মর্মান্তিক ঘটনা ও পৈশাচিক আন্দোলন

লেখক
পত্রিকা প্রিতিনিধি

আর.জি.কর হাসপাতালে কর্মরতা মহিলা ডাক্তারের ওপর নৃশংস অত্যাচার ও খুনের প্রতিবাদে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে পথে নেমেছিলেন৷ এই নয় যে এইধরণের ঘটনা রাজ্যে বা দেশে এই প্রথম ঘটল৷ গোটা দেশের রাজ্যগুলির বিভিন্ন থানার তথ্য থেকে জানা যায় দেশে বছরে ৩০-৩৫ হাজার ধর্ষনের ঘটনা ঘটে যার সিংহভাগ উত্তরপ্রদেশে৷ তবু আর.জি.কর একটু অন্য মাত্রা পায় কারণ নির্যাতিতা ছিলেন একজন কর্মরতা ডাক্তার৷

প্রতিবাদের প্রথম রাত দখলে মানুষে স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া পেয়ে রাজ্য রাজনীতিতে ৩৪বছর ক্ষমতায় থাকার পর ক্ষমতা হারিয়ে শূন্য হয়ে যাওয়া সিপিএম রাজ্যে আবার মাথা তোলবার হাতিয়ার করে নেয় এই আন্দোলনকে৷ সেই প্রতিবাদ আন্দোলনকে নিজেদের দলীয় স্বার্থে বিপথগামী করে দেয় ১৫০ গ্রাম তত্ত্ব থেকে রক্তাক্ত গ্লাভস্‌ নানা মিথ্যের আশ্রয় নিয়ে৷ সিপিএমের লক্ষ্য নির্যাতিতার বিচার নয় বা সমাজ থেকে এই ধরণের পাপকে নির্মুল করা৷ তার সব ক্ষোভ গিয়ে পড়ল রাজ্যের শাসকদলের ওপর৷

আসলে কম্যুনিষ্টরা কোনদিন দেশের কল্যাণ চায় না, কারণ---ভারতের কমিউনিস্টরা কোনদিন ভারতীয় নয়৷ জ্যোতি বসু রজনী পাম দত্তরা লন্ডনে বসে কমিউনিজমে দীক্ষা নিয়েছিল৷ তাই ৪২-এ ভারতছাড়ো আন্দোলনে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদকে সমর্থন করেছিল৷ কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্রে সুভাষচন্দ্রের বিরুদ্ধে অকথ্য নোংরা ভাষায় প্রচার করেছিল সেদিনের ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের দালাল কমিউনিস্টরা৷ ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামে জার্মানের সাহায্য নেয়ায় কমিউনিস্টদের চোখে সুভাষচন্দ্র হয়েছিল ফ্যাসিস্ট, আর  কমিউনিস্টরা মার্কিন ও ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের পদলেহন করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সাম্রাজ্যবাদীদের পক্ষ নিয়েও সমাজতন্ত্রী! এখানেই শেষ নয়৷ স্বাধীন ভারতে চীনের ভারত আক্রমণকে সমর্থন করেছিল এই কমিউনিস্টরা৷ চিন মার্কিন পক্ষ অবলম্বন করায় দুই বৃহৎ কমিউনিস্ট শক্তি চিন রাশিয়া পরস্পরের শত্রু হয়ে যায়৷ ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে তখন পিতৃত্বের অধিকার নিয়ে দন্দ্ব লাগে ও কমিউনিস্ট পার্টি বিভক্ত হয়৷ মূল কমিউনিস্ট সিপিআই রাশিয়ার পিতৃত্ব মেনে নেয়৷ সিপিআই ভেঙে জ্যোতি বসুরা চীনের পিতৃত্ব মেনে সিপিআইএম তৈরি করে৷ আজ যেমন জুনিয়ারদের মিছিল থেকে আজাদ কাশ্মীরের স্লোগান উঠছে, সেদিনও কমিউনিস্টদের একাংশ স্লোগান দিয়েছিল চীনের চেয়ারম্যান আমাদের চেয়ারম্যান৷ ৩৪ বছর পশ্চিমবাংলায় শাসন ক্ষমতায় থেকে বাংলার শিল্প কারখানা ধবংস করে পশ্চিমবাংলা কে চীনের হাট বানিয়ে দিয়েছে এই কমিউনিস্টরাই৷ ১৯৭৭ সালের আগে এই কমিউনিস্টরা স্লোগান দিত--- টাটা বিড়লার কালো হাত ভেঙ্গে দাও গুড়িয়ে দাও! কিন্তু ১৯৭৭ সালে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় আসার পর এখানে টাটা বিড়লা দের কালো হাত মজবুত করার কাজে আত্মনিয়োগ করেছিল কমিউনিস্টরা মেহনতী মানুষের কথা ভুলে৷ আজ শূন্যের জ্বালা ভুলতে একটি নৃশংস নির্মম খুন ধর্ষণের ঘটনাকে ঁকড়ে ধরে ঘৃণ্য পৈশাচিক আন্দোলনের উৎসবে মেতেছে মার্কস্‌ জীবীরা৷