মাটিতে জন্ম নিয়েছি বলেই তো মাটি আমাদের রক্তে মিশে গেছে৷ কারণ এই মাটিই আমাদের অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা , চিকিৎসা ও বাসস্থানের সকল ব্যবস্থা করছে৷ তাইতো সংস্কৃতে বলা হয়, ‘‘জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্র্গদপি গরীয়সী৷’’ তাই যে মানুষ যেখানে জন্মগ্রহণ করে তার কর্ত্তব্য হলো সেই মাটি ও সেই এলাকার মানুষদের প্রতি তার কৃতজ্ঞ থাকা ও তাদের কল্যাণে আত্মনিয়োগ করা৷
তার ভাষা ধর্মমত বর্ণ, যাইহোক না কেন, তার নৈতিক দায় হলো তাঁকেই মাতৃজ্ঞানে শ্রদ্ধা করা৷ কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গেই বলতে হয় বেশ কিছু মানুষ সেই দেশ মায়ের প্রতি মানবিকতার কল্যাণময়ী সেবা না দিয়ে বেইমানী ও বিশ্বাস ঘাতকতা করে তাঁরই ক্ষতিসাধন করে৷
ইতিবৃত্তে এর ভুরী ভুরী উদাহরণ রহে গেছে৷ তারাই হয় মীরজাফর ৷ এদের জন্যই দেশ জননী পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ হয়েছেন এককালে৷ এই বাঙলার পলাশীর প্রান্তর হলো তারই উৎকৃষ্ট উদাহরণ ৷ রবার্ট ক্লাইভ মাত্র ৫০০ সৈন্য নিয়ে নবাব সিরাজের ৫০,০০০ সৈন্যকে যুদ্ধের প্রহশনে হারিয়ে দেয় বিশ্বাসঘাতক সেনাপতি মীরজাফরের বেইমানীর কারণে৷ পলাসীর প্রান্তরে দেশের স্বাধীনতার সূর্য্য অস্তমিত হয়৷ তার পরের ইতিবৃত্ত তো দেশবাসীর জানা৷
ইষ্টইন্ডিয়া কোম্পানীর রবার্ট ক্লাইভ হয়ে গেল লর্ডক্লাইভ আর বিশ্বাসঘাতক মীরজাফর হলো বাঙলা , বিহার , উড়িষ্যার নবাব! তার পরিণতি টা কি হয়েছিল তা দেশবাসীর জানা৷ সেই বিশ্বাস ঘাতকতার ফলে সারা ভারতবর্ষ একদিন ইংরেজ শাসনে আসে৷ সেই ইংরেজকে বিতাড়িত করতে সচেতন দেশবাসীকে যাতনা কষ্ট সহ্য করতে হয়৷ কতো যে প্রাণ চলে গেছে তার ইয়ত্তা নেই৷ সহিংস ও অহিংস আন্দোলনে৷ সংগ্রামটি ছিল দেশের পূর্ণ স্বাধীনতা লক্ষ্যে৷ নেতাজী সুভাষ তরুণ দেশপ্রেমিক এটাকে উপলদ্ধি করেই কংগ্রেসের ইংরেজের প্রতি নরম মনোভাবকে মেনে নিতে পারেননি৷ কংগ্রেসও সুভাষচন্দ্রকে মেনে নিতে পারেনি৷ গান্ধী গোষ্ঠীর চক্রান্তের কারণে দল ত্যাগ করে ফরোয়ার্ড ব্লক ঘটন করেন৷ শেষে উপায়ন্তর না দেখে দেশ ত্যাগ করে সুভাষচন্দ্র বিদেশে পাড়ি দেন৷ তিনি মহান বিপ্লবী রাসবিহারী বসুর সহায়তায় আজাদ হিন্দ বাহিনীর সর্বাধিনায়ক হয়ে ভারতের দ্বারপ্রান্তে উপস্থিত হন৷ মণিপুরের মৈরানে তিনি ইংরেজ সৈন্যকে পরাজিত করে ভারতবর্ষের বুকে স্বাধীন পতাকা উড্ডীন করেন৷ কিন্তু দ্বিতীয়বার ইংরেজ সৈন্যদের কাছে পরাজিত হন৷ তিনি আই এনএ বাহিনীর সহায়তায় ছদ্মবেশে পাড়ি দেন ভিনরাষ্ট্রে৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয় ১৯৪৫-এর মাঝামাঝির সময় দিকে৷ ইংরেজ সর্বশান্ত হয় এই মহাযুদ্ধে, আর পৃথিবীর প্রচুর ক্ষতি সাধন হয়৷ লক্ষ মানুষ মারা যায়৷ তবে এই মহাযুদ্ধ পৃথিবীর বুক থেকে ঔপনিবেশীক সাম্রাজ্যবাদের ধবংসের পথ করে দেয়৷
তারই ফলে ভারতবর্ষকে সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে ইংরেজ পাকিস্তান ও হিন্দুস্তান হিসাবে ভাগ করে৷ তবে ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রকে ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসাবে ঘোষনা করেন৷ এটা হওয়া উচিত ছিল ধর্মমত নিরপেক্ষ রাষ্ট্র৷ আজও ভারত বিদ্বেষকে মূলধন করে পাকিস্তান একটা কট্টর জঙ্গী রাষ্ট্র হিসাবেটিকে আছে৷ ভারতকে কয়েকবার আক্রমণ করে পরাজিত হয়েও তার লজ্জা নেই তাই ৩৭০ ধারা বাতিলের পর মিঃ ইমরান যুদ্ধ করার হুমকী দেন৷ এই অর্বাচীন যে সে দেশের অন্ধদের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছেন সেটা তাঁর জ্ঞান নেই৷ তাই বলি তিনি কেমন ক্রিকেটার আর কেমন রাজনীতিবিদ? অন্যরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক গলান৷ কশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ সেটা আটকে রেখে তো তিনি আক্রমণকারী৷ সেটাকে ত্যাগ করে কথা বলুন৷ সেই এলাকার মানুষদের জঙ্গী তৈরী করে ভারতের বুকে রক্তগঙ্গা বহানোটা পাকিস্তানের কাজ৷ ভারত কোনদিন বাহিরের রাষ্ট্রকে আক্রমণ করেনি৷ এটা পঞ্চশীল নীতির বাহিরে৷
তবে ভারত জানে নিজের দেশের ঐক্য সংহতি সম্মান কি করে রক্ষা করতে হয়৷ আজও ভারত প্রবল শক্তিশালী৷ ভারতকে আক্রমণ পাকিস্তানকে তার জন্যে যথেষ্ট মূল্য দিতে হবে৷ আল্লাহ/পরমপুরুষ এদের শুভবুদ্ধি দিন! এই সব বেইমানীদের প্রতি নজর রাখাটা ভারতের জনগণের কর্ত্তব্য৷ তাদের শুভের দিকে আনয়ন এর চেষ্টা করাটা আশু প্রয়োজন৷
- Log in to post comments