সংস্কৃতে ‘কোষ’ শব্দের অর্থ হ’ল আবরণী৷ শব্দটা ‘বৃ’ (অন্তঃস্থ ‘ব’) ধাতু থেকে আসছে৷ ‘বৃ’ (বর্গীয় ‘ব’) ধাতুর মানে অন্য৷ তার মানে বরণ করা বা শ্রেষ্ঠ বলে স্বীকার করা৷ এই ‘বৃ’ ধাতু থেকে ‘বর’ শব্দটি আসছে৷ ‘বর’ মানে শ্রেষ্ঠ৷ ‘নৃপবর’ মানে নৃপশ্রেষ্ঠ৷ বিয়ে বাড়ীর বর মানে বিয়ে বাড়ীতে যে মানুষটিকে সেদিনকার মত শ্রেষ্ঠ বলে মনে করা হয়...সবাই যার দিকে তাকিয়ে আছে...সবাইকার দৃষ্টি যে মানুষটির প্রতি নিবদ্ধ, বিবাহ–আসরে তথা বিবাহবাসরে সে–ই বর৷ বিয়ের আগে আমরা বরকে যেখানে বসাই তাকে বলি আসর, আর বিয়ের পরে যেখানে বসাই তাকে বলি বাসর৷ ‘বাসর’ শব্দের অপর অর্থ হ’ল ‘বার’, যেমন রবিবারকে বলতে পারি রবিবাসর, তেমনি সোমবারকে বলতে পারি সোমবাসর৷
বরের দিকে যে সবাইকার দৃষ্টি নিবদ্ধ থাকে সে প্রসঙ্গে রাঢ়ের একটা পুরোনো গপ্প মনে পড়ল৷ একবার এক বিয়ে বাড়ীতে বর তখন আসরে বসে৷ কয়েকজন নিমন্ত্রিত–রবাহুত মানুষ একজনকে শুধোলে–‘‘হাঁ গো, জামাইটি কুনটি বটেক?’’
–‘‘উই যে টিকটিকির পারা ঘাড়টি লাড়ছে উটি বটেক৷’’
–‘‘হাঁ গো জামাই লিখাপড়ি জানে?’’
–‘‘সিটি বড় লয়৷’’
তখন কয়েকজন এগিয়ে এসে বললে–‘‘লয় কি লয় কি লয় কি জামাই তিনটি পাস কর্যেছে৷ ‘বর্ণ–পরিচয়’–প্রথম ভাগ পাস কর্যেছে, ‘বর্ণ–পরিচয়’–দ্বিতীয় ভাগ পাস কর্যেছে...‘কথামালা’ পাস কর্যেছে৷ বাংলায় চিঠি লিখিং দিবেক৷ জামাইয়ের আরো গুণ আছে গো আরো গুণ আছে৷ একা মানুষ এক দিনে বিশটা ভৈসা চরাই দিবেক৷ তাছাড়া চাটুজ্যা...কুলীন...রন্ধনকার্যে অতি নিপুণ......একা মানুষ এক হাতে চড়াইছে কি লামাইছে, লামাইছে কি চড়াইছে৷’’
সবাই সমস্বরে বললে–‘‘তবে ত’ জামাইয়ের গুণ আছে৷’’