জনগণের যাঁরা প্রতিনিধি তাঁদের নীতিবাদী হতেই হবে৷ জনগণের প্রতিনিধি রূপ আইনসভায় গিয়ে জনগণের স্বার্থে আইন পাশ করবেন, জনগণের সেবা করবেন--- এই কারণেই তাঁদের জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্র্বচিত করা হয়েছে৷ এই কাজের জন্যে জনগণের কাছ থেকে ট্যাক্সরূপে সংগৃহীত অর্থ থেকে তাঁদের বিপুল অংকের বেতন তথা ভাতা দেওয়া হয়৷ রাজার মত সুযোগ সুবিধা তাঁরা ভোগ করেন৷
কিন্তু বর্তমানে গণতন্ত্রের কাঁধে চড়ে রাজার হালে যাঁরা থাকেন এই সব জনপ্রতিনিধিরা জনগণের সেবা করার পরিবর্তে--- গরীবের টাকা আত্মসাৎ করছেন৷ এই অভিযোগেই বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর নামে পশুখাদ্য কেলেঙ্কারীর মামলা চলেছিল৷ গত ৬ই জুন সি.বি.আই-এর বিশেষ আদালতে লালুজীর বিরুদ্ধে দেওঘর কোষাগার থেকে গরীবের মানুষদের পশুখাদ্য বিলি করার ভুয়ো বিল দেখিয়ে ৮৯ লক্ষ টাকা তুলে নিয়ে আত্মসাৎ করার মামলার রায় বের হয়৷ এই মামলায় লালুজী ও তাঁর শাকরেদদের বিরুদ্ধে সরকারী অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হয় ও লালুজীর সাড়ে তিন বছর জেল ও ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা হয়৷ লালুজী সহ ষোল জনের সাজা ঘোষণা করা হয়েছে৷
এর আগে ২০১৩ সালে চাইবাসা কোষাগার থেকে পশুখাদ্যের বিলের নামের ভূয়ো বিল দিয়ে ও বিপুল অংকের অর্থ আত্মসাতের মামলায় তাঁর ৫ বছর জেল ঘোষিত হয়েছিল৷
এঁরা সমাজের ক্ষমতাশালী ব্যষ্টি৷ তাই অর্থ ও ক্ষমতাবলে তাঁদের বিরুদ্ধে আদালতে সাজা ঘোষিত হলেও উচ্চ আদালতে গিয়ে জামিনের ব্যবস্থা করে নেন৷
বর্তমান দেশের লোকসভার ৩৪ শতাংশের সাংসদের বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা রয়েছে৷ তাঁদের বিরুদ্ধে খুন, জখম, নারী নির্র্যতনে প্রভৃতি গুরুতর অভিযোগ রয়েছে৷ এর আগের লোকসভাতে ২৪ শতাংশ সাংসদের বিরুদ্ধে এধরণের গুরুতর অপরাধের অভিযোগ ছিল৷
দেখা যাচ্ছে, রক্ষকরাই ভক্ষক৷ তাহলে জনগণের সেবার নাম করে এরা তো জনগণকে শোষণ করবে!
তাই ‘প্রাউটে’ বলা হয়েছে, ‘সদবিপ্র’ ছাড়া অন্য কাউকে জনপ্রতিনিধি করা চলবে না৷ ‘সদবিপ্র’ মানে হ’ল যারা কঠোরভাবে নীতিবাদী, সেবাব্রতী ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপোষহীন সংগ্রামী৷ এ ধরণের চরিত্রের মানুষকেই প্রাউট-প্রবক্তা ‘সদবিপ্র’ নাম দিয়েছেন৷
অন্ন, বস্ত্রাদি জীবনের নূন্যতম চাহিদা পূরণ ও যোগ্যতা অনুসারে ক্রয়ক্ষমতা লাভের অধিকার সবার আছে৷ সরকারকে তার গ্যারান্টি দিতে হবে৷
কিন্তু কাউকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে তার যোগ্যতা অবশ্যই দেখতে হবে৷ নাহলে সমাজের ক্ষতি হয়ে যাবে৷
আজকের সমাজের নানাবিধ সমস্যার সমাধানের জন্যে চাই ‘নোতুন মানুষ, নোতুন পরিকল্পনা’ ‘নোতুন মানুষ’ মানে হচ্ছে ‘সদবিপ্র’ চরিত্রের মানুষ৷ আর এটাও ঠিক,বর্তমানে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতারা হয় ধনতন্ত্র, না হয় মার্কসবাদের সমর্থক, অন্য কোনো বিকল্প পথ তাদের কাছে নেই৷ কিন্তু আসলে এই দুই পথের কোনো পথের সমাজের সমস্যার প্রকৃত সমাধান নেই৷ একমাত্র প্রাউটের পথেই সমস্ত সমস্যার সমাধান সম্ভব৷ তাই বলা হচ্ছে, আজকের সমস্যার সমাধানের জন্যে চাই---নোতুন মানুষ, নোতুন পরিকল্পনা৷
- Log in to post comments