সম্পাদকীয়

২৩শে জানুয়ারীর শপথ

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

মহাকালের কালচক্রে দিন, মাস, বছর নিয়মিত আসে যায়৷ কিন্তু এরই মধ্যে বছরের এক একটা দিন এমনই স্মরণীয় হয়ে থাকে যে, আমরা এটিকে পবিত্র দিন হিসেবে গ্রহণ করতে বাধ্য হই৷ এমনি একটা পবিত্র দিন ২৩শে জানুয়ারী–নেতাজী জয়ন্তী৷ এই দিন নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর পুন্য জন্মদিন, যিনি আজীবন দেশের পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতার জন্যে কঠোর তপস্যা করে গেছেন৷

বিশ্বের যাবতীয় জাগতিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক সম্পদের সর্বাধিক উপযোগ গ্রহণ করতে হবে, ও যুক্তিসঙ্গত বণ্টন করতে হবে৷

স্থূল জগতে, সূক্ষ্ম জগতে ও কারণ জগতে যা কিছু সম্পদ নিহিত আছে তার উৎকর্ষ সাধন করতে হবে জীব কল্যাণে৷ ক্ষিতি–অপ–তেজ–মরুৎ্–ব্যোম পঞ্চতত্ত্বের যেখানে যা কিছু লুকানো সম্পদ রয়েছে তা ষোল আনা সদ্ব্যবহারের প্রচেষ্টার মাধ্যমেই এর উৎকর্ষ সাধিত হবে৷ জল–স্থল–ন্তরীক্ষ তোলপাড় করে’ মানুষকে প্রয়োজনের উপাদান খুঁজে বের করে’ নিতে হবে–তৈরী করে’ নিতে হবে৷

মানুষের আহূত সম্পদ বিচার–সম্মতভাবে মানুষের মধ্যে বণ্টন করে’ দিতে হবে, অর্থাৎ সর্বনিম্ন প্রয়োজন সবাইকার তো মেটাতে হবেই, অধিকন্তু  গুণীর ও বিশেষ ক্ষেত্রে বিশেষ মানুষেরও প্রয়োজনের কথা মনে রাখতে হবে৷১১

আনে৷ নৈতিকতার ভিত শক্ত করে, বিবেককে সদা জাগ্রত রাখে৷ তখনই সমাজের যথার্থ কল্যাণ ও শান্তি আসে৷

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

বর্তমান সমাজের নেতা-নেত্রীরা, বুদ্ধিজীবীরা যাঁরা সমাজের মাথা বলে জনসাধারণ মনে করে’ তারা কিন্তু এই ধর্ম সম্পর্কে অনীহা পোষণ করেন৷ তাঁরা নিজেদেরও সমাজের চালক হিসেবে মনে করেন৷ বলা বাহুল্য এদের এই ধর্ম সম্পর্কে অনীহাই বর্তমান সমাজের সমস্ত সমস্যারই মূলে৷ কারণ মানুষ যদি যথার্থ মানুষ না হ’ল, তারা যদি সততা নৈতিকতা, ন্যায়-সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত না হ’ল তারা তো স্বীয় ক্ষুদ্র স্বার্থসিদ্ধির জন্যে সমাজে নানান কুকর্ম করবেই৷ পারিবারিক ও সামাজিক হিংসা দ্বেষ, দুর্নীতি, শোষণ----এ সবকিছুর মূল তো এটাই৷

নববর্ষের আবেদন

শুভ নববর্ষ৷ সবাইকে আন্তর্জাতিক নববর্ষের প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাই৷ ২০২১ সাল পেরিয়ে ২০২২ সালে পা দিলুম৷ আমরা কোথায় আছি? পেছনের দিকে তাকিয়ে আমরা কী দেখছি? একদিকে এক শ্রেণীর ধনিক ও উচ্চবিত্ত শ্রেণীর বিপুল বিলাসিতা, পাশাপাশি জনসাধারণের বৃহদংশের চরম দারিদ্র্য ও বেকারত্ব৷ দুর্নীতিতে সারা দেশ ভরে গেছে৷ গরীব মানুষের টাকা লুঠে নিচ্ছে জনপ্রতিনিধির মুখোসধারী এক শ্রেণীর ভদ্র লুঠেরা৷ অথচ এঁরাই সমাজে নেতা বলে পরিচিত৷ মনে হয় মানুষ এখন তার মনুষ্যত্ব হারিয়ে বিবেক বিচারবুদ্ধিহীন পশুতে পরিণত হয়ে যাচ্ছে৷

উন্নয়ণের মাপকাঠি

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

জিডিপি (গ্রস ডোমেস্টিক প্রডাক্ট) করে উন্নয়নের ঢাক পেটাচ্ছেন নেতামন্ত্রীরা৷ কিন্তু জিডিপির সঙ্গে আমজনতার সম্পর্ক কতটুকু৷ জিডিপি কমা, বাড়ার সঙ্গে দেশের সার্বিক বিকাশ নির্ভর করে কি? পুঁজিবাদী দুনিয়ায় যেখানে সম্পদের সিংহভাগ দখল করে বসে থাকে  মুষ্টিমেয় কয়েকজন সেখানে জিডিপি দেখিয়ে উন্নয়নের দাবী চরম মিথ্যাচারিতা৷

দেশের যথার্থ-অর্থনৈতিক উন্নয়ন কোন্‌পথে?

