ৰঃ (১) ‘ড’ প্রত্যয়যুক্ত ‘ৰ’ শব্দটি আমরা পাচ্ছি মুখ্যতঃ ‘ৰণ’ ‘ৰট্’ ও ‘ৰল্’ ধাতু থেকে৷ ‘ৰণ্’ ধাতুর অর্থ ৰনৰন শব্দ করা, ৰোঁ ৰোঁ শব্দ করা---আবার সাধারণ অর্থে যে কোন শব্দ করা৷ জলের অস্তিত্ব তার বিভিন্ন প্রকার ধবনিতে কল্-কল্-কল্, খল্-খল্-খল্, ছল্-ছল্-ছল্, ছলাৎ-ছলাৎ-ছলাৎ, টিক-টিক-টিক, টপ-টপ-টপ, পট্-পট্-পট্, ঝম-ঝম-ঝম ইত্যাদি শব্দের দ্বারা নিষ্পন্ন হয়৷ এই শব্দ-উৎপাদনকারী ঐশ্বরীয় শক্তি বিশেষকে প্রাচীনকালে ৰলা হত ৰরুণ দেবতা৷ তাই ‘ৰণ্’ ধাতু+ ‘ড’ প্রত্যয় করে যে ‘ৰ’ শব্দ পাচ্ছি তার ভাবারাড়ার্থ হ’ল ‘ৰরুণ দেবতা’৷
(২) ওই একই অর্থে ‘ৰণ্+ ‘ড= ‘ৰ’ ৰলতে ‘জল’কেও ৰোঝায়৷
(৩) জলের বৃহত্তম আধার হচ্ছে সমুদ্র৷ তাই ‘ৰণ্’ ধাতু+ ‘ড’ প্রত্যয় করে যে ‘ৰ’ শব্দ পাচ্ছি তার দ্বিতীয় অর্থ হচ্ছে ‘সমুদ্র’!
(৪) কেউ যখন জল পান করে তখন চুমুক দেবার সময় চুক-চুক-চুক, চক-চক-চক, সুঁ-সুঁ-সুঁ বা এই ধরণের কোন একটা ধবনি উদগত হয়৷ তাই একদিকে যেমন জলপানকারী ‘প’-কেও ‘ৰ’ বলা হয় অন্য দিকে তেমনি যে পাত্র থেকে জল পান করা হয় (জলপাত্র বা গেলাস) তাকেও ‘ৰ’ ৰলা হয়৷
(৫) যখন কোন পাত্র থেকে গেলাসে জল ঢালা হয়, জল ঢালবার সময় এক ধরণের শব্দ উত্থিত হয় যা জলপানকারীর শব্দ থেকে ভিন্ন৷ তাই যে পাত্র থেকে জল ঢালা হয় (জগ---jug) তাকে ‘ৰ’ ৰলা হয়৷
(৬) জল যে নলের সাহায্যে বাহিত হয় সেই নল বা পাইপকেও pipe) ‘ৰণ্’ ধাতু+ ‘ড’ প্রত্যয় করে ‘ৰ’ ৰলা হয়৷
(৭) নলযুক্ত যে পাত্র জল নিকাশ করে, সেই পাত্রকে ‘ৰ’ ৰলা হয়৷ যেমন, গাড়ু, ৰদনা প্রভৃতি৷
(৮) ‘ৰট্’ ধাতুর অর্থ ৰেড়ে যাওয়া, শক্তি সঞ্চয় করা, শক্তি প্রদর্শন করা৷ ‘ৰট্’ ধাতু+ ‘ড’ প্রত্যয় করে যে ‘ৰ’ শব্দ পাচ্ছি তার ভাবারূঢ়ার্থ হচ্ছে ‘যা ৰেড়ে যায়’ ‘যা শক্তি সঞ্চয় করে’ অথবা ‘যে শক্তি প্রদর্শন করে’৷
(৯) ৰটগাছ অশেষভাবে বেড়ে যায়৷ তাই ‘ৰট+‘ড’= ‘ৰ’-এর একটি অর্থ ৰটগাছ (banyan tree)৷ বট> ৰড়> ৰড়৷ বিহার, উত্তরপ্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশে সাধারণ মানুষের ভাষায় ৰটগাছকে ‘ৰড়’ ৰলা হয়--- ফার্সী ও উর্দু ভাষায় ৰলা হয় ‘ৰরগদ্’৷ ৰটবৃক্ষ একটি বর্দ্ধমান প্রজাতির বৃক্ষ৷ সে ক্রমশই বেড়ে যায়৷ বিশ্ব ৰট্ বাbanyan-এর নানান প্রজাতি রয়েছে৷ তাদের মধ্যে চৈনিক প্রজাতি ও ভারতীয় প্রজাতি প্রধান৷ ভারতীয় প্রজাতির গুঁড়িতে (banyan indica) ৰট দ্রুত ঝুরি২ নাৰাতে থাকে৷ এই ঝুরিগুলি পরবর্তীকান্সে গুঁড়িতে পরিণত হয়৷ এক একটি ৰটবৃক্ষে প্রচুর সংখ্যক গুঁড়ি দেখা যায়৷ এমনও হয়ে থাকে যে কয়েক হাজার বছর পরে মূল ঝুরিকে হয়তো উই৩ বা ‘শোঁ’ পোকা খেয়ে ফেলেছে কিন্তু সেই সময় ৰটবৃক্ষটি গুঁড়িতে পরিণত ঝুরির সাহায্যে ৰহাল তৰিয়তেই রয়েছে৷ হাওড়ার বোটানিক্যাল গার্ডেনে যে বটগাছটি ও নদীয়া জেলার ৰাগচী-জমশেদপুরের কাছাকাছি জায়গায় অবস্থিত যে ৰটগাছটি রয়েছে তারা ৪০০০ বছরের বেশী পুরোণো ৰলে অনুমিত হয়৷ দ্বিতীয়োক্তটির বয়স আরও কিছু বেশী হলেও হতে পারে৷ (শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকারের লঘুনিরক্ত থেকে সংগৃহীত)