দলতান্ত্রিক সরকার দেশকে কঠিন অবস্থায় এনেছে তাই নাগরিকগণ আরো সচেতন হোন

লেখক
প্রভাত খাঁ

বর্তমানে স্বদেশী শাসন চলছে এদেশে৷ যাঁরা শাসনে আছেন তাঁরা একাধিক দলতন্ত্রের ধারক ও বাহক৷ দলীয় রাজনীতিটাই হলো সেই গণতন্ত্রের নামে নানা মতাদর্শের নামাবলি গায়ে৷ নানা দলের জোটবদ্ধ সরকার আর স্বার্থের লড়ালড়ি আর খেয়োখেয়ীতে মত্ত৷ অন্যদিকে দেশবাসীর সিংহভাগ মানুষই চরম ধনতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার কেন্দ্রীভুত মারাত্মক শোষণের চরম যন্ত্রণায় কাতর! এ যেন আর দেখা যায় না! চরম মিথ্যাচারিতা আর দুর্নীতির আড়ৎ হয়ে দাঁড়িয়েছে খণ্ডিত ভারত যুক্তরাষ্ট্র! আজ জাতীয় সব দলই ধবংস হয়েছে বর্তমান দলগুলো তাদের খণ্ডিত অংশ নানা নামে হাজির!

এই দলের মধ্যে দু’চারটে যারা একটু মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে কি কেন্দ্র আর কি রাজ্যগুলিতে সেখানেও চলছে এক দলীয় কেন্দ্রীকতার মানসিকতা৷ যেন কেউই কাউকে সহ্য করতে পারে না নামেই গণতন্ত্র! মোদ্দাকথা হলো আর্থিক উন্নয়ন ও জনগণের কল্যাণের লক্ষণই যেন নেই! এই বহুভাষাভাষির দেশে ও বহু ধর্মমতের দেশে ঐক্য ও সংহতি আনার জন্যই প্রথম গণপরিষদের সদস্যগণ সংবিধান রচনা করেন৷ তার সভাপতি ছিলেন বাবা সাহেব আম্বেদকর৷ সেখানে প্রথমেই করা হয় ভারত যুক্তরাষ্ট্র একধর্ম নিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক দেশ৷ ইন্দিরা গান্ধী ভারত যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৭৫ সালে অভ্যন্তরীণ জরুরী অবস্থা জারি করেন৷ স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশের নিয়ম কানুনকে অগ্রাহ্য করেই৷ তিনি ১৯৭৬ সালে ভারতকে এক বিশাল কারাগারে পরিণত করে ৪২তম সংবিধান সংশোধন করেন তাঁর একদলীয় লোকসভায়! সেটা হলো মারাত্মক ক্ষতিকারক সংবিধান সংশোধন মাত্র ২৬ বছর পর এই ২৬ বছরে জওহরলাল নেহেরু ও ইন্দিরা নিজেদের দলীয় স্বার্থে সংবিধানে কাটাছেড়া করেছে ৪২ বার৷ প্রতিবাদ করার কী কোন বিরোধী দল ছিল না! যৎসামান্য ছিল তাঁদের প্রতিবাদকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে মান্যতা দেওয়া হেয়নি৷ এই হলো এদেশের গণতন্ত্র দলতন্ত্রের মোড়কে! মনে রাখা দরকার ২০১৫ সালের মধ্যে সংবিধান সংশোধন হয়েছে প্রায় ৯৯ বার৷ সংবিধান সৃষ্টি হয় গণপরিষদ দ্বারা৷ আর সেই গণপরিষদকে অস্বীকার করে দলবাজিকে প্রাধান্য দিয়ে তাঁকে ক্ষত বিক্ষত করে ছেড়েছে! এই কাজটাই হয়েছে স্বদেশী শাসকদের দ্বারা! আর কিছু নয়! অতীব লজ্জার কথা হলো দলীয় সরকার কি করে বাড়ানো যায় আর ধনীদের সেবক হয়ে কি করে তাদের আয় বাড়ে! আর হতদরিদ্র নিম্ন মধ্যবিত্ত ও গরিবদের কি করে নানা কর চাপিয়ে শাসকদলের আয় বাড়ানো যায়! এটাই বেশী করে দেখা গেল বিজেপির শাসনে৷ এরা সংবিধানটাকে একেবারে ধবংস করে হিন্দত্ববাদী সংবিধান করতেই এবারে ৩৭০ ও তার বেশী আসন বাড়াতে এতো ছলাকলা করেছে ২০২৪ নির্বাচনে৷

এরা গণতন্ত্রের যে মূল কথা ‘মানবতাবাদ’ সেটাকে অস্বীকার করে সাম্প্রদায়িকতার বধারক ও বাহক হয়েছে৷ বর্তমানে প্রবীন নাগরিকগণ অত্যন্ত চিন্তিত ও খুবই উদ্বিগ্ণ হয়ে আছেন৷ লোকসভায় সাসপেণ্ড করে সংবিধান-এর আইন পাশ করেছে৷ এটা গণতন্ত্র বিরোধী কাজ সেটার দিকে স্বার্থান্বেষী দলগুলোর নজরই নেই৷ সেই পবিত্র কাজ-এর দায় কিন্তু আজ সচেতন বোটারদেরই৷ এই কথাটাই অনেক প্রবীন সচেতক নাগরিক মনে করেন৷ নির্বাচন এলেই গদী বাঁচাতে ঐ সব ধান্দাবাজ দলের নেতা ও নেত্রীদের ঘুম চলে যায় আর চিৎকার করে শুধু গদী বাঁচাতে বোট কাড়তে৷ এরা সব কতই না নাগরিকদের উন্নয়নে ব্যস্ত৷ এদেশে কোন শাসকদলই জনগণের কথা ভাবে না৷ শুধু তাই নয় কেন্দ্র সরকার তো সংবিধানে উল্লেখিত রাজ্যকে বিশেষ করে বিরোধী দলের সরকার প্রাপ্য টাকা আটকে রাখে যাতে জনগণের কাছে রাজ্য সরকারগুলো অপদার্থও হেয় বলে তাদের উপর থেকে সমর্থন তুলে নেয়৷ দল ধবংস হয়েছে অতীতে৷ আজ সেই একই পথের পথিক এই বর্তমানে কেন্দ্র সরকার হিসাবে সংবিধানকেই পুরো পালটিয়ে এমন করবে যাতে মহান ভারত যুক্তরাষ্ট্রটাই ধবংস হয়! সেটার দিকে দলগুলির নজর নেই৷ আসলে ভারতে কোন রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় এলে গণতন্ত্রে যে বিরোধী দলের একটা ভূমিকা আছে সেটা ভুলে যায়৷ তাই দল ভুলে নাগরিকগণকে সচেতন হতে হবে৷ তবেই দেশ বাঁচবে৷