প্রবন্ধ

আলু চাষীদের সমস্যা সমাধান কোন্ পথে

আচার্য তন্ময়ানন্দ অবধূত

এ বছর আলুর ফলন ভালই হয়েছিল৷ আলুর ফলন দেখে আলু চাষীরা প্রথমে উৎসাহিত হয়েছিলেন কিন্তু আলুর ঠিকমত দাম না পাওয়ায় আলু চাষীদের মনে হতাশা দেখা দেয়৷ কারণ আড়াই টাকা তিন টাকা কিলো দরে আলু বেচে আলুর উৎপাদন খরচই উঠবে না৷ তাই অনেকে মাঠ থেকে আলু তোলেন নি অনেকে মাঠে আলু তুলে মাঠেই ডাঁই করে ফেলে রেখেছেন৷ এমন অবস্থায় অকাল বর্ষণের ফলে, আলু পচতে শুরু করেছে মাটি যত শুকোবে পচন ততই বাড়বে৷ এ অবস্থায় আলু চাষীদের মাথায় হাত কী করে মহাজনের কাছ থেকে বা ব্যাঙ্ক থেকে ধার করা টাকা শোধ করবেন---তা নিয়ে দারুণ দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে৷ অনেকে হতাশায় মানসিক অবসাদে ভুগছেন, কেউ কেউ এর মধ্যে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন৷

চলিতেছে সার্কাস

সুকুমার সরকার

জীবজন্তু নিয়ে সার্কাস দেখানো এখন প্রায় নিষিদ্ধ৷ তাই বিভিন্ন মেলায় মানুষ এখন খুব একটা সার্কাস দেখতে যায় না৷ কিন্তু মানুষের মনের মধ্যে সার্কাস দেখার একটা প্রবণতা রয়ে গেছে৷ বর্তমান ভারতবর্ষের মানুষের এই প্রবৃত্তির নিবৃত্তি ঘটছে৷ সংসদদের প্রেক্ষাগৃহে সাংসদদের দেখে যেন আজব এক চিড়িয়াখানা! দর্শক আমরা সাধারণ মানুষেরা আর বিচিত্র এই সার্কাসের রিং মাষ্টাররা হচ্ছেন কর্পোরেট পুঁজিপতিরা৷ তাদের এই অঙ্গুলীহেলনে নাচছি সবাই কি দর্শক, কি দর্শনীয় সকলেই!

বসন্তোৎসব

শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকার

বসন্তোৎসব সারা ভারতের উৎসব–উত্তর ভারতে ‘হোলি’, বিহার অঞ্চলে ‘ফাগুয়া’ ও বাংলায় ‘দোলযাত্রা’৷ আদিতে এই উৎসব ছিল মূলতঃ আর্যদের৷ প্রাচীন আর্যদের বাসভূমি ছিল মধ্য এশিয়ায়৷ এই অঞ্চলটা ছিল ভীষণ ঠাণ্ডা৷ সারা শীতকাল কেবল বরফ পড়তো, এটা ছিল আর্যদের দুঃসহ কষ্টের কাল৷ নিদারুণ ঠাণ্ডায় মানুষ জবু–থবু হয়ে মরার মত পড়ে থাকতো, কোন কাজকর্ম করতে পারতো না৷ এই শীতকালটা যখন বিদায় নিত, আর্যরা তখন আনন্দে উৎসবে মেতে উঠতো৷ ‘উৎ’ মানে আনন্দে লাফিয়ে ওঠা আর ‘সব’ মানে ‘জন্মগ্রহণ করা’৷ আক্ষরিক অর্থেই বসন্তের আগমনে আর্যরা প্রাণচঞ্চল হয়ে উঠতো, হৈ–হুল্লোড়, ও কর্মচাঞ্চল্যে মেতে উঠতো৷