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

নববর্ষের সূচনায় দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ণের দিকে তাকিয়ে দেখা দরকার৷ বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় বসার পর অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তার কতটুকু বাস্তবায়িত হয়েছে তা নূতন করে বলার অপেক্ষা রাখেনা৷ একদিকে আত্মনির্ভরতার শ্লোগান ও পুঁজিপতি তোষণ রাষ্টের সম্পদ বেসরকীকরণ--- যার পরিণতি পুঁজিপতিদের উন্নয়ন  সাধারণের আর্থিক দুর্দশা৷ প্রকৃত উন্নয়নের পথে এই সরকার হাঁটে না---এটা স্পষ্ট৷ তাহলে যথার্থ উন্নয়নের পথ কি?

প্রগতিশীল সমাজতন্ত্রই বিকল্প পথ

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় পুঁজিপতি পরিচালিত শিল্পের একটা বড় রোগ হ’ল, বিভিন্ন অজুহাতে শ্রমিক ছাঁটাই ও হঠাৎ কারখানায় তালা ঝুলিয়ে দেওয়া৷ যার ফলে বহু শ্রমিক হঠাৎ কর্মহীন হয়ে পড়ায় তাদের পরিবারকে অশেষ দুর্ভেগের মুখে পড়তে হয়৷ বহু ক্ষেত্রে তারা অনাহারে, অপুষ্টিজনিত বিভিন্ন রোগে মারা যায় বা আত্মহত্যা করে, সাংসারিক অশান্তি থেকে রেহাই পাাবার রাস্তা খুঁজে নেয়৷

আর্থিক উন্নয়ণের মাপকাঠি

জিডিপির হার বৃদ্ধি নিয়ে অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর দাবীকে নস্যাৎ করে সম্প্রতি ভারতীয় অর্থনীতির করুণ চিত্রটি তুলে ধরেছে প্যারিস স্কুল অব ইকনমিকস্‌ এর ওয়ার্ল্ড ইনইক্যুয়ালিটি ল্যাব৷ ল্যাবের সমীক্ষার বিশ্ব অসাম্য প্রতিবেদনে ভারতে অর্থনৈতিক বৈষম্যের চিত্রটি তুলে ধরা হয়েছে৷ সেখানে দেখানো হয়েছে ২০২১ সালে দেশের মোট আয়ের পাঁচভাগের এক ভাগ গিয়েছে মাত্র এক শতাংশ মানুষের হাতে৷ নীচের দিকে পঞ্চাশ শতাংশ মানুষের দিন কাটছে মাত্র তের শতাংশ নিয়ে৷ বছরে মাথাপিছু আয়ের নিরিখে বৈষম্য তুলে ধরে দেখানো হয়েছে নীচের দিকের পঞ্চাশ শতাংশ মানুষের আয়ের তুলনায় উপরের সারির দশ শতাংশ ধনি মানুষের আয় বিশগুণ বেশী৷ ওই সমীক্ষায় গত তিনবছ

আনন্দনগরে দীপাবলী অনুষ্ঠান

৪ঠা নভেম্বর আনন্দরেখা ভবনে দীপাবলী উপলক্ষ্যে ছয় ঘন্টা ‘ৰাৰা নাম কেবলম্‌’ অখণ্ড কীর্ত্তন অনুষ্ঠিত হয়৷ মিলিত ঈশ্বর প্রণিধান ও স্বাধ্যায়ের পর দীপাবলীর তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে বক্তব্য রাখেন আচার্য মোহনানন্দ অবধূত, আচার্য কল্যাণেশ্বরানন্দ অবধূত৷ কিষন সিং সুদ প্রমুখ৷ স্বরচিত কবিতা পাঠ করে শোণান আচার্য মুক্তানন্দ অবধূত৷

 

অর্থনৈতিক গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা চাই

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

প্রচলিত অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মধ্যে থেকেই  বিভিন্ন ভাবে কি কেন্দ্রীয় সরকার কি রাজ্য সরকার দরিদ্র্য জনসাধারণের সমস্যা সমাধানের নামে নানান পাঁয়তারা কষছেন, নানা ধরণের চমক দিয়ে চলেছেন৷ কিন্তু স্বাধীনতার পর ৭৪ বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেল আজও গরীব জনসাধারণের দুর্দশার অন্ত নেই৷ আসলে পুঁজিবাদ বা মার্কসবাদ–এদের কোনটাই দরিদ্র্য মানুষের যথাযথ কল্যাণ করতে পারবে না৷ প্রাউটের অর্থনৈতিক গণতন্ত্রই একমাত্র বিকল্প৷