কবরেজ মশায় ৰাঁচিয়ে দিলেন

Baba's Name
শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকার

সত্যিকারের ক্লান্তিচ্ছেদ করতে গেলে খুব সতর্ক হয়ে কথা ৰলতে হয়৷ মনে করো কোন একটি ছেলে পরীক্ষায় ফেল করেছে৷ কারও সঙ্গে কথা ৰলছে না৷ তিন মুণ্ডু এক করে ৰসে আছে (দু’হাটু আর মুণ্ডু তিনে নিয়ে তিন মুণ্ডু) খেতে চাইছে না, শুতে চাইছে না৷ ৰাড়ীর লোকের ভয় ছেলেটা হয়তো পুকুরে ডুবৰে .....হয়ত বা রেলে গলা দেৰে৷ গ্রামের ৰুড়ো কবরেজ মশায় খবর শুণে ছুটে এলেন৷ আহা! ছেলেটা যদি মরে ৰড় দুঃখের হৰে৷ এই সতর ৰছর বয়সে সীতার ভূমিকায় যা অভিনয় করে তা এককথায় অনবদ্য৷ কৰরেজ মশায় রামভক্ত, তাই সীতা মরে যাবে ভেবে তার প্রাণটা খাঁ খাঁ করে উঠল৷ আৰার কিছুদিন আগে কেষ্টযাত্রায় রাধিকার ভূমিকায় ছেলেটা এমন প্রাণ সঞ্চার করেছিল যে বৃন্দাবন কেন, টুণ্ডুলা ইষ্টিশানও কেঁপে উঠেছিল......যমুনার জল সরে নীচেরটা একেৰারে ফুটিফাটা হয়ে গেছল৷

কৰরেজ মশায় পরম বৈষ্ণব৷ তিনি সীতাকেও মরতে দিতে পারেন না.....রাধিকাকেও মরতে দিতে পারেন না৷ তাই তিনি হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এলেন৷ ডান পায়ের খড়মটা ঠিকই ছিল, বাঁ পায়ের খড়মটা বাঁশঝাড়ে আটকে সেখানেই পড়ে রইল৷ তিনি এসে ছেলেটাকে শুধোলেন–‘‘হাঁ রে, ওই রকম তিন মুণ্ডু হয়ে ৰসে আছিস ক্যানে এবার তোদের যা অভিনয় হইয়েছিল যারা দেখেছে তারা জীবনেও ভুলৰ্যে না৷ এখন কোন নাটকের রিহার্সাল দিচিস’’

ছেলেটার মনমেজাজ তখন ভীষণ খারাপ৷ সে মুখ ওপরে না তুলে ৰললে, ‘‘ওই নাটক করতে গিয়েই তো এই দশা হয়েছে৷ আর নাটক–টাটক নয়’’৷

কৰরেজ মশায় শুধোলেন–‘‘এখন এই ইস্কুলে পড়বি না অন্য ইস্কুলে যাব্যি’’

সে কান্নায় ফুঁপিয়ে উঠে ৰললে, ‘‘এবার যমের ইস্কুলে পড়তে যাৰ’’৷

কৰরেজ মশায় ৰললেন, ‘‘তুই কতবার ফেল্ করেছিস’’

ছেলেটা ৰললে–‘‘এই নিয়ে পাঁচবার’’৷

কৰরেজ মশায় ৰললেন–তবে ওতো আমার কাছে নস্যি রে৷ আমি প্রতিটি ক্লাসে একবার ফেল করেছি, পরের বার পাশ করেছি৷ আর ক্লাস টেনে রগড়েছি আট বার৷ ন–ৰারের ৰেলায় একেৰারে ফার্ষ্ট ডিবিশনে সংস্কৃতে লেটার পেয়ে পাশ করেছি৷ আজ দেখ আমি একজন নামজাদা কৰরেজ৷ বদ্দমান জেলার মানকড়ের, শ্রীখণ্ডের, কোগ্রামের (কুমুদগ্রাম) সব জায়গার তাগড়া তাগড়া বদ্যিরা আমাকে ডাকসাইটে বদ্যি ৰলে সম্মান করে৷ নাড়ি ছোঁবার আগেই নিদান দিয়ে দি’৷ আর তুই তিন মুণ্ডু হয়ে দামী সময় নষ্ট করছিস্৷ এখ্খুনি উঠে পড়ত্যে ৰোস৷ এই ইস্কুলেই পড়বি, কারণ এই ইস্কুলের শিক্ষকদের ঘাঁত–ঘোঁত সৰই তোর জানা৷ হাঁ, হাঁ, আমিই একটা ভুল করনুম৷ আগে চাট্টি গুড় মুড়ি খেয়ে নে, তারপরে পড়ত্যে ৰোস৷ হ্যাঁ, এর পর যে নাটকটার রির্হার্স্যাল দিৰি আমাকে আগে থাকতে জানাৰি৷ অভিনয়ের দিন আমিও গ্রীণরুমে গিয়ে ৰসে থাকৰ’’৷

এটাই হ’ল সত্যিকারের ক্লান্তিচ্ছেদ...........ৰুঝলে৷                      (শব্দ চয়নিকা, ১১/২১৪)