সেবা, পরিষেবা ও ব্যবসা

জ্যোতিবিকাশ সিন্হা

সেবা বলতে আমরা বুঝি যে কাজ নিঃস্বার্থে করা হয়, যে কাজের বিনিময়ে কোন কিছু প্রত্যাশা করা হয় না৷ উদাহরণস্বরূপ বলা যায় আর্তজনের সেবা, বিপদগ্রস্তকে সাহায্য, দরিদ্র নারায়ণের সহায়তা ইত্যাদি৷ সেবার মাধ্যমে অপর জনের অভাবকে শ্রম, অর্থ, বুদ্ধি তথা মানসিক ও মানবিক সহায়তা দিয়ে নিঃস্বার্থ ভাবে পূরণ করে দেওয়ার প্রয়াসই প্রকৃত মনুষ্যত্বের পরিচয়৷ যখন অর্থ বা অন্য কিছুর বিনিময়ে অপরের জন্যে কাজ করা হয় তাকে বলে পরিষেবা৷ পুরসভা অর্থ বা করের বিনিময়ে নাগরিকদের যে কাজগুলো করে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন, পরিবহন, শিক্ষা, ব্যাঙ্ক, ডাক ও তথ্য প্রযুক্তি বিভাগের কাজকর্ম ইত্যাদি হল পরিষেবা---এককথায় যেগুলোকে বলা হয় service secto

প্রকৃত ধর্ম মানুষে মানুষে বিভেদ মানে না, কোনরকম অন্ধবিশ্বাস, কুসংস্কারও মানে না

সত্যসন্ধ দেব‌

বর্তমানে ধর্মের নামে নানান ধরণের গোঁড়ামী, জাত–পাতের ভেদ ও সাম্প্রদায়িক বিভেদ ও বিদ্বেষ চলছে৷ এগুলিকে ধর্মের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ বলে বলা হচ্ছে৷ তা কিন্তু মোটেই ঠিক নয়৷

আবার সম্প্রতি সংবাদে প্রকাশ কোথাও কোথাও ধর্মের নামে শিশুবলি পর্যন্ত হচ্ছে কিন্তু এগুলির কোনটাই প্রকৃত ধর্ম নয়৷ কোনরকম যুক্তিহীন, অমানবিক কার্যকলাপের সঙ্গে ধর্মের কোনও সংযোগ থাকতে পারে না৷

মহান আত্মত্যাগ ও বীরত্বের এক জ্বলন্ত নিদর্শন মাষ্টারদা সূর্য সেন

অম্বর‌ চট্টোপাধ্যায়

ভারতের স্বাধীনতা বিপ্লবের এক জ্বলন্ত নিদর্শন মাষ্টারদা সূর্য সেন৷ মাষ্টারদা সূর্য সেনের অকল্পনীয় আত্মত্যাগ, বীরত্ব ও দেশপ্রেম যে কোনো আদর্শবাদী মানুষের কাছে প্রেরণার প্রজ্জ্বলন্ত অগ্ণিশিখা ৷

১৯৩০ সালের ১৮ই এপ্রিল, তিনি চট্টগ্রামে ৬৫জন সঙ্গী নিয়ে ব্রিটিশদের দুটি অস্ত্রাগার, পুলিশ লাইন, ডাক ও তার অফিসের সশস্ত্র অভিযান চালিয়ে ব্রিটিশদের পরাস্ত করেন৷ ওই সব অফিসে ব্রিটিশ পতাকা ইয়ূনিয়ন জ্যাক নামিয়ে ভারতের পতাকা উড়িয়ে দেন ও নিজেকে স্বাধীন ভারতের চট্টগ্রাম শাখার প্রধান রূপে ঘোষণা করেন৷

