বসম্পন্ন, আত্মমর্যাদাপূর্ণ, অকৃত্রিম দেশপ্রেম, অধ্যবসায়, অনমনীয় মানসিকতার পূজারী সুভাষ চন্দ্র বসু বিলাত থেকে আই,সি এস পাশ করেছিলেন তাঁরই পিতার মনোভিলাষ পূর্ণ করার জন্যে৷ কিন্তুু তাঁর অন্তর দেবতাই তাঁকে  ফিরিয়ে এনেছিলেন তৎকালীন পরাধীন দেশমাতৃকার শৃঙ্খলমোচনের কর্মে৷ কিন্তু তখনকারই কলূষিত দেশীয় রাজনীতির ঘূর্র্ণবর্তে তিনি চক্কর খেতে খেতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন৷ সত্যিই, ভারতীয় রাজনীতিতে তখন যথেষ্ট পরিমাণে বেন জল ঢুকে গিয়েছিল৷ অগত্যা সুভাষচন্দ্রকে তখন কর্দমাক্ত গলি ছেড়ে ভিন্ন পথ ধরতে হয়েছিল৷ তা না হয়ে যদি দেশের মধ্যে ‘‘ব্রিট্রিশ হঠাও’’ ষ্ট্রাজেডির  পরিবর্তে ‘‘শোষণ হটাও’’ স্ট্রাটেজী  নেওয়া  হত,  তাহলে শোষণ হটাবার আন্দোলনের আগুনের তাপে বিদেশী শোষক ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদীরাও দেশ ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হত আর একই কারণে এদেশীয় শোষকরা অর্র্থৎ হিন্দী সাম্রাজ্যবাদী বর্ণচোরা মালিকরাও কাবু হয়ে পড়ত৷ তদুপরি ব্রিটিশরা তখন হিন্দু মুসলিম সাম্প্রদায়িকতার উস্কানির ভিত্তিতে দেশভাগের সুযোগটাও পেতনা--- দেশভাগও হত না বলে, প্রাউট-প্রণেতা দার্শনিক ও সমাজগুরু শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার  এক জায়গায় মন্তব্য করেছিলেন৷

কিন্তু, এদেশীয় পুঁজিপতিদের হাতে তখনই দেশের রাজনীতির চাবিকাঠিটা চলে গিয়েছিল বলে সেটি হবার সুযোগ মিলল না বলে যা’ হবার তা’ই ঘটল৷ এরপর, ব্রিটিশ-শাসকরা এখন ভারতে নেই, তবে পুঁজিবাদী শোষণ অব্যাহতই রয়ে গেল৷ পুঁজিবাদী গণতন্ত্র আর বিশ্বায়ণ আর সমাজ তিনটেই পুঁজিবাদেরই রবার স্ট্যাম্প৷ তাইতো, আজকের ভারতে ছোট আর বড় মাপের  কয়েকটি রাজনৈতিক দল দেশের রাজনীতিতে রীতিমত কিল বিল করছে আর রাজনৈতিক ক্ষমতা ওদের প্রত্যেকটি দলই হাতে পেতে কেবলই খাব্‌লাখাবলি করছে৷ ওদের মধ্য থেকে বেছে বেছে রুই, কাতলাৃ মৃগেল, ঘাস-কার্প তুলে দেশীয় পুঁজিপতিরা সময়ে সময়ে দেশ-পরিচালনার মসনদে বিগ্রহ বানিয়ে বসায় আবার প্রয়োজন ফুরোলে বিসর্জন দিয়ে নোতুন বিগ্রহকে আবাহন করেন৷ এই ট্র্যাডিশনই সমানে চলেছে৷ আর, দুরন্তগতিতে বন্‌বন্‌ করেই ঘুরছে শোষণের চাকা৷ শোষণের পেষণে আপামর ভারতবাসী শুধু যে লেজে গোবরেই হচ্ছেন তা কিন্তু নয়--- দম ফুরিয়ে আসছে অর্ধ-নগ্ণ বুভুক্ষু, অজ্ঞ অশিক্ষিত, সমাজ চেতনাহীন, ঠাঁই-হারা, বিনা-চিকিৎসায় মুমূর্ষু ভারতবাসীদের৷ অবশ্য নিয়মমাফিক--- শনির পাঁচালি, বিপত্তারিনী, শীতলা, চণ্ডী, কিংবা দুর্গতিনাশিনীর মন্ত্রপাঠ, লক্ষ্মীর পাঁচালি, সরস্বতীর পাঁচালি ইত্যাদির মত ‘মন কী বাত’ ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ ‘অচ্ছে ভারত স্বচ্ছ ভারত’ ইত্যাদি শ্লোগান রীতিমত শুনিয়ে বুভুক্ষু-মুমূর্ষদের চাঙ্গা রাখার ব্যবস্থা মজুত রয়েছে---সলতে  যাতে নিভে না যায় সেজন্যে এতটুকু তেল তো দিতেই হয়, তাই না?

