নেতাজীর অন্তর্ধান---কিছু প্রশ্ণ কিছু ভাবনা

লেখক
বিশ্বদেব মুখোপাধ্যায়

১৯৪৫ সালের আগষ্ট মাসের পর থেকে আজ ২০২০ সাল পর্যন্ত বিশ্বের সকল সংগ্রামী মানুষের নয়নের মণি, আদর্শ দেশ নেতা ও স্বাধীনতা আন্দোলনের বীর যোদ্ধা নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর অন্তর্ধান রহস্যের কোনো কিনারা হোলো না হোলো না বলাটা হয়তো আমার সঠিক নয়, বলা উচিত ইচ্ছে করে করা হচ্ছে না

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এই রহস্য উদঘাটনের জন্য কমিশনও বসানো হয়েছে কয়েকবার , কিন্তু উপযুক্ত প্রমাণ সহ কোনো সর্বজন গ্রাহ্য তথ্য দেশবাসী পায় নি অথচ তাইহোকু বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজীর মৃত্যু ও রেনকোজি মন্দিরে রাখা চিতাভস্ম কে কেউ কেউ মান্যতা দিলেও  বেশিরভাগ মানুষ তা বিশ্বাস করে না  নেতাজী গবেষকগণ তো এই ঘটনাটিকে গুরুত্বই দিতে চান না বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছিল নেতাজী সংক্রান্ত সমস্ত গোপন ফাইল প্রকাশ্যে আনবেন সবার মনে আশা জেগেছিল, এবার বুঝি  সব জানা  যাবে শুরু করে তারাও থেমে গেলেন জানিয়ে দিলেন বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফাইল প্রকাশ্যে আনা যাবে না  এখন প্রশ্ণ উঠছে বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার নেতাজীর বিষয়ে আশা জাগিয়েও কেন আমাদের  নিরাশ করলেন ঐ সমস্ত গোপন ফাইল কী এমন তথ্য লুকিয়ে আছে যা গবেষকগণ সহ দেশবাসী জানতে পারলেন না দেশের বৃহত্তম দুই রাজনৈতিক দলের অবস্থান নেতাজীর বিষয়ে প্রায় একই রকম দেখা যাচ্ছে অথচ এই দুই দলই স্বাধীনতার পর থেকে কেন্দ্রে বেশিরভাগ সময় ক্ষমতাসীন!

যিনি দেশের সার্বিক মুক্তির জন্য সর্বস্ব ত্যাগ করে শোষণমুক্ত নোতুন ভারত গড়তে চেয়েছিলেন, সেই আপোষহীন সংগ্রামী নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর জন্ম দিবসকে যারা কেন্দ্রীয়ভাবে উদ্যাপন করা তো দূরের কথা, ছুটি পর্যন্ত দেয় না সেই সরকারের শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পেখরিয়াল নিশাঙ্ক সহ আরও দুই কেন্দ্রীয়মন্ত্রী ১৮ই আগষ্ট কে নেতাজীর মৃত্যু দিন হিসেবে ঘোষণা করে শ্রদ্ধা জানালেন! যদিও মন্ত্রীর এই ঘোষণার বিরুদ্ধে কিছু কিছু রাজনৈতিক দল প্রতিবাদ জানিয়েছিল এখন প্রশ্ণ উঠে গেল বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার ও তাইহোকু বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজীর মৃত্যুর কে কী স্বীকার করে নিচ্ছে একথা স্পষ্ট করে প্রধানমন্ত্রী বলুন ও কোন তথ্যের উপর ভিত্তি করে তাঁরা এই দাবী করছেন তাও জানান দেশবাসীকে শোনা যাচ্ছে নেতাজী ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন এই ঘোষণা আগামী দিনে করতে চলেছেন নরেন্দ্রমোদী! এটা নিছক বাঙলার আগামী নির্বাচনের দিকে লক্ষ্য রেখে নেতাজী আবেগকে সুড়সুড়ি দিয়ে ভোট বৈতরণী পার হবার কৌশল মাত্র বলেই অনেকের অভিমত

কেবলমাত্র ক্ষমতা হস্তান্তরের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক স্বাধীনতা লাভ নেতাজীর উদ্দেশ্য ছিল না তিনি চেয়েছিলেন শোষণমুক্ত অখণ্ড ভারত শুধু রাজনৈতিক স্বাধীনতা নয়, ভারতবাসী যাতে অর্থনৈতিক স্বাধীনতাও লাভ করে তাই তিনি মনেপ্রাণে চাইতেন যাঁরা প্রকৃত পক্ষে নেতাজীর দেশপ্রেম, তাঁর নেতৃত্বে সার্বিক শোষণমুক্তির  আন্দোলনের মধ্যদিয়ে স্বাধীনতা লাভ কে সঠিক পথ বলেই মনে করতেন ও আজও করেন তাঁরা বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজীর মৃত্যু সংক্রান্ত গাঁজাখুরি গপ্পো বিশ্বাস করেন না অনেকের মতে রাষ্ট্র সংঘের তত্ত্বাবধানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতাজী গবেষকগণের মিলিত এক দলকে নেতাজী অন্তর্ধান রহস্যের সঠিক তথ্য উদ্ধারের দায়িত্ব দেওয়া হলে মনে হয় ভালোই হবে জানি না এটা সম্ভব কিনা, তবে আমার বিশ্বাস এর মধ্য দিয়ে সঠিক তথ্যই বেরিয়ে আসত বার বার কমিশন বসিয়েও এই রহস্য উদঘাটন করতে না দেওয়ার পেছনে কাদের হাত আছে দেশবাসী তা জানতে চায় অনেকের মত আমারও বিশ্বাস নেতাজীর অন্তর্ধান রহস্যের উদঘাটন একদিন হবেই ও অনেক মহান () ব্যক্তির মুখোশ খুলে যাবে সেদিন