চলন বিল

Baba's Name
শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকার

অবিভক্ত ৰাঙলার সবচেয়ে ৰড় বিল (ঝিল lake) ছিল চলনৰিল৷ এটি আংশিকভাৰে রাজশাহী ও আংশিকভাবে পাৰনা জেলায় অবস্থিত৷ বর্ষার এর আয়তন কোন কোন সালে ১৫০ বর্গমাইলের মত হয়ে যেত৷ ছড়ায় আছে---‘‘গ্রামের মধ্যে কলোম (মতান্তরে, কলোন), বিলের মধ্যে চলন৷’’ রাজশাহী জেলার কলোম গ্রামটি ছিল বাঙলার সৰচেয়ে ৰড় গ্রাম আর এই চলনবিল ছিল সৰ চেয়ে ৰড় হ্রদ৷ ৰাঙলার দ্বিতীয় বৃহত্তম ও পশ্চিম ৰাঙলার সর্ববৃহৎ হ্রদ হচ্ছে মুর্শিদাৰাদ জেলার কাঁন্দি মহকুমায় অবস্থিত হিজলবিল৷ এই হিজলবিল, ৰড় হিজল ও ছোট হিজল এই দুই অংশে বিভক্ত৷ ময়ূরাক্ষী ও দ্বারকা নদীর অববাহিকায় ভাগীরথীর গা ঘেঁষে এর অবস্থিতি৷ নিকটবর্তী রেল-ইষ্টিশান হচ্ছে কাটোয়া-- আজিমগঞ্জ শাখার চৌরিগাছা৷ বর্ধমান জেলার কাটোয়া মহকুমার ‘ৰড়বিল’ (এ বিলটি ভাগীরথীর পরিত্যক্ত গর্ভদেশে উদ্ভূত), মুর্শিদাৰাদ নদীয়া সীমান্তের কালান্তর ৰিল ছাড়াও নদীয়া জেলার চাকদা থানা ও কৃষ্ণনগরের উত্তরাংশেও এককালে কয়েকটি ৰড় ৰড় বিল ছিল৷ চাকদার বিলটিও ভাগীরথীর পরিত্যক্ত গর্ভদেশে উৎপন্ন হয়েছিল৷ এই বিলটি এককালে শোলা উৎপাদনে বিশ্বের সেরা ছিল৷ আনুমানিক ২০০০ বছর আগে ৰাঙলায় আরও দুটি ৰড় ৰড় বিল ছিল---ক্ষণজন্মা বিল ও দক্ষিণকণিকা বিল৷ ক্ষণজন্মা বিল ও দক্ষিণকণিকা বিল পরে নদীবাহিত ৰালি ও পলিমাটিতে ভরাট হয়ে যায়৷ আজ তারা প্রায় সম্পূর্ণভাবেই ভরাট হয়ে গেলেও জমি কিছুটা নীচু রয়েই গেছে৷ তাই ধান ৰড় একটা মারা যায় না৷ ক্ষণজন্মা বিলের পরবর্ত্তী নামকরণ হয় খন্যানের জলা ও দক্ষিণকণিকা বিলের নাম---ডানকুনির জলা৷ মুজাফফপুর শহরে অনতিদূরে লখনদেই নদীর অববাহিকায় যে বিলটি রয়েছে (বিহারের স্থানীয় ভাষায় ‘ম-অ ন-ইংরেজীতে (Mawn), সেটিও বেশ ৰড়৷

ৰাঙলার সবচেয়ে ৰড় মনুষ্যসৃষ্ট হ্রদ হচ্ছে বাঁকুড়া জেলার সমুদ্রবাঁধ৷ এই হ্রদটি থেকেই আমোদর নদী বহির্গত হয়ে গড়মন্দারণের কাছ ঘেঁষে দামোদরে এসে মিশেছে৷ বাঁকুড়া জেলার ভগলদীঘি বাঁধটিও (রাণী ৰগলাসুন্দরী এটি কাটিয়েছিলেন) মর্যাদায় কম নয়৷ পুকুরের সংখ্যার গৌরব অনেক গ্রামই করতে পারে৷ তবে এ গৌরবের অন্যতম গ্রাম হচ্ছে বীরভূমের বাণীওর গ্রাম৷

                             (শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার রচিত লঘুনিরক্ত থেকে সংগৃহীত)