চাই নোতুন নেতা, নোতুন পরিকল্পনা

লেখক
অরুণাভ গুপ্ত

জনগণের  যাঁরা প্রতিনিধি তাঁদের নীতিবাদী  হতেই হবে৷ জনগণের  প্রতিনিধি রূপ আইনসভায় গিয়ে জনগণের  স্বার্থে আইন পাশ করবেন, জনগণের সেবা করবেন--- এই কারণেই তাঁদের জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্র্বচিত  করা হয়েছে৷ এই কাজের  জন্যে  জনগণের কাছ থেকে ট্যাক্সরূপে সংগৃহীত অর্থ থেকে  তাঁদের বিপুল অংকের বেতন তথা ভাতা দেওয়া  হয়৷ রাজার মত সুযোগ সুবিধা তাঁরা ভোগ করেন৷

কিন্তু বর্তমানে গণতন্ত্রের কাঁধে চড়ে রাজার হালে যাঁরা থাকেন  এই সব জনপ্রতিনিধিরা জনগণের সেবা করার পরিবর্তে--- গরীবের টাকা  আত্মসাৎ করছেন৷ এই অভিযোগেই বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর নামে পশুখাদ্য কেলেঙ্কারীর মামলা চলেছিল৷ গত ৬ই জুন সি.বি.আই-এর বিশেষ আদালতে লালুজীর বিরুদ্ধে দেওঘর কোষাগার থেকে গরীবের মানুষদের পশুখাদ্য বিলি  করার ভুয়ো বিল দেখিয়ে ৮৯ লক্ষ টাকা তুলে নিয়ে আত্মসাৎ করার মামলার রায় বের হয়৷ এই মামলায় লালুজী ও তাঁর শাকরেদদের বিরুদ্ধে সরকারী অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ  সত্য প্রমাণিত হয় ও লালুজীর  সাড়ে তিন বছর জেল ও  ৫ লক্ষ টাকা  জরিমানা হয়৷ লালুজী সহ ষোল জনের  সাজা ঘোষণা করা হয়েছে৷

এর আগে ২০১৩ সালে চাইবাসা কোষাগার থেকে পশুখাদ্যের বিলের  নামের ভূয়ো বিল দিয়ে ও বিপুল অংকের অর্থ আত্মসাতের মামলায় তাঁর  ৫ বছর  জেল ঘোষিত হয়েছিল৷

এঁরা সমাজের ক্ষমতাশালী ব্যষ্টি৷ তাই অর্থ ও  ক্ষমতাবলে  তাঁদের বিরুদ্ধে আদালতে  সাজা ঘোষিত হলেও  উচ্চ আদালতে গিয়ে জামিনের ব্যবস্থা করে নেন৷

বর্তমান দেশের লোকসভার ৩৪ শতাংশের  সাংসদের বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা রয়েছে৷ তাঁদের বিরুদ্ধে খুন, জখম, নারী নির্র্যতনে প্রভৃতি গুরুতর অভিযোগ রয়েছে৷ এর আগের লোকসভাতে ২৪ শতাংশ সাংসদের বিরুদ্ধে এধরণের  গুরুতর  অপরাধের অভিযোগ ছিল৷

দেখা যাচ্ছে, রক্ষকরাই  ভক্ষক৷  তাহলে জনগণের  সেবার নাম করে এরা তো  জনগণকে  শোষণ করবে!

তাই ‘প্রাউটে’ বলা হয়েছে, ‘সদবিপ্র’ ছাড়া অন্য কাউকে  জনপ্রতিনিধি  করা চলবে না৷ ‘সদবিপ্র’ মানে হ’ল যারা কঠোরভাবে নীতিবাদী, সেবাব্রতী ও অন্যায়ের  বিরুদ্ধে  আপোষহীন সংগ্রামী৷ এ ধরণের  চরিত্রের মানুষকেই প্রাউট-প্রবক্তা ‘সদবিপ্র’ নাম দিয়েছেন৷

অন্ন, বস্ত্রাদি জীবনের নূন্যতম চাহিদা পূরণ ও  যোগ্যতা অনুসারে  ক্রয়ক্ষমতা লাভের অধিকার সবার আছে৷ সরকারকে তার গ্যারান্টি দিতে হবে৷

কিন্তু কাউকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে তার যোগ্যতা অবশ্যই দেখতে হবে৷ নাহলে সমাজের ক্ষতি হয়ে যাবে৷

আজকের সমাজের নানাবিধ সমস্যার সমাধানের জন্যে চাই ‘নোতুন মানুষ, নোতুন পরিকল্পনা’ ‘নোতুন মানুষ’ মানে হচ্ছে ‘সদবিপ্র’ চরিত্রের মানুষ৷ আর এটাও ঠিক,বর্তমানে  বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতারা হয় ধনতন্ত্র, না হয় মার্কসবাদের সমর্থক, অন্য কোনো বিকল্প পথ তাদের কাছে নেই৷ কিন্তু আসলে এই দুই পথের  কোনো পথের সমাজের সমস্যার  প্রকৃত সমাধান নেই৷ একমাত্র প্রাউটের পথেই সমস্ত সমস্যার সমাধান সম্ভব৷ তাই বলা হচ্ছে, আজকের  সমস্যার সমাধানের জন্যে চাই---নোতুন মানুষ, নোতুন পরিকল্পনা৷