দেশে ভ্রষ্টাচারের ঘূর্ণিপাকে রাজনীতি খাবি খাচ্ছে

হরিগোপাল দেবনাথ

আধুনিক গণতন্ত্রের যুগে, সাম্য, মৈত্রী স্বাধীনতা, ভ্রাতৃত্ব ইত্যাদি নিয়ে পৃথিবীর কোণায় কোণায় জনসভা, আলোচনা চক্র, সামিট, কনগ্রিগেশন, বোঝাপড়া, সালিশী কত কিছু চলেছে৷ জি-গোষ্ঠীর উপদেশ, হিতৈষণা, কমনওয়েলথ বা জেনেভায় প্রভাবশালীদের নেতৃত্ব ও মানবমুক্তির কথা, বলতে গেলে, এখন হালে পানি পাচ্ছে না৷ বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার প্রয়াসে মুখ থুবড়ে মাটিতে পড়ে গিয়ে রাষ্ট্রসংঘের হাউইবাজি এখন ব্যাঙ-বাজির ভূমিকায় ব্যাসার্ধহীন কেন্দ্র-পরিক্রমা করে চলেছে৷ পৃথিবীর রাষ্ট্রবিজ্ঞানী সমেত তাবড় দার্শনিক প্রবরকুল ও চিন্তানায়কেরাই অস্থির৷ কীভাবে একটা সুস্থ ও সুষ্ঠু পথ বের করা যায়, যাতে করে দুনিয়ার মানবসমাজটার একট

ভারতে আই এসের থাবা - এই অশুভ শক্তিকে প্রতিহত করতে সকল ভারতীয়কে সরতাজের মত দৃঢ়চেতা হতে হবে

মুশাফির

গত ৮ই মার্চ ভারতের প্রায় সব সংবাদপত্রের শিরোনামে একটা সংবাদ আসে৷ তা হল লক্ষ্নৌয়ের সন্নিকটে ভূপাল-উজ্জয়িনী প্যাসেঞ্জারে ৭ই মার্চ যে বিস্ফোরণ ঘটে সেটা আই এসের জঙ্গীরা ঘটায়৷ এখানে পুলিশের সঙ্গে যে লড়াই হয় তাতে মারা পডে সইফুল্লাহ নামে ২০ বছরের এক যুবক৷ টানা ১২ ঘণ্টার লড়াইয়ের পর জঙ্গীটি মারা যায়৷

সদ্বিপ্র সমাজকে ঠেকাতে পুঁজিপতিদের নয়া কৌশল

সুকুমার সরকার

যোগী মহারাজ যোগের উচ্চাসন ছেড়ে উত্তরপ্রদেশে রাজ-সিংহাসনে বসেছেন৷ এ নিয়ে ভারতীয় সমাজ-রাজনীতি আজ দ্বিধা বিভক্ত হিন্দুত্ববাদীরা মহা উল্লাসিত ৷ তারা ভাবছেন, এবার উত্তরপ্রদেশে ধর্মের ধবজা পত্পত্ করে উড়বে৷ অহিন্দুত্ববাদী বা সেকুলারবাদীরা ক্ষুব্ধ তারা ভাবছেন এবার ভারতীয় মিলন-সংসৃকতিতে সংকীর্ণতার বীজ বপন হবে ৷

পুঁজিবাদী আগ্রাসনের অবসান কোন্ পথে

আচার্য সত্যশিবানন্দ অবধূত

আজ সমাজের সর্বক্ষেত্রে দেখা দিয়েছে অবক্ষয়, শোষণ, নির্যাতন একজনকে বঞ্চিত করে আর একজন তার কাঙ্খিত দ্রব্য পেতে চায় ফলে শুরু হয়েছে অবাধ প্রতিযোগিতা সমাজের অধিকাংশ মানুষের প্রতি বঞ্চনার ওপর তৈরী হচ্ছে মুষ্টিমেয় ধনিক শ্রেণীর প্রাচুর্যের ইমারত ফলে স্বাভাবিকভাবে জমছে ক্ষোভ সমাজের বৃহত্তম অংশের এই ক্ষোভকে যতই প্রশাসনিক শৃঙ্খলার নামে শাসক শ্রেণী সংযত রাখার চেষ্টা করুক না কেন, তা একদিন বিস্ফোরণের রূপ নেবেই নেবে আর সেই বিস্ফোরণে ধবংস হয়ে যাবে আজকের সভ্যতার এই চাকচিক্যময় ইমারত তখন কেউ বাঁচবে না পুঁজিপতি ধনিক গোষ্ঠী তো বাঁচবেই না, কিন্তু পাল্টা আক্রমণে পুরো সমাজটাই ধবংসস্তুপে পরিণত হবে