অবশ্য, ‘ক্যাশলেশ ইন্ডিয়া’ বানাতে গিয়ে ব্যাংকগুলো ফাঁকা করে, টাকা তুলে নিয়ে গা ঢাকা দিয়ে রয়েছেন এ যুগের মর্ডান ইন্ডিয়া কোং-এর স্থপতিরা৷ আর তারাও অবশ্যই বহাল তবিয়তে ও খুশ-মেজাজেই রয়েছেন বলতে হবে, কেননা ইদানীং তো আন্না হাজারেজীরা ও রামদেব জী-রা  দুর্নীতি হটাবার আন্দোলনকে ঘুম পাড়িয়ে নিজেরাই বিশ্রাম নিচ্ছেন৷ দেশকাণ্ডারী নেতৃবর্গ লম্বা ঝাড়ু দেশপ্রেমিক ভাই-বোনদের হাতে তুলে দিয়ে সাফাই করে সব নোংরা-ময়লা আবর্জনা সাফ করে সুশ্রী ভারত উপহার দিয়েছেন দেশবাসীকে৷ অনেকের দু-বেলা পেট ভরে না খেলেও চলে যখন মিডিয়াযোগে দেখা যায় বা জানা যায় ডিজিটাল ইন্ডিয়ার মার্কিন প্রেসিডেন্টের সম্বর্ধনায় কোটি টাকা ব্যয় করে দুনিয়ার বুকে ভারতের মর্যাদা মঙ্গল গ্রহের কাছাকাছি পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়েছে৷ স্টেডিয়াম প্রস্তুত রয়েছে ও এর নামকরণও হয়েছে--- খেইল হবে --- দুনিয়া তাক্‌তে রহেগা--- দেশমাতাকী জয় হোনাই হ্যায় না ! বিলকুল খুব সুরত বন জায়গা, রথ তো চলা দিয়া হ্যায় হম্‌লোগ অব্‌ মন্দির বনায়েঙ্গে৷ আসমান সে আশীর্বাদ আ জায়গা, হমারা দেশ হরাভরা হো জায়গা৷ তবে, মৎ সুচিয়েগা, বেল বঢ়ে দেশ বঢ়েগা নহীঁ, ক্যায়োকি রেল তো বেচ দিয়া হুয়া দুসরোঁকো--- উনকা ফাণ্ড-ই  বঢ়েগা হমারা নহীঁ৷ হমারা বেচনেকা জমানা বঢ়তে হী জায়েগী৷ সংসদীয় গণতন্ত্রকো হম উজালা হী কর দেঙ্গে৷ তব সবকুছ অচ্ছা হো জায়গা! হম্‌ সবকে সাথ হ্যায় লেকিন বিকাশ সব্‌কা হোনা জরা মুসীবতকী বাত হ্যায়, বিকাশ তো হোনা হ্যায় সির্ফ কুছলোগোকা৷