পরিচয় ও প্রজাতি ঃ অলাবু মানে লাউ (Bottle gourd)৷ অনেকে লাউকে ‘নাউ’ উচ্চারণ করেন৷ (যেমন ভুল উচ্চারণ করা হয়–নেৰুকে ‘লেৰু’)৷ উচ্চারণটি ঠিক নয় কারণ অলাবুতে তো ‘ন’ নেই৷ ‘কদু’ শব্দ এসেছে সংস্কৃত কদ্রু বা কন্দুকি শব্দ থেকে (দুয়েরই মানে যা গোলাকার ৰলের মত)৷ তাই কদু মানে গোল লাউ৷ আর লাউ মানে যে কোন প্রকারের লাউ৷ এই গোল লাউকেই মৈথিলীতে বলে ‘সজিমন’৷ লাউকে ভোজপুরী ও উত্তরপ্রদেশের পূর্বাংশে ‘লউকি’ বা ‘লওকা’ বলা হয়৷ হিন্দী/উর্দূতে বলা হয় ‘ঘিয়া’ (সংস্কৃত ‘ঘৃতাক’ শব্দ থেকে উর্দূ–হিন্দীতে এই ‘ঘিয়া’ শব্দটি এসেছেগ্গ৷ মরাঠী ও গুজরাতিতে লাউকে বলা হয় ‘দুধি’ (সংস্কৃত ‘দুগ্ধিকা’ থেকে এসেছে৷ আসলে ‘দুগ্ধিকা’ মানে কিন্তু লাউয়ের পায়েস)৷
লাউ সাধারণতঃ তিন প্রজাতিতে বিভক্ত– (১) বৈশাখী লাউ–আকারে লম্বা ও মাঠে হয় (২) বর্ষাতী লাউ–যা মাচায় হয় (৩) মাঘী লাউ–যা শীতে মাঠে হয়৷ লাউ সাধারণতঃ চার ধরনের হয়– লম্বা লাউ, ঘটি লাউ (দেখতে ঘটির মত যার খোলায় কমণ্ডলু হয়), গোল লাউ (যার খোলায় বাদ্যযন্ত্র হয়), গদা লাউ (যা দেখতে গদা বা মুদ্গরের মত হয়)৷ গুণগত বিচারে ঘটি লাউ সর্বশ্রেষ্ঠ৷ লাউয়ের আর একটি প্রজাতি আছে যা তিক্ত স্বাদযুক্ত৷
লাউ একটি নির্দোষ সবজি৷ স্নায়ুতন্তু ত্ত্বন্দ্বব্জ্লন্দ্ব ন্দ্রন্ত্ব্ব্জন্দ্বব্দগ্গ, স্নায়ুকোষ ত্ত্বন্দ্বব্জ্লন্দ্ব ন্তুন্দ্বপ্তপ্তব্দগ্গ, লিবার ও কিডনীর পক্ষে এটি শুভ ফলপ্রদ৷ স্মৃতিশক্তি ৰৃদ্ধিতেও লাউ সাহায্য করে৷ অর্শ, যৌন অক্ষমতা ও ক্লীবতা, সুপ্তিস্খলন রোগে লাউয়ের তরকারী পথ্য ও ঔষধ৷ লাউ কথঞ্চিত পরিমাণে চর্ম রোগকেও প্রতিরোধ করে৷
লাউয়ের খোলা (লাউ বাকলা–কচি অবস্থায়) মুখে লালা এনে খাদ্য হজমে সাহায্য করে৷ লাউয়ের খোলা যকৃতের পক্ষে খুবই ভাল৷ লাউয়ের ৰীজের তৈলও চর্ম রোগের ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়৷
তিক্ত স্বাদযুক্ত লাউ খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয় না, ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়৷ এর ৰীজের তৈল মাথার খুসকী রোগের উত্তম ঔষধ৷ এই লাউয়ের খোলা বায়েস/বাইস হিসেবে একতারায় ব্যবহৃত হয়৷ (লাউয়ের পায়েস ছাড়াও দধি সহযোগে লাউয়ের ‘রায়তা’ একটি উত্তম ভোজ্য)৷
(শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকারের ‘দ্রব্যগুণে রোগারোগ্য’ থেকে গৃহীত)