কোন্ সে অনাদিকালে লীলাচ্ছলে---
অসীম তুমি, ধরা দিলে বৈচিত্র্যের সীমায়
প্রকৃতির গণ্ডী এঁকে নিলে বিরাট ভূমাসত্ত্বায়৷
রস-সমুদ্রে সত্ত্ব-রজঃ-তমের গুণবন্ধনে
সঞ্চরের পথ ধরে’ সৃষ্ট হ’ল জগৎ
ক্ষিতি-অপ-তেজ-মরুৎ-ব্যোম৷
প্রকৃতির প্রচণ্ড উগ্রতায় আরও
বাঁধতে চাইলে তোমায় আষ্টেপৃষ্ঠে,
শুভারম্ভ প্রতিসঞ্চরের পালা, জডস্ফোটে৷
সর্জনকেন্দ্রে নিহিত শক্তির প্রাবল্যে
জাগলো প্রাণের স্পন্দন---
বিকশিত এককোষী থেকে বহু-বহুকোষী অবয়ব৷
প্রবহমান বিবর্তনের ধারা বেয়ে
উজ্জীবিত উন্নত মননের উন্মেষ---
জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ উত্তরণ---এলো মানুষ৷
পরমাত্মার প্রতিবিম্ব সর্বদা বিচ্ছুরিত
জীবাত্মার গহন নভোপটে৷
তোমার বিচিত্র রূপকল্পে
বিধৃত পৃথিবীর বিরাট রঙ্গশালা৷
লীলানন্দে বিভোর লীলাময়---
কোথাও লোভ-লালসা, কামনার তীব্র দহন
অন্যদিকে ত্যাগ-বৈরাগ্য, অধ্যাত্ম-রতন
হৃদয়ে বিবেকবুদ্ধি, প্রেম-প্রীতির অনুরণন৷
বিদ্যা-অবিদ্যা, ধর্মাধর্মের নিয়ত সংগ্রামে
পাশ-রিপু-বৃত্তির দংশন অবহেলে
মুক্তি পিপাসু মানুষ যখন অন্তরের অন্তঃস্থলে
সাধনা, ত্যাগ, সেবার মশাল জ্বালে
তুমি তখন তার দু’হাত ধরে, করুণাভ’রে
টেনে নাও তোমার মধুময় ক্রোড়ে---
কোটি জন্ম মৃত্যুর অবিরাম চলার অবসানে
অনন্ত ওঁঙ্কারের শাশ্বত প্রশান্ত গুঞ্জরণে
সমাহিত হয় পরম আনন্দ পারাবারে৷
- Log in to